রামপুরহাট: মামলা চেপে দেওয়ার জন্য তাঁর কাছে সিবিআই ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল বলে বিস্ফোরক দাবি করলেন লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবি। মঙ্গলবার রামপুরহাটে সিবিআইের অস্থায়ী শিবিরের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন রেশমা এই অভিযোগ করেন। তিনি তিন পাতার দীর্ঘ অভিযোগ করেছেন স্থানীয় থানায়। তাতে রেশমা তিন সিবিআই আধিকারিকের নাম করেছেন। সেখানে ভাস্কর নামে এক অফিসারের নাম রয়েছে। রামপুরহাট থানার পুলিশ ওই তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে।
এদিন রেশমা বলেন, সিবিআই অফিসাররা আমার বাড়িতে এসে হার্ড ডিস্কের খোঁজ করেন। তাঁরা বলেন, হয় হার্ড ডিস্ক দে, নয় ৫০ লক্ষ টাকা দে। সব সেটল করে দেব। রেশমা আরও বলেন, ওরা বলেন, তোর ছেলেকেও শেষ করে দেব। আজ বারোটার পর খেলা দেখবি। রেশমার অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করে।
আরও পড়ুন:Rohtang Pass: কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেই রোটাং পাসের নাম বদলে দিল হিমাচলে
সোমবার লালনকে নিয়ে সিবিআই অফিসাররা গ্রামে এসেছিলেন বগটুই-কাণ্ডের পুনর্নির্মাণ করার জন্য। তখনই সিবিআই অফিসাররা রেশমাকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তাঁর মেয়েকেও নাকি বলা হয়, বাবাকে আজ শেষ দেখা দেখে নে। আর দেখতে পাবি না। তিন পাতার অভিযোগপত্রে রেশমা এরকম বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। লালনের মৃত্যুসংবাদ ছড়ানোর পর সোমবার রাত থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে রামপুরহাট। মঙ্গলবারও দিনভর উত্তপ্ত ছিল বীরভূম।
সোমবার সন্ধ্যায় রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের শৌচালয়ে লালনের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। গত ২১ মার্চ রাতে বগটুইয়ে তৃণমূলের উপ প্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পর গ্রামে তাণ্ডব চলে। গ্রামে অনেক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন গ্রামের একটি বাড়ি থেকে দশজনের পোড়া দেহ মেলে। ওই ঘটনায় নাম জড়ায় ভাদু ঘনিষ্ঠ লালনের। গত ৩ ডিসেম্বর সিবিআই লালনকে গ্রেফতার করে। তারপর থেকে তিনি রামপুরহাটে সিবিআইয়ের হেফাজতেই ওই অস্থায়ী শিবিরে ছিলেন।
এই ঘটনায় সিবিআই অস্বস্তিতে পড়েছে। দিল্লির সদর দফতর থেকে কলকাতায় সিবিআই কর্তাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে। দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের কয়েক জন পদস্থ কর্তা বীরভূমে আসেন।