নেপাল: অনেক ভূতের গল্পই তো শুনেছেন। কিন্তু পাহাড়ি ভূতের (Mountain Ghost) গল্প কি কখনও শুনেছেন ? সমতলে ভূতের দেখা না পেলেও আপনি পাহড়ি ভূতের দেখা অবশ্যই পেতে পারেন। এ ভূত জীবিত ভূত।
সম্প্রতি কয়েকজন ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার (Wild Life Photographer) নেপালে এই ভূত খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন। এই ভূতের নাম আসলে স্নো লেপার্ড (Snow Leopard)। এদের মাউন্টেনস অফ দা হোস্ট (Mountain Of The Ghost) বলা হয়।
কী এই স্নো লেপার্ড ?
এই লেপার্ড (Leopard) দেখতে বরফের মতো সাদা। এরা হিমালয়ের একেবারে উঁচুতে বাস করে। আর এরা পাহাড়ে বরফের মধ্যে এমনভাবে মিশে থাকে যে, এদের আলাদা করে চিহ্নিত করাও কঠিন হয়ে পড়ে। যেখানে মানুষের আনাগোনা নেই, এমনকি কোনও গাছপালাও নেই, এমন জায়গায় এরা বিচরণ করতে পছন্দ করে। মানুষের কাছ থেকে এরা নিজেদের লুকিয়ে রাখে। এদের দেখা পাওয়া খুবই দুষ্কর। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চলে এই তুষার চিতাবাঘের আদি নিবাস।
ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার (Wild Life Photographer) পাওলোস্কি বলেন, সেদিন পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় বরফ ঢাকা হিমালয়ের চূঁড়াগুলি চকচক করছিল। কোনও কৃত্রিম আলোর প্রয়োজন পড়ছিল না। তুষারকণায় চারপাশ ভরে যাচ্ছিল, আমার স্লিপিং ব্যাগটিও ভিজে গিয়েছিল। ফলে ভালো করে ঘুমোতেও পারছিলাম না। তাই ভোর ভোর উঠে বুটটি পরে আমার ২৫ পাউন্ড ক্যামেরাটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। চলে গেলাম গোরাক শেপের উত্তর-পূর্বে একটি জমে যাওয়া হ্রদ পেরিয়ে আরও অনেক দূরে।
পাওলোস্কি বলে চলেন, তুষারময় পাহাড়ের ঢালগুলি এমন ভাবে চিকচিক করছিল যেন মনে হচ্ছিল, কেউ হিরে ছড়িয়ে দিয়েছে পাহড়ে। এমন সময় আমি আমার ক্যামেরার টেলিফটো লেন্সে ছায়ার মতো একটা কিছু লক্ষ্য করলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম, সাদা পাথর। তারপর বুঝতে পারি, আমরা যা দেখার জন্য পাগলের মতো ঘুরে মরছি, এটি সেই স্নো লেপার্ড।
পাওলোস্কির পোস্ট করা ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, অপূর্ব সুন্দর প্রকৃতির মধ্যে তুষার চিতাগুলি হেঁটে চলেছে। পাওলোস্কি জানিয়েছেন, এই ছবিগুলি তাঁর তোলা সব থেকে মূল্যবান ছবি। এগুলিই তাঁর জীবনের সেরা পুরস্কার।
আইইউসিএন-এর তরফে প্রকাশিত তালিকায় স্নো লেপার্ডকে বিপন্ন প্রাণি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আইইউসিএন-এর হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে এখন প্রায় ১০ হাজার পূর্ণবয়স্ক স্নো লেপার্ড এখন প্রায় রয়েছে । সেই সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমছে।