গুয়াতেমালা: ইতিহাসের পাতায় নয়া সংযোজন। আস্ত এক প্রাচীন শহরের (Ancient City) খোঁজ মিলেছে দক্ষিণ আমেরিকায় (South America)। প্রাচীন মায়ান সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের (Ruins of Ancient Mayan Civilization) খোঁজ মিলেছ উত্তর গুয়াতেমালায় (Guatemala)। সম্প্রতি লাতিন আমেরিকার (Latin America) এই দেশে গবেষকরা (Researchers) আকাশপথে জরিপ (Air Survey) করছিলেন, সেই সময়ই ক্রান্তীয় বৃষ্টিঅরণ্য অঞ্চলের (Rainforest) তলায় চাপা পড়ে থাকতে দেখেন ওই শহরটিকে। প্রত্নতত্তববিদদের (Archaeologists) ধারণা, ওই শহরটি ২০০০ বছরেরও বেশি পুরনো। আকাশপথে পাওয়া চিত্র থেকে যা ধারণা হয়েছে, তাতে বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক অনুমান ওই শহরে প্রায় ১০০০ মানুষের বাস ছিল। শুধু তাই নয় ১১০ মাইল লম্বা রাস্তাও আছে। বেশ পোক্ত ও সুসজ্জিতভাবে তৈরি রাস্তাটি দেখে গবেষকরা এটাও অনুমান করেছেন, ওই পথ ধরেই ওই শহরের বাসিন্দারা একস্থান থেকে অনত্র যেতেন।
আরও পড়ুন: Pathaan-SRK Universe : ‘পাঠান’ উৎসব
কীভাবে খোঁজ মিলল?
ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক (Historical and Archaeological) দিক থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ হারানো মায়া সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হল কীভাবে? আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আমেরিকার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি এবং ফ্রান্স (France) ও গুয়াতেমালার সহযোগীদের নিয়ে তৈরি গবেষকদল (Team of Researchers) এই খোঁজ চালিয়েছে। সাহায্য নেওয়া হয়েছে লাইডার (LiDAR – Light Detection and Ranging) প্রযুক্তির। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে রেডিও ওয়েভ (Radio Waves)-এর পরিবর্তে লেজার লাইট (Laser Light) ব্যবহার করা হয়, যা খুব সহজেই মাটি ভেদ করে তলায় কী চাপা পড়ে রয়েছে, তার একটি সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে। সেই কারণেই বৃষ্টিঅরণ্য অঞ্চলের নীচে কী চাপা পড়ে আছে, তা জানার জন্য লাইডার প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছিলেন গবেষক দলের সদস্যরা।
প্রাচীন মায়া সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার হওয়ার খবরটি এনসিয়েন্ট মেসোআমেরিকা (Ancient Mesoamerica) নামক এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষক দলের সদস্যদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে এই খোঁজ প্রসঙ্গে। তাঁদের বক্তব্য, প্রাচীন মায়া সভ্যতার খোঁজ পেতে আকাশ পথ থেকে লাইডার ডেটা (LiDAR Data) ব্যবহার করা হয়েছে। সেই তথ্য থেকেই একটি পূর্ণ চিত্র হাতে উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, আর্থ-সামাজিক সংগঠন (Socio-Economic Organization) ও রাজনৈতিক শক্তিকে (Political Power) জানান দেওয়ার উদ্দেশ্যে কীভাবে পরিকাঠামোকে (Infrastructure) ব্যবহার করেছিল ইতিহাসে গর্ভে হারিয়ে যাওয়া অন্যতম এই প্রাচীন সভ্যতার মানুষেরা।
জার্নালে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, গবেষকরা আবাসস্থলে বড় পাটাতন ও পিরামিডেরও (Platforms and Pyramids) সন্ধান পেয়েছেন। তাঁদের ধারণা এগুলি কাজকর্ম (Work), বিনোদন (Recreation) ও রাজনৈতিক কাজের (Political Work) জন্য ব্যবহার করতেন ওই শহরের বাসিন্দারা। শহরের কিছু কিছু আবাসস্থলে আবার বল কোর্টেরও (Ball Courts) সন্ধান মিলেছে। গবেষকরা বলছেন, সেখানে বিভিন্ন ক্রীড়ার (Different Sports) আয়োজন করা হত। খোঁজ মিলেছে মানুষের তৈরি কৃত্রিম খালের (Canal)। ওই খালের মধ্যে দিয়ে জল এসে পড়ত জলাধারে (Reservoir)। এরপর, খরার মরশুমে (Dry Periods) জলাধারে সংরক্ষণ করে রাখা সেই জল ব্যবহার করা হত।