Saturday, June 28, 2025
Homeচতুর্থ স্তম্ভচতুর্থ স্তম্ভ: প্রসঙ্গ মৌলবাদ

চতুর্থ স্তম্ভ: প্রসঙ্গ মৌলবাদ

Follow Us :

মৌলবাদ কথাটা এখন রোজ শোনা যায়। আমরা রোজ ব্যবহার করি। একটু এলিট মহল হলে তো কথাই নেই। এমনকি সাধারণ মানুষও মৌলবাদ কথাটা আকছার ব্যবহার করেন। বহু সময়েই এক মৌলবাদী, অন্য এক মৌলবাদীর কথা বলতে গিয়েও, এই মৌলবাদ কথাটার ব্যবহার করে। আসুন আজ আমরা সেই মৌলবাদ নিয়ে একটু আলোচনা করি, প্রসঙ্গ মৌলবাদ।
আগেই বলে রাখি, ভগবান, আল্লাহ, গড ইত্যাদিরা টুকটুক করে মানুষ তৈরি করল। লেট দেয়ার বি লাইট বলল। আর চারিধারে আলো জ্বলল, প্রাণ আসুক বলল, প্রাণ এসে গেলো, এই তত্ত্ব যাদের ভরপুর বিশ্বাস, তাঁদের নমস্কার, জয়হিন্দ, বন্দেমাতরম। আপনারা আসুন, কারণ ওই তত্ত্বে বিশ্বাস করলে এই আলোচনাটা শুরুই করা যাবে না। আমরা আলোচনা করছি, পৃথিবীতে এককোষী প্রাণের জন্ম নেবার পর মানুষ যখন বানর, গোরিলা থেকে সোজা হয়ে উঠে দাঁড়ালো, সেই সময় থেকে ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করবো। এককোষী প্রাণের জন্ম নিয়েও আলোচনা হতেই পারে, সে একদিন করা যাবে। চারপায়ে ভর দেওয়া বানর, গোরিলা হয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে শুরু করল, কমবেশি ১৮ লক্ষ বছর আগে তারা এই কাণ্ডটা ঘটাল, বিজ্ঞানীরা সেই প্রাচীন মানুষের নাম দিলেন হোমো ইরেকটাস, দু পায়ে ভর দেওয়া আদিম মানব। ১৬ লক্ষ বছর আগে থেকে তাঁরা পাথরের কিছু অস্ত্র ব্যবহার শুরু করল, শিকারের জন্য, আর এই সময়েই তাঁরা আগুনের ব্যবহার শুরু করে। আগে পাথর ছুড়েই মারত, এবার সেই পাথরে ধার দিয়ে, তাকে খানিক কার্যকরী করে তুলল। ৫ লক্ষ বছর আগে, তাঁদের তৈরি কাঠের ঘরের হদিশ পাওয়া গেলো। তার আগে তাঁরা গুহায়, গাছের কোটরে বাস করতো, সেসব কিছু ঘরের হদিশ পাওয়া গেলো জাপানে। ৪ লক্ষ বছর আগে লাঠির গোড়ায় পাথর বেঁধে বর্শা তৈরি করেছিল ওই আদিম মানবেরা। ২ লক্ষ ৮০ হাজার বছর আগে তাঁরা তৈরি করেছিল, ব্লেডের মত ধারালো পাথর আর শস্য গুড়ো করার যন্ত্র। দেড় লক্ষ বছর আগে, আদিম মানবেরা তাঁদের স্বরযন্ত্রকে ব্যবহার করতে শুরু করল, এর আগে কেবল আওয়াজ বের হত। এখন তাঁরা কিছু শব্দ উচ্চারণ করতে শুরু করে। তার মানে একটা কথা তো পরিস্কার যে দেড় লক্ষ বছর আগে মানুষ কোনও মন্ত্রচ্চারণ, কোনও প্রার্থনা পাঠ বা নমাজ আদায় করত না। তাঁদের কাছে শব্দই ছিল না। ৫০ হাজার বছর আগে তাঁরা তাঁদের মৃতদের মাটিতে কবর দেওয়া শুরু করে। গাছের ছালের, মৃত পশুদের ছালের জামাকাপড় পরা শুরু করে, আর তাদের শিকার পদ্ধতি আরও উন্নত হয়, তাঁরা গর্ত করে ফাঁদ পেতে শিকার শুরু করে। ৩৩ হাজার বছর আগে আধুনিক মানুষ জন্ম নেয়, যাদের উত্তরাধিকারি আমরা।
