skip to content
Thursday, July 4, 2024

skip to content
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | ইডি, আদালত, কৌস্তুভ রায়, কেজরিওয়াল আর হেমন্ত সোরেন, মামলা...
Fourth Pillar

Fourth Pillar | ইডি, আদালত, কৌস্তুভ রায়, কেজরিওয়াল আর হেমন্ত সোরেন, মামলা কিন্তু এক

অপরাধের ন্যূনতম প্রমাণ ছাড়াই জেলে রয়েছেন কলকাতা টিভির সম্পাদক

Follow Us :

এক হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রীর রাজত্বে আছি আমরা. বিচার নয়, এক প্রহসন সর্বত্র, কোথাও কোথাও সামান্য আলো দেখা যাচ্ছে, মনে হচ্ছে আছে আছে প্রাণ আছে, আমাদের বিচার ব্যবস্থার উপর ভরসা রাখার কারণ আছে। কিন্তু তারপরেই নানান অছিলায়, নানান প্যাঁচপয়জারে সেই ন্যায়বিচার ভেসে যাচ্ছে বিভিন্ন কলাকৌশলে। একজনকে গ্রেফতার করা হল, জানানো হল তিনি অপরাধী, সেই ব্যক্তি আদালতে গেলেন, বিচারককে বললেন হুজুর আমি দোষী নই, আর দোষী কি না আপনি বিচার করুন, কিন্তু বিচারের আগেই জেলে পুরে রাখবেন না, আমাকে বেল দিন। আদালত সমস্ত কাগজপত্র দেখল। দেখে জানাল এই মানুষটাকে বেল দেওয়া হোক। তো মানুষ মনে করলেন, ওই যে আছে আছে প্রাণ আছে, বিচার ব্যবস্থার উপরে ভরসা আছে। কিন্তু সেই বেল আদেশ নিয়ে জেল থেকে বের হওয়ার আগেই তাঁকে আগে ইডি গ্রেফতার করেছিল, এবারে সিবিআই গ্রেফতার করবে, মানে খুব সোজা, আপনাকে জেলে থাকতে হবে। হ্যাঁ, আমি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কথাই বলছি। সিবিআই আগে গ্রেফতার করেনি, কেন? তারা বসে ছিল, প্ল্যান বি। যদি বেল পায় তাহলে আমরা গ্রেফতার করব, ওই জেলে গিয়েই। কিছুদিন পরে আবার যদি বেল পাওয়ার অবস্থা হয় তাহলে আছে তো এনআইএ, কিংবা আবার নতুন কোনও মামলা নিয়ে ইডির নতুন অফিসারেরা হাজির হবেন। আসলে তো কোনও অপরাধ আটকানোর জন্য নয়, কোনও অপরাধীকে ধরে শাস্তি দেওয়ার জন্যও নয়, গোটা ব্যবস্থাটা, আইন বিচার ব্যবস্থা এখন ওই হবু-গবু, মোদি-শাহদের হাতে। তাঁরাই ঠিক করছেন কোন নেতাকে বাইরে রাখব, কোন নেতাকে ভিতরে। কোন প্রতিবাদী মানুষকে কতদিন গারদের ভেতরে পুরে রাখব, কোন সংবাদমাধ্যমের মালিককে জেলে পুরে মাথা নোয়ানোর ব্যবস্থা করা হবে।

