কোচবিহার: কনভয়ে হামলার জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (Nishith Pramanik)। রবিবার নিজের ভেটাগুড়ির বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, তাঁর উপরে প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে এবং এখানকার পুলিশ (Police) দলদাসে পরিণত হয়েছে। প্রাণে মারতে চাইলে স্থান-কাল জানাক তৃণমূল (TMC)। সেখানে গিয়ে হাজির হব। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা ভেঙে সাধারণ মানুষের শান্তি বিঘ্নিত করার অধিকার নেই। অনেক চেষ্টা করেও তৃণমূল উত্তরবঙ্গে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তৃণমূল কী উত্তরবঙ্গের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। একজন রাজবংশী ছেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছে বলেই কী প্রতিশোধের আগুন!
এদিন তিনি বলেন, অনেক দিন থেকে তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব অনেক চেষ্টা করেও উত্তরবঙ্গের মাটিতে মানুষের ভালবাসা, মানুষের সমর্থন আদায় করতে পারেনি। অনেক চেষ্টা করেছে রাজবংশীদের পাশে নেওয়ার। আলিপুরে গিয়ে আদিবাসীদের সমর্থন নেওয়ার চেষ্টা করেছে, দার্জিলিং-এ গোর্খাদের সমর্থন নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আজকে সেই প্রতিশোধই কী উত্তরবঙ্গের মানুষের উপর নিচ্ছে। আজকে উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রথম স্বরাষ্ট্র দফতরে মন্ত্রী হয়েছি রাজবংশী ছেলে হিসেবে। সেই জন্যই কী প্রতিশোধের চেষ্টা। না কী তাদের নিজেদের দলের নেতাদের ওপর কোনও বিশ্বাস নেই। রাজনৈতিক লড়াইয়ে পেরে না উঠে মানুষকে পাশে রাখতে না পেরে , প্রাণনাশ করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চলছে এখানে।
এদিন তিনি বলেন, বিজেপি কর্মীরা অত্যন্ত নিরীহ এবং সাধারণ। জোর করে তাঁদের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে দিয়ে মামলা করা হচ্ছে। পুলিশকে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, পুলিশ সেভাবে কাজ করছে। পুলিশ বাংলার বুকে যেটা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। বাংলার মাটিতে ধ্বংসের লীলা চলছে। বেছে বেছে সনাতনী হিন্দুদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এবং ভারতীয় জনতা পার্টির যারা কর্মী নেতৃত্ব আছেন, তাঁদের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। মহিলাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা চলছে। পুলিশ নির্বাক। এখনও পর্যন্ত সেখানে পুলিশ পৌঁছয়নি। এই হচ্ছে বাংলার পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা। এইভাবে চলতে থাকলে বাংলার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে এবং সেই ভবিষ্যৎ খুব খারাপ হবে বলে আমি মনে করছি।
বাংলার নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, আমি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কখনই চিন্তিত নই বা উদ্বিগ্ন নই। বাংলা জুড়ে সাধারণ মানুষ যেভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ভুগছেন সেই ব্যাপারে মানুষকে চিন্তিত হওয়া উচিত। আপনারা জানেন গতকাল একটি নির্দিষ্ট কর্মসূচির জন্য আমরা বুড়ির হাটে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেখানে কী ঘটনা ঘটেছে তা আপনারা জানেন। প্রথমে পুলিশ রাস্তার মাঝে ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের আটকায়। তারপর তৃণমূলের সন্ত্রাসবাদীরা তাঁরা ইটবৃষ্টি করে। তৃণমূলের ৬০ থেকে ৭০ জন গুন্ডা বা দুষ্কৃতীরা পাথর, বোম, বন্দুক নিয়ে কালো পতাকা দেখানোর চেষ্টা করছিলেন। পুলিশ চাইলে তাঁদের রাস্তার একধারে আটকাতে পারতেন। তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী আমাদের বাধা দেয় দেয়নি, ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। আজ যে চরম অরাজকতার পরিস্থিতি বাংলায় চলছে সেটা সমগ্র বাংলা তথা দেশের মানুষ কাল প্রত্যক্ষ করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।