ডার্ট মিশন সফল হয়েছে, জানাল নাসা। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এই প্রথম কোনও মহাজাগতিক বস্তুর গতিপথ বদলে দেওয়া হল। পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা এক গ্রহাণুর (অ্যাস্টেরয়েড) গতিপথ বদলে দিতে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল নাসা। সেটি মহাকাশে গ্রহাণুটিকে ধাক্কা মেরে তার স্বাভাবিক কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দেয়। নাসার প্রধান বিল নেলসন জানিয়েছেন, গ্রহের প্রতিরক্ষা এবং মানবসভ্যতায় এ এক সন্ধিক্ষণের মুহূর্ত। নাসা জানাল, টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা গেছে, পরীক্ষামূলক উড়ান ডার্ট মিশন তার প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ করেছে সফলভাবে। ২৬ সেপ্টেম্বর উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ওই ‘আত্মহননকারী’ মহাকাশযানটিকে।
প্রবল গতিতে উড়ে গিয়ে সেটি গ্রহাণুতে ধাক্কা মারে। নিজে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার সঙ্গেই তার ভরবেগ গ্রহাণুটিকে তার রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এই মিশন সফল না হলে বড়সড় ক্ষতি হতে পারত আমাদের সাধের নীল গ্রহের। গত সাতটি বছর ধরে কীভাবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায় তা নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। এ কাজে খরচ হয়েছে ৩৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৭১৬ কোটি টাকা।
পৃথিবীর দিকে যে গ্রহাণুটি ধেয়ে আসছিল তার নাম ডিমর্ফোস। একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের আকার এবং ডিম্বাকৃতির ডিমর্ফোস আকারে তার পাঁচগুণ একটি গ্রহাণু ডিডিমোসকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। একবার প্রদক্ষিণ করতে তার সময় লাগে ১১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। নাসার ডার্ট মিশনে যে যানটি পাঠানো হয়েছিল তার আকার বড়জোর একটি ভেন্ডিং মেশিনের মতো। কিন্তু সেটি ১৪০০০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় (২২৫৩১ কিমি প্রতি ঘণ্টা) সোজা ডিমর্ফোসে ধাক্কা মারে। তাতেই কক্ষচ্যূত হয় সে।
আরও পড়ুন-Indian Economy : মন্দার গ্রাসে প্রায় গোটা পৃথিবী, তবু উজ্জ্বল ভারত! বলছে আইএমএফ-এর সমীক্ষা
ধাক্কা খাওয়ার পর এই ডিমর্ফোসের প্রদক্ষিণের সময় কমে গেছে ৩২ মিনিট। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন ১০ মিনিট সময় কমার তবু অন্তত ৭৩ সেকেন্ড কমাও সাফল্য বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে বলাই যায়, অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে ডার্ট মিশন। একই ধরনের কোনও বিপদ এড়াতে ভবিষ্যতেও এই পন্থা অবলম্বন করায় আর কোনও বাধা রইল না।