কলকাতা: গলা দিয়ে খাদ্যনালী কিংবা শ্বাসনালীতে মার্বেল জাতীয় পিচ্ছিল বস্তু ঢুকে গেলে তা বের করতে পারতেন না ইএনটি চিকিৎসকরা। স্বাভাবিক শারীরিক নিয়মে তা বেরিয়ে না গেলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতো। অনেক ক্ষেত্রে তাতে জীবন সংশয়ও দেখা দিত। এবার তা আর হবে না । এই জাতীয় বস্তু বের করার যন্ত্র তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের (Kolkata Medical College) ইএনটি বিভাগের অধ্যাপক-চিকিৎসক (Dr) সুদীপ কুমার দাস (Sudip Kumar Das) । ভারতীয় পেটেন্টও (Indian Patent) আদায় করে নিয়েছেন তিনি।
তিনি জানিয়েছেন, ২০০৭ সালে এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) থাকাকালীন তাঁর খারাপ অভিজ্ঞতা হয় । মার্বেল খেয়ে ফেলেছে এমন শিশু এলে ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে তিনি তা বের করতে পারতেন না । শুধু তাঁর একার এমন অভিজ্ঞতা নয়। মার্বেল জাতীয় পিচ্ছিল কোনও বস্তু খাদ্যনালীতে ঢুকে গেলে তা বের করতে পারতেন না কোনও ইএনটি চিকিৎসকই। খাদ্য নালী দিয়ে ঢুকলে তা চিকিৎসকরা ভেতরের দিকে ঠেলে দিতেন যাতে পাকস্থলী হয়ে মলের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। মলের সঙ্গে না বের না হলে সেক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের (Operation) দরকার হতো। শ্বাসসনালীতে ঢুকে গেলে তো অস্ত্রোপচার ছাড়া কোনো উপায়ই ছিল না। যা ঝুঁকির কারণও বটে। তখনই চিকিৎসক সুদীপ কুমার দাসের মাথায় আসে এমন যন্ত্র তৈরি করা যায় কি না, যাতে মার্বেল জাতীয় ফরেন বডি ইএনটি চিকিৎসকরা বের করে আনতে পারেন।
আরও পড়ুন: Birbhum Blast: মাড়গ্রাম বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃত্যু তৃণমূল প্রধানের ভাই লাল্টু শেখেরও
গত প্রায় ১৫ বছর ধরে লাগাতার পরিশ্রম করে অবশেষে সাফল্য পেয়েছেন চিকিৎসক সুদীপ কুমার দাস। গত সপ্তাহে ‘ইসোফেজিয়াল স্মুথ স্লিপারি ফরেন বডি পুলার’ নামে এই যন্ত্রটির (Machine) ভারতীয় পেটেন্ট (Indian Patent) পেয়েছেন তিনি। আগে যে যন্ত্র দিয়ে কয়েন, সেফটিপিন বা ছিপি জাতীয় জিনিস বের করে আনা হতো, তা খানিকটা চিমটার মতো দেখতে । ফলে মার্বেল জাতীয় পিচ্ছিল বস্তুকে ওই চিমটা যন্ত্র দিয়ে ধরতে পারা যেত না । তাই বের করাও সম্ভব হতো না। সুদীপবাবু নতুন যন্ত্রটিতে গঠনগত পরিবর্তন এনেছেন। যেখানে চিমটার জায়গায় একটি চামচের মতো অংশ ব্যবহার করা হচ্ছে । যা মার্বেল জাতীয় পিচ্ছিল বস্তুকে উপর দিকে তুলে আনতে সাহায্য করছে। এতেই সাফল্য পেয়েছে যন্ত্রটি।
এই যন্ত্রটি ব্যবহারের ফলে সহজ হয়েছে চিকিৎসা পদ্ধতি। অস্ত্রোপচারের মতো জটিলতার পথে হাঁটতে হচ্ছে না চিকিৎসক ও রোগীকে। সহজেই বের করে আনা যাচ্ছে মার্বেল জাতীয় পিচ্ছিল বস্তু।