কাজেই অভিযোগ তৈরি করতে হবে, বানাতে হবে গল্প। চুরির গল্প, জমি হাতানোর গল্প, পাবলিকের টাকা নিয়ে নয়ছয় করার গল্প, এবং সেই বানানো গল্পের ভিত্তিতেই তাদেরকে জেলে পোরা হবে, যতদিন ইচ্ছে হয়। আর এসবের সমস্যা একটাই, এইসব অভিযোগ প্রমাণ তো হবে না কিন্তু এসব অভিযোগের সমর্থনে যা যা তথ্য প্রমাণ রাখা হবে আদালতের সামনে তা হাস্যকর, শিশুপাঠ্যেও জায়গা হবে না এত বাজে রকমের হাস্যকর এই তথ্যপ্রমাণের গপ্পোগুলো। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মামলায় নিম্ন আদালত বেল দিতে গিয়ে যে রায় দিয়েছিল, তার একজায়গায় অন্তত একটা সত্যি বেরিয়ে এসেছে ইডি অফিসারদের কথাবার্তায়, তাঁরা যেমনটা বিচারকদের জানিয়েছিলেন, ওঁরা তাই লিখেছেন। তদন্তকারী অফিসার আদালতে দাঁড়িয়েই জানাচ্ছেন, investigation is an art and sometimes an accused is given a lollipop in the face of some assurance of relief so that truth can be surfaced. বাংলা মানে হল, তদন্ত হল এক ধরনের শিল্প, যেখানে মাঝেমধ্যেই একজন অভিযুক্তের হাতে একটা ললিপপ ধরিয়ে বা তাকে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে অন্য আর এক সত্যিকে বার করে আনা হয়। মানে আপনাকে ছেড়ে দেব, আপনার জামিনের বিরোধিতা করব না, আপনার বাড়িতে আপাতত আর রেড চালাব না, আপনি কেবল এক আধজনের নাম বলে দিন। কার নাম? সে ভাবতে হবে না, ইডি, অফিসারেরা, সিবিআই বা ভিজিলেন্স অফিসারেরা সেসব বুঝিয়ে বলে দেবে। দিল্লির আবগারি কেলেঙ্কারির মামলাতে যাঁরা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নাম বলল, অ্যাট লিস্ট যাঁদের নামে বলা হল যে এঁদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছে, তাঁরা কিন্তু বেল পেয়ে গেছেন।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | সকাল বুঝিয়ে দিচ্ছে, দিন খুব খারাপ যাবে মোদি-শাহ সরকারের

অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি, অথচ এক পয়সা কেজরিওয়ালের থেকে পাওয়া যায়নি, কোনও ব্যাঙ্ক আকাউন্ট সিজ হয়নি, পয়সা কোথায় গেল? সেটাও জানা নেই, কিন্তু কেজরিওয়াল জেলে। নিম্ন আদালত কিছু না পেয়ে জামিন দিয়েছিল, সেই জামিন কিছুক্ষণের মধ্যেই সিবিআই গিয়ে আবার গ্রেফতার করল, তুই জল এঁটো করিসনি তো তোর বাপ করেছে, লজিকটা খানিক এই রকমের। চলুন হেমন সোরেন আর কৌস্তুভ রায়ের মামলাদুটোকে পাশাপাশি রাখা যাক। পিনকন বলে এক চিটফান্ড কোম্পানি টাকা তুলেছিল, সে টাকা বিভিন্ন জায়গাতে সরিয়েছিল, পাবলিকের টাকা নিয়ে ফেরত দেয়নি বলে আমাদের কলকাতা টিভিতে খবরও হয়েছিল, তো সেই মামলাতে ওই কোম্পানির মালিক মনোরঞ্জন রায়কে গ্রেপ্তার করে ইডি, ২০১৭ সালে। ২ নভেম্বর ২০১৭তে রাজস্থানের জয়পুরে এক এফআইআর দায়ের করা হয়, মূলত টাকা তছরুপ, চিটিংবাজি, চিটফান্ডের মাধ্যমে মানুষের টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়া ইত্যাদি ধারায় অভিযোগের ভিত্তিতে ওই জয়পুর থেকেই গ্রেফতার করা হয় পিনকন স্পিরিটস লিমিটেড-এর মালিক মনোরঞ্জন রায়কে। এফআইআর ছিল আমাদের রাজ্যের খেজুরি থেকেও, তার বহু আগেই করা, ১৯ জানুয়ারি ২০১৭তে দায়ের করা আরেক এফআইআর-এও একই অভিযোগ ছিল, সেটাও এই গ্রেফতারির সঙ্গে জোড়া হল। যথারীতি সার্চ হল, রেড হল বিভিন্ন দফতরে, বিভিন্ন ডকুমেন্টস সিজ করা হল, সেসবের ভিত্তিতে মামলা চলতে লাগল। ২০২০-র ৩ অক্টোবর বিচারকেরা রায় দিলেন, আজীবন কারাবাসের রায় ঘোষণা হল।

