কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি (Employment Scam) মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ (Stay Order) দিল সুপ্রিম কোর্ট (Suprem Court)। এর ফলে শিক্ষাসচিবকে (Education Secretary) সিবিআই (CBI) জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না। তাঁকে আদালতে হাজিরাও দিতে হবে না। কলকাতা হাইকোর্টের বৃহস্পতিবারের নির্দেশের বিরুদ্ধে শুক্রবার সকালে রাজ্য সরকার (State Government) শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। তার আগেই অবশ্য কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশমতো এদিন হাজিরা দেন শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন (Manish Jain)।
আদালতের প্রশ্নের জবাবে মণীশ যা বলেছেন, তাতে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়বে বলে মনে করছে আইনজ্ঞ মহল। তিনি বলেন, অতিরিক্ত শূন্য পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল মন্ত্রিসভার (Cabinet) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুরও (Bratya Basu) নির্দেশ এসেছিল। মন্ত্রী আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। আমরা অ্যাডভোকেট জেনারেল (Advocate General) এবং আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলি। কথা হয় আইন দফতরের সঙ্গে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের সঙ্গেও কথা হয়। বিষয়টি মুখ্যসচিবকে জানানো হয়। মন্ত্রিসভায় নোট পাঠানো হয়। মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় অতিরিক্ত পদ সৃষ্টির ব্যাপারে।
আরও পড়ুন: Weather: আরও কমবে পারদ, রাজ্য জুড়ে শীতের আমেজ কি শুরু, জেনে নিন
বিচারপতি- আইনজীবীরা অবৈধদের নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন কি
সচিব- না
বিচারপতি- অবৈধদের বাঁচানোর জন্যই কি এই অতিরিক্ত শূন্যপদ বলে আপনি মনে করেন
সচিব- আমরা আইন দফতরের সঙ্গে কথা বলি
বিচারপতি- আপনি কি মনে করেন, অবৈধদের চাকরি বাঁচানো দরকার
সচিব- না
বিতারপতি- মন্ত্রিসভায় কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, ভেবে আমি বিস্মিত। কোন ক্যাবিনেটে এই সিদ্ধান্ত হয়
সচিব- আমরা আইন দফতরের সঙ্গে কথা বলি
বিচারপতি- এটা কোনও রাজ্যের নীতি হতে পারে না। আবার বলা হচ্ছে, কারও চাকরি যাবে না। অতিরিক্ত প্রায় ২৬২ কোটি টাকা প্রতি বছর খরচ করা হবে এই অযোগ্যদের জন্য
সচিব- আমরা অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গেও কথা বলি
বিচারপতি- মন্ত্রিসভার সদস্যরা সই করলেন কেন। কেউ তাঁদের সতর্ক করলেন না
সচিব- আমি সেখানে ছিলাম না।
আরও পড়ুন: Arvind Kejriwal: বিজেপি কেজরিওয়ালকে খুনের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তুললেন সিসোদিয়া
এরপরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আমি মন্ত্রিসভাকে মামলার পার্টি করে দেব। তৃণমূল দলকে তুলে দিতে বলতে পারি। আমি নির্বাচন কমিশনকে বলব, তৃণমূলের মান্যতা প্রত্যাহার করে নিতে। সংবিধান নিয়ে যা খুশি তাই করা যায় না। মন্ত্রিসভাকে বলতে হবে, আমরা অযোগ্যদের পাশে নেই। না হলে এমন পদক্ষেপ করব, যা গোটা দেশে আগে কখনও হয়নি। আমি মন্ত্রিসভাকেও শো কজ করতে পারি।
এজলাসে শুনানি চলাকালীনই খবর আসে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। তার প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। ক্যাবিনেট নোট সুরক্ষিত রাখতে বলা হল। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৬ ডিসেম্বর বা তার আগে হতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট পরে কী নির্দেশ দেয়, তার উপর সব নির্ভর করবে।