বিমানবন্দরের টার্মিনাল কারোর বাড়ি হতে পারে! জীবনের আঠারোটা বছর মেহেরান করিমি নাসিরির(Mehran Karimi Nasse) বাড়ি ছিল প্যারিসের শার্ল ডি’গল বিমানবন্দরের টার্মিনাল ১। লাল রঙের একটি প্লাস্টিকের বেঞ্চ দখল করে বসে থাকতেন দিনভর, সেখানেই ঘুমাতেন তিনি। অতি সম্প্রতি তিনি চির নিদ্রায় চলে গেছেন। কিন্তু কে এই করিমি নাসিরি? তিনি একজন ইরানি শরণার্থী। মেহরান করিমি নাসিরিকে নিয়ে একটি আস্ত ছবি বানিয়েছিলেন বরেণ্য আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ(Steven Spielberg) । ছবির নাম ‘দ্য টার্মিনাল'(The Terminal)।মেহেরান এর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস(Tom Hanks)। মেহরানকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল তথ্যচিত্রও। বই আকারে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর আত্মজীবনীও। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিমানবন্দরের টার্মিনালেই মৃত্যু হল ‘টার্মিনাল ম্যান'(Terminal Man) এর।
আরো পড়ুন:Arijit Singh Live Show: শহরে অরিজিতের লাইভ শো,লাফিয়ে বাড়ছে টিকিটের দাম আরবাজ-জর্জিয়া বিয়ে কবে!
টার্মিনালের লাল প্লাস্টিকের বেঞ্চে বসে যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করা, মাঝে মাঝে ডাইরি লেখা আর বিমানবন্দর কর্মীদের সঙ্গে গল্প করা এই ছিল মেহরানের কাজ।খাবারও খেতেন সেই কর্মীদের কাছ থেকেই।এই এয়ারপোর্টই হয়ে উঠেছিল তার ঠিকানা। ১৯৪৫ সালে ইরানের সোলেমানে জন্ম হয়েছিল মেহরানের। ১৯৭৪ সালে তিনি পড়তে যান ইংল্যান্ডে। তার নিজের দাবি ফিরে আসার পর ইরানের রাজা মোহাম্মদ রোজা শাহর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছে এবং তারপর পাসপোর্ট ছাড়াই নির্বাসিত করা হয়।
আরো পড়ুন: Arijit Singh Live Show: শহরে অরিজিতের লাইভ শো,লাফিয়ে বাড়ছে টিকিটের দাম
তারপর বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানালেও তারা আবেদন গৃহীত হয়নি। পরবর্তীকালে বেলজিয়ামের ইউনাইটেড নেশনস হাইকমিশনারাও ফর রিফিউজি তাঁকে ‘শরণার্থী’ তকমা দেয়।
অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে,নাসেরি একজন ইরানী উদ্বাস্তু, ১৯৮৮ সালে বেলজিয়াম এবং ফ্রান্স হয়ে ইংল্যান্ডে যাচ্ছিলেন যখন তিনি তাঁর কাগজপত্র হারিয়েছিলেন এবং ফ্লাইটে চড়তে পারেননি বা বিমানবন্দর ছেড়ে যেতে পারেননি এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত অচলাবস্থায় আটকে ছিলেন।
বিমানবন্দরের মুখপাত্র যোগ করেছেন যে নাসেরি বিমানবন্দরে একজন “আইকনিক চরিত্র” ছিলেন এবং “পুরো বিমানবন্দর সম্প্রদায় তাঁর সাথে সংযুক্ত ছিল, এবং আমাদের কর্মীরা বহু বছর ধরে তাঁকে যতটা সম্ভব দেখাশোনা করেছিল”।