সে রায়ে কী বলেছিলেন বিচারকেরা, আসব সে কথায়। কিন্তু এতবড় এক মামলায় যেখানে অপরাধীর আজীবন কারাবাসে সাজা শোনানো হচ্ছে যা প্রায় তিন বছর ধরে চলল, সেই মামলাতে কোনও দলিল দস্তাবেজে কি একবারের জন্য কৌস্তুভ রায়ের নাম বা তাঁর অন্য কোনও কোম্পানির নাম এসেছে? না, আসেনি। কোনও এক চিলতে কাগজেও এরকম কোনও তথ্য নেই। সেসব দলিল দস্তাবেজ আদালত দেখেছে, বাদী, বিবাদী পক্ষের উকিলেরা সেসব দস্তাবেজ নিয়ে সওয়াল করেছেন। না, একবারও সেই দলিল দস্তাবেজের কোথাও না ছিল কৌস্তুভ রায়ের নাম, না তাঁর কোনও কোম্পানির নাম। তো সেই দলিল দস্তাবেজ দেখে বিচারকেরা কী বলেছিলেন? বলেছিলেন, “Monoranjan Roy has intention to cheat from the very beginning so he did not keep proper legal system because the existence of such systems will be helpful for a clear and clean accounts. He told lies and took loans from the banks. The banks and the authorities had the duty to investigate before giving loans, in that case such irregularities would not be happened. Probably they were purchased by Monoranjan Roy. Monoranjan Roy intentionally created such irregularities so that it cannot be identified easily in case of legal enquiries and legal claim or in investigation. খুব সাফ জানিয়েছিলেন যে এই মনোরঞ্জন রায় একজন ঠগ, প্রতারক, হিসেবের খাতায় যতরকমের গন্ডগোল করা সম্ভব উনি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছেন। বলেছিলেন, the activities of Monoranjan Roy is full of irregularities and he had intention to cheat the public, banks and creditors from the very beginning and his submission and activities are full of contradictions. কেবল সাধারণ মানুষ নয়, ব্যাঙ্ক বিভিন্ন সংস্থাকে সে ঠকিয়েছে, তার কাজকর্ম গোলমেলে, তার বিভিন্ন সময়ে আবেদনে স্ববিরোধিতা আছে এবং সে এগুলো ইচ্ছে করেই করেছে।

