জলপাইগুড়ি: গ্রাম হোক বা শহর হোক।অট্টালিকার চিলেকোঠার ঘর কিংবা পুরনো বাড়ির ঘুলঘুলি।চড়ুই ( World Sparrow Day) পাখির বসবাস সর্বত্র।কিন্তু শেষ কবে বাড়ির কার্নিশে চড়ুই বসতে দেখেছি তা হয়তো অনেক ভেবে বলতে হবে।কারণ এখন সেই ঘুলঘুলিও নেই, আর সেই কিচিরমিচিরও নেই। তাদের মাথা গোঁজার ঠিকানায় টান পড়েছে।ক্রমশই বিলুপ্ত হচ্ছে চড়ুই পাখি (Endangered Sparrows)।কিন্তু চড়ুইদের বাঁচানোর তাগিদে একটুকরো জায়গা তাদের থাকার জন্য ছেড়ে দিলে ক্ষতি কী? জলপাইগুড়ির অরবিন্দ নগরের বাসিন্দা, শিক্ষক কুন্তল ঘোষের ইচ্ছেতেই বাড়ির ছাদে গড়ে উঠেছে চড়ুইয়ের আস্তানা।
বাড়িতে তৈরি করা হয়েছে ঘুলঘুলি। পাঁচিলের ওপর সারি সারি সাজানো রয়েছে রঙিন বোতল। ভিতরে রাখা পাখির খাবার।অবশ্য বোতলের ঢাকনা খুলে খেতে হবে না তাদের। খাবার সুবিধার্থে বোতলের মধ্যে দিয়ে বাইরের দিক করে পাইপ লাগানো হয়েছে। রয়েছে জলের ব্যবস্থাও।সব মিলিয়ে পাখিদের থাকার জন্য এলাহি ব্যবস্থা করেছেন পাখিপ্রেমী কুন্তল বাবু।

বর্তমানে বাড়ির কার্নিশে পাখির বাসার বদলে ঠাই পেয়েছে বাতানুকূল যন্ত্র।গাছপালা কেটে দিয়ে পাকা বাড়ি উঠছে। চিলেকোঠার ঘর ভেঙে তৈরি হচ্ছে স্টোর রুম।নেই বাড়ির ঘুলঘুলিও।মানুষই কেড়ে নিয়েছে তাদের বাসস্থান।এই অবস্থায় পাখি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুন্তল ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী। স্ত্রী পিয়ালি ঘোষ জানান, বর্তমানে হাউজ স্প্যারো বিলুপ্ত হয়ে যাছে।তাই বাড়ির ফেলে দেওয়া জিনিস থেকেই পাখির বাসা বানিয়েছি। চাল কল থেকে খুদ কিনে এনে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।আগে পুরনো বাড়ির ঘুলঘুলিতে চড়ুইরা থাকত। কিন্তু ফ্ল্যাট বাড়ি হয়ে যাওয়ার ফলে থাকার জায়গার অভাব হয়েছে। চড়ুই দিবসে আমরা চেষ্টা করছি চড়ুই পাখিদের বাঁচানোর।


আরও পড়ুন West Medinipur Hilsa: বাঙালির পাতে এবার মিষ্টি জলের ইলিশ, খরা
প্রসঙ্গত, ২০ মার্চ দিনটিকে ‘বিশ্ব চড়ুই দিবস বা ওয়ার্ল্ড স্প্যারো ডে’ (World Sparrow Day) হিসেবে পালন করা হয়।এই দিনটির উদ্দেশ্যই হল, চড়ুই ও অন্যান্য পাখির তাৎপর্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করা। জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতির সৌন্দর্য রক্ষায় মানুষকে সচেতন করা।প্রতিবছরই দিনটি পালনের জন্য বিভিন্ন সংস্থা, পরিবেশকর্মীরা নানা থিম বেছে নেন।চড়ুই সংরক্ষণ, চড়ুই নিয়ে সচেতনতা প্রচার, চড়ুইকে নিয়ে নানা বার্তার মাধ্যমে ২০১০ সাল থেকেই দিনটি উদযাপিত হয়ে আসছে।