নয়াদিল্লি: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে (Jagdeep Dhankhar) নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করে দিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু (Venkaiah Naidu)। শুক্রবার বাজেট প্রস্তাব নিয়ে রাজ্যসভায় বিতর্কের সময় তৃণমূলের তরফে রাজ্যপাল নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলে, বেঙ্কাইয়া নাইডু তৎক্ষণাৎ তা খারিজ করে দেন। এর পরেই তৃণমূলের সাংসদরা রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করেন।
শুক্রবার বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় ডিএমকের সাংসদরা তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে নিয়ে সরব হন। ছাত্রছাত্রীরা যাতে আঞ্চলিক ভাষায় নিট পরীক্ষা দিতে পারেন, তার জন্য একটি বিল আনে তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে। অভিযোগ, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল এই বিল আটকে রেখেছেন। তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy) জানান, এরই প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সই না-করে এক ডজনের বেশি বিল আটকে রেখেছেন জগদীপ ধনখড়। কিন্তু বেঙ্কাইয়া নাইডু তৃণমূলের আলোচনার প্রস্তাবে সম্মত হননি। তিনি এই ইস্যুতে আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করলে, রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করেন টিএমসি-র সাংসদরা।
বঙ্গ বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ,’কেন্দ্রের বিরোধিতা করার মতো কোনও ইস্যু তৃণমূলের হাতে নেই। তাই রাজ্যপালের প্রসঙ্গ তুলে ওয়াকআউট করেছে। রাজ্যসভার সদস্যদের যেমন প্রস্তাব পেশের অধিকার রয়েছে, তেমনই চেয়ারম্যানেরও অধিকার রয়েছে সেই প্রস্তাব খারিজ করার।’ সুকান্তর বক্তব্য, রাজ্যপাল তো আগেই জানিয়েছেন তাঁর কাছে কোনও ফাইল পড়ে নেই।
আরও পড়ুন Mahua Moitra: সংসদে বক্তৃতায় বাধা পেয়ে মহুয়ার কটাক্ষ, কেন্দ্রকে লাড্ডু খাওয়ানোটা আমার কাজ নয়
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে কেন্দ্র করে শাসকদলে অসন্তোষ চরমে। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের জল গড়িয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত। শুধু রাষ্ট্রপতি নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও জগদীপ ধনখড়কে নিয়ে নালিশ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, তিনি অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এ পর্যন্ত চারটি চিঠি লিখেছেন। কিন্তু তার পরেও ধনখড়কে সরানো হয়নি।
রাজ্য-রাজ্যপাল বিরোধের অন্যতম কারণ গুরুত্বপূর্ণ বিল আটকে রাখা। যদিও রাজ্যপাল এই অভিযোগ স্বীকার করেননি। দাবি করেন, তাঁর কাছে কোনও ফাইল পড়ে নেই। তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই অভিযোগ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন Hijab Row in Karnataka: কর্ণাটকের কলেজে হিজাব পরার সমর্থনে মেয়েদের পাশে দাঁড়াল মুসলিম ছাত্ররা
কিন্ত, রাজ্যের দাবি, একাধিক ফাইল সই না-করে রাজ্যপাল ফেলে রেখেছেন। তার মধ্যে হাওড়া থেকে বালিকে আলাদা করতে সংস্কার বিলও রয়েছে। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত এ নিয়ে নালিশ করেছেন লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে। বিধানসভার কাজে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপের অভিযোগও তোলেন। রাজ্যপালের সঙ্গে এ নিয়ে প্রকাশ্যে তিনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। সেই বিরোধ এখনও অব্যাহত।
শাসকদলের অভিযোগ, রাজভবন থেকে সমান্তরাল সরকরা চালানোর চেষ্টা করছেন জগদীপ ধনখড়। তিনি রাজভবনে বসে বিজেপির মুখপাত্রের মতো আচরণ করছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষেই এই সংঘাতের জেরেই দু’দিন আগে রাজ্যপালকে ‘ঘোড়ার পাল’ বলে তির্যক মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে রাজ্যপালকে তিনি ব্লকও করে দিয়েছেন। তার পরেও কিন্তু সংঘাতের ছবিটা বদলায়নি।