১০ হাজার বছর আগে মানুষ চাষবাস শুরু করে। ৫ হাজার পাঁচশ বছর আগে টিন, তামা ইত্যাদি ধাতু আবিস্কার করে। পাথরের বদলে আসে আরও ধারালো অস্ত্র, মাত্র ৫ হাজার বছর আগে তাঁরা লিখতে শুরু করে, বর্ণমালা তৈরি হয়। আগুনের আবিস্কার কোনও মানুষকে বিরাট ক্ষমতার অধিকারি করে তোলে। কিছু মানুষই পেরেছিল আগুন জ্বালানোর কায়দাটা রপ্ত করতে। তাঁরা হয়ে ওঠে সেই গোষ্ঠির প্রবল ক্ষমতাশালী নেতা। তাঁদেরই কেউ কেউ জলের হদিশ, কিছু কার্যকরী লতা পাতার হদিশ পেয়ে যায়, আর তখনই তাঁরাই হয়ে ওঠে পুরোহিত, গুণিন, গোষ্ঠিপতি। যাদের ক্ষমতা ছিল, তাঁরা বেশি জমি দখল করে, অন্য গোষ্ঠির মানুষকে হারিয়ে তাঁদেরকে চাকরের কাজে লাগায়। যার যত পশু, সে তত বড়লোক, যার যত অস্ত্র, সে তত ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। ওই গুণিনরা পুজো, বলি, বিভিন্ন তুকতাক দিয়ে মানুষকে তাঁদের বশে আনতে থাকে। বিভিন্ন অঞ্চলের গোষ্ঠিপতিদের নিয়ে মিথ ছড়াতে থাকে, জানিস তো আমাদের পুরোহিত এই পারে, আমাদের পুরোহিত মরা মানুষকে বাঁচিয়ে দেয়, আমাদের পুরোহিত পাথরকে সোনা করে দেয়। তোদের পুরোহিতদের থেকে আমাদের পুরোহিত অনেক বড়। শিকারিরা শিকারে যাবার আগে, যোদ্ধারা যুদ্ধের আগে, অস্ত্র নিয়ে যায় সেই গুরু, পুরোহিতের কাছে, তিনি মন্ত্র পড়ে দেন। তিনিই বাঁচাবেন, তিনিই মারবেন।

মৌলবাদের জন্ম হয় এই পুরোহিতদের ঘিরে, কিন্তু অর্গানাইজড রিলিজিয়ন বলতে যা বোঝায়, তার জন্ম অনেক পরে। চার সাড়ে চার হাজার বছর আগে, মিশরের পিরামিডের দেওয়ালের গায়ে লেখাপত্র থেকে ওই ধর্ম আচরণ, দেবতা ইত্যাদিদের হদিশ পাওয়া যায়, ইনকা সভ্যতারও তাই। দেড়হাজার বছর আগে বেদের উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে। মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ভেঙে যাবার পরে, মধ্য এশিয়া থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের হাত ধরে বেদ, উপনিষদ লেখা হল। তাঁরা স্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠিকে মিলিয়ে নিলেন, তাঁদের ধর্মগুরুরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে, নিজেদের মত করে ধর্মের ব্যাখ্যা দিতে শুরু করলেন। কিছু লোকায়ত ভগবান, গাছ, পাহাড়, সাপ, নদী ইত্যাদিও সামিল হল তাঁদের ধর্মে। সবটা মিলিয়ে সিন্ধু সভ্যতার ধর্ম, যাকে হিন্দু ধর্ম বলা হল, তার মত আর বিভাজন দেখার মতো। এক একটা গোষ্ঠির মৌলবাদী মতামত ছিল, কিন্তু সব মিলিয়ে কোনও নিটোল হিন্দু ধর্ম গড়ে উঠল না, বরং তা ছিল এক ধরনের সমন্বয়। ওদিকে যিশুর আবির্ভাব, খ্রিস্টান ধর্ম ইউরোপে রাজাদের সাহায্য পেল, ছড়িয়ে পড়ল। চার্চের অধীনে তা ছিল সংগঠিত, রাজার শাসন ছিল চার্চকে সামনে রেখে, মঠকে সামনে রেখে বৌদ্ধ ধর্মও একইভাবে রাজাদের সাহায্য পেল, তারাও উঠে এল সংগঠিত ধর্ম হিসেবে। উঠে এল ইসলাম, সেও তার আশ্রয় খুঁজে নিল রাষ্ট্রশক্তির কাছে, রাজার ধর্ম রাষ্ট্রের ধর্ম। মৌলবাদ আরও সংগঠিত। ইউরোপ। মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে শুরু হল ক্রুসেড, রাজার ধর্ম কেবল রাষ্ট্রেই নয়, তাকে অন্য রাষ্ট্রে ছড়িয়ে দিতে হবে, ধর্মের জন্য তরোয়াল। ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের অধিকার, লড়াই, যুদ্ধ। বৌদ্ধরা ইতিমধ্যেই পিছিয়ে গেছে, হিন্দুরা তো সংগঠিত ধর্মই নয়, পৃথিবীর বিরাট ভাগ জুড়ে খ্রিস্টান আর ইসলামিক মৌলবাদ।