উচ্চ আদালত একজন মানুষের সম্পর্কে এই কথাগুলো বলেছে, এবং আমরা এইসব বিচারকের উপরে তো আস্থা রাখতেই পারি। এবার মজার ঘটনা হল, সেই মনোরঞ্জন রায় ২০২৩-এর ৭ এপ্রিল হঠাৎই জানালেন তিনি কৌস্তুভ রায়কে টাকা দিয়েছেন। কীভাবে জানালেন ইত্যাদিতে পরে আসছি, এবারে চলুন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের মামলায়। রাঁচির কাছে বড়গাঁই বলে এক জায়গাতে সাড়ে আট একরের এক জমি নাকি এই হেমন্ত সোরেন বিভিন্ন লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে জবরদখল করে। কবে করে? ২০০৯-এ। তখন তিনি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন? না। তখন এবং তারপরে বিজেপি ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতাতে থেকেছে দীর্ঘ সময়, কেউ অভিযোগ করেছেন? না। সেই সময় হেমন্ত সোরেন মুখ্যমন্ত্রীও নন, কাজেই তাঁর বিরুদ্ধে জমি জবরদখলের মামলা হতেই পারত। হয়েছে কি? না, হয়নি। ২০০৯-এর জমি কেলেঙ্কারির মামলা হল কবে? ২০২৩-এ। আবার কিছু ঘোষিত ঘোটালাবাজদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইডি মামলা করল আর ৩১-এ জানুয়ারি হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করল। দুটো মামলা একই রকম শোনাচ্ছে না? কৌস্তুভ রায়ের ক্ষেত্রে এক ফোর টোয়েন্টির মামলা হল ২০২৩-এ, যার নামগন্ধও আগে ছিল না, হেমন্ত সোরেনের মামলা হল ২০২৩-এ সেই জমি নিয়ে যা নাকি হেমন্ত সোরেন জবরদখল করেছিলেন ২০০৯-এ। তার মানে একটা অভিযোগ তৈরি করো। দুটো ক্ষেত্রেই মিথ্যে অভিযোগ তৈরি করানো হয়েছে। হেমন্ত সোরেনের জামিনের রায়ে তো এক অসাধারণ যুক্তি এনে হাজির করেছেন ইডির অফিসারেরা, বলেছেন যে এই গ্রেফতারি না হলে অপরাধ সংগঠিত হত। মানে? অপরাধ হয়নি, কেবল অপরাধ হতে পারে, সেটা ঠেকানোর জন্য এক নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালতে হেমন্ত সোরেনের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেছেন, বড়জোর একটা জমি জবরদখলের মামলা করা যেতে পারত, ইডি মামলা কেন করেছে, তার পিছনে তাদের উদ্দেশ্য খুব স্পষ্ট। হ্যাঁ, মামলার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল। আর সেই কথাই বলেছেন ইডি বনাম কৌস্তুভ রায়ের মামলায় জামিনের আবেদনের রায় দিতে গিয়ে নিম্ন আদালতের বিচারপতি। নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকা বিচারপতি জামিন দিতে পারেননি, কিন্তু তাঁর ১০ পাতার রায়ে যা যা বলেছেন তাতে এটা স্পষ্ট যে কোনও অপরাধ নয়, অপরাধের ন্যূনতম প্রমাণ ছাড়াই জেলে রয়েছেন কলকাতা টিভির সম্পাদক। আগামিকাল সেই তথ্য নিয়ে হাজির হব। আজ এইখানেই শেষ করছি।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Narendra Modi | Mamata Banerjee | নাম নিলেন না মমতার! কী বললেন মোদি?
00:00
Video thumbnail
Bhole Baba | পুলিশ কনস্টেবল থেকে আচমকাই ধর্মগুরু ! অবাক কাহিনী ভোলেবাবার !
00:00
Video thumbnail
Kalyan Banerjee | Modi | মোদিতে রণংদেহী, 'এত ঘেন্না কেন?'
00:00
Video thumbnail
Hemant Soren | ঝাড়খন্ডের কুরসিতে ফের হেমন্ত সোরেন! ইস্তফা চম্পাইয়ের
00:00
Video thumbnail
Dilip Ghosh | 'দিলীপের বৈঠকে 'ডাক পেলেন না শুভেন্দু-সুকান্ত আড়াআড়ি ফাটল বিজেপিতে?
00:00
Video thumbnail
TMC | তৃণমূলের মিছিলে হাঁটলেন 'মৃত' বৃদ্ধা অবাক কাণ্ড বসিরহাটে
00:00
Video thumbnail
Rahul Gandhi | রাহুলকে এ কি বললেন সম্বিত পাত্র!
00:00
Video thumbnail
Sanjay Raut | নরেন্দ্র মোদির বুদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন সঞ্জয় রাউত কী বললেন শুনুন
00:00
Video thumbnail
Modi - Rahul | লোকসভায় তুফান তুলেছিলেন রাহুল, রাজ্যসভায় জবাব মোদির, কোন ইস্যুতে মুখ খুললেন ?
04:17:11
Video thumbnail
Bhole Baba | পুলিশ কনস্টেবল থেকে আচমকাই ধর্মগুরু ! অবাক কাহিনী ভোলেবাবার !
05:55:46