তার মানে একটা কথা তো পরিস্কার, মৌলবাদ গড়ে ওঠে ধর্মকে ঘিরে, ধর্মের মতবাদকে ঘিরে, তার শ্রেষ্ঠত্বকে ঘিরে। আমার ধর্ম সেরা, বাকিরা অধার্মিক। এতটাই অন্ধ সে দৃষ্টি যে কলম্বাসের সঙ্গে আসা পাদ্রিরা, দক্ষিণ ভারতে এক মন্দিরে কালি মূর্তি দেখে মনে করেছিল এরা উলঙ্গ ভার্জিন মেরির পুজো করে, হিন্দু ধর্মের সার্বিক মৌলবাদ গড়ে ওঠেনি, কিন্তু স্থানীয় ভাবে তা ছিল বৈকি। এরপর ১৯ শতকের জ্ঞান বিজ্ঞান, নতুন চেতনার উন্মেষ এই মৌলবাদকে চ্যালেঞ্জ করে, ধর্মীয় গোঁড়ামি, তার একমুখিনতাকে ভেঙে নতুন নতুন ধর্মের সূচনা হয়। আমাদের দেশে বিশেষ করে ক্যাথলিকদের চ্যালেঞ্জ করে খ্রিস্টানরা, সুফিরা মুখোমুখি দাঁড়ায় কাঠমোল্লাদের বিরুদ্ধে। আর তারও কিছু পরে, রাজনৈতিক মৌলবাদের জন্ম হয়, এবারও ধর্ম আছে তার আঙ্গিকে। কিন্তু রাজনৈতিক দর্শনের আড়ালে, হিটলার থেকে আলকায়দা, আলকায়দা থেকে তালিবান, তালিবান থেকে কু ক্লাক্স ক্লান এরই বিভিন্ন চেহারা। মৌলবাদ হল কিছু মানুষের ক্ষমতা দখল, অর্জন এবং ভোগের জন্য তৈরি এক মতবাদ, যা ঘোষণা করে তারাই ঠিক, তারা ছাড়া সবাই বেঠিক। যারা বেঠিক, তাঁদের বাঁচার অধিকার নেই, যতক্ষণ না তাঁরা মাথা নত করছে। মৌলবাদ সেই জন্যই গণতন্ত্রের পরিপন্থী, গণতান্ত্রিক ধ্যান ধারণার সঙ্গে মৌলবাদের কোনও সম্পর্কই নেই। দেখুন না হিটলারকে, যিনি জার্মানির মানুষকে বুঝিয়েছিলেন, ইহুদিরাই হল জার্মানির অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ, তাই ইহুদিদের মেরে ফেলতে হবে, বিরাট সংখ্যক মানুষ সেটা সমর্থনও করেছিল। তালিবানদের দেখুন, তাদের ফতোয়া গান বন্ধ, মদ খাওয়া হারাম। বাবরনামা পড়ছিলাম, ওই কাবুল থেকে তিনি হিন্দুস্তানের দিকে রওনা দিলেন, পানিপথের যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদি হেরে গেলেন, মারাও গেলেন। সেদিন সন্ধ্যেয় বাবর তাঁর বেগ, মানে জেনারেলদের নিয়ে গানের আয়োজন করলেন, ঢালাও আরক, মানে মদের ব্যবস্থা ছিল। এদিকে বাবরকে ধর্মপরায়ণ মুসলিম বলা হয়। বুদ্ধমূর্তি ভেঙে ফেলে তালিবানরা। হিন্দু ধর্মে এই সংগঠিত মৌলবাদের চেহারা ছিলই না, ছিল না কারণ, হিন্দু ধর্ম বলতে একটা নির্দিষ্ট কোনও প্রথা, নির্দিষ্ট এক ভগবান, নির্দিষ্ট এক উপাসনা পদ্ধতি ছিল না। এমন কি ইশ্বরে অবিশ্বাসীও হিন্দু ধর্মের অংশ ছিলেন, মৌলবাদ ছিল তার ব্রাহ্মণ্যবাদের মধ্যে, চতুবর্ণ প্রথার মধ্যে। কিন্তু সেই উদার ধর্মকে এক মৌলবাদী চেহারা দিতে বদ্ধপরিকর আরএসএস বিজেপি, তারা হিন্দুদের সংগঠিত করে এক মৌলবাদী রূপ দিতে চায়। আর চায় বলেই তালিবানরা বামিয়ানে বুদ্ধ মূর্তি ভাঙে, আরএসএস বিজেপি আযোধ্যায় বাবরি মসজিদ, হিটলার ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায়, আরএসএস বিজেপি ঘৃণা ছড়ায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে। ইসলাম বা খ্রিস্টান যেরকম ইসলামিক, বা খ্রিস্টান রাষ্ট্রের কথা বলে আরএসএস বিজেপি সেরকমই হিন্দু রাষ্ট্রের কথা বলে। আর সেই জন্যই জাভেদ আখতর আরএসএস – বিজেপিকে, তালিবানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। যারা দেশ আর সমাজকে ওই মধ্যযুগীয় অন্ধকারে নিয়ে যেতে চায়, তাদের ফতোয়া মহিলাদের ঘরে থাকতে হবে, তাদের ফতোয়া রাষ্ট্রের এক ধর্ম থাকতে হবে, তাদের ফতোয়া হিন্দু ছাড়া অন্য ধর্মের ঠাঁই হবে না।
মৌলবাদ এক অসুখ, যা ব্যক্তি মানুষ, সমাজ আর রাষ্ট্রকে ঘুন পোকার মত কুরে কুরে খায়। ব্যক্তি মানুষের বিকাশের পেছনে থাকে এক উদার চিন্তা ভাবনা, মৌলবাদ যার বিপরীত দর্শন। যে কোনও পরিবর্তন, যে কোনও আবিস্কার, যে কোনও অগ্রগতির, যে কোনও সমাজ বিপ্লবের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে থাকা, মৌলবাদের সঙ্গে মানুষের লড়াই চিরন্তন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক, সমাজ সংস্কারক, উদার গণতান্ত্রিক মতবাদের প্রবক্তারা এই মৌলবাদের সঙ্গেই লড়েছেন সারাজীবন। আমাদের সমাজে, আমাদের দেশেও যে কোনও মৌলবাদের সঙ্গে, কি ইসলামিক মৌলবাদ, কি হিন্দু মৌলবাদের সঙ্গে লড়াই আজকের প্রধান কাজ, সেই দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে, মৌলবাদের মুখোমুখি দাঁড়াতেই হবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Donald Trump | কে এই মামদানি? যাকে ভ/য় পান ট্রাম্প, যু/দ্ধ আবহে এল বড় খবর
00:00
Video thumbnail
India-Pakistan | ফের ভারতের ভ/য়ে কাঁ/পছে পাকিস্তান, দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
India | European Union | আমেরিকা, চিন সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাদাগিরি বন্ধ করবে ভারত?
00:00
Video thumbnail
Benjamin Netanyahu | নেতানিয়াহুর জেল সময়ের অপেক্ষা? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Kunal Ghosh | TMC | তৃণমূল ভবনে CCTV ফুটেজ দেখালেন কুণাল, তোলপাড় বাংলার রাজনীতি
00:00
Video thumbnail
জনতা যা জানতে চায় | বদলে যাওয়া বিদেশ নীতি, নেহেরু থেকে মোদি
00:00
Video thumbnail
Kunal Ghosh | TMC | তৃণমূল ভবনে CCTV ফুটেজ দেখালেন কুণাল, তোলপাড় বাংলার রাজনীতি
04:53:25
Video thumbnail
Narendra Modi | Shubhanshu Shukla | মহাকাশ থেকে শুভাংশুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কী কথা হল? দেখুন LIVE
02:15:29
Video thumbnail
Benjamin Netanyahu | এবার নিজের দেশেই জেলে যাবেন নেতানিয়াহু? কেন? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
11:55:01
Video thumbnail
জনতা যা জানতে চায় | Anik Chatterjee | ট্রাম্পের খ্যাপাটেপনায় ভারত কী সমস্যায় পড়বে?
05:03

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39