জামশেদপুর এফ সি–০ এটিকে মোহনবাগান–০
আই এস এল যত শেষের দিকে যাচ্ছে, এটিকে মোহনবাগানের পারফরম্যান্স গ্রাফটাও তত নীচের দিকে নামছে। নাহলে ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরুর কাছে হারের পর মোহনবাগান আবার পয়েন্ট নষ্ট করে? তাও কার কাছে? না, লিগের পয়েন্ট তালিকায় দশ নম্বর দলের কাছে। গত বছরের লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন জামশেদপুরের অবস্থা এবার খুবই খারাপ। এখন তারা আছে নর্থ ইস্টের ঠিক উপরে। এ রকম একটা টিমের বিরুদ্ধে দাপিয়ে খেলে বড় ব্যবধানে জেতা উচিত ছিল বাগানের। উল্টে তারা তো গোল করতে পারল না। বরং তাদের কপাল ভাল বলতে হবে, জামশেদপুর দুটো সহজ সুযোগ নষ্ট করল। ওখান থেকে গোল না হওয়াই আশ্চর্যের। নিট ফল ১৭ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে মোহনবাগান চারে উঠে এল বটে, কিন্তু তাদের এই গোলকানা পারফরম্যান্স নিয়ে তারা প্লে অফ ম্যাচে কী করবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকে গেল। বৃহস্পতিবার টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠে ম্যাচের সেরা হয়েছেন জামশেদপুরের ব্রিটিশ গেমমেকার জে এমানুয়েল টমাস, যাঁকে সবাই চেনে জেট বলে। খারাপ খেলেননি আর্সেনাল অ্যাকেডেমি থেকে উঠে আসা জেট। তাঁর খেলায় অবশ্য জেট গতি নেই। একটু মন্থর। কিন্তু বল বাড়াতে পারেন। খেলা তৈরি করতে পারেন। তবে ম্যাচের সেরার পুরস্কারটি পেতে পারতেন ইস্পাত নগরীর গোলকিপার টি পি রেহনেশ। কত যর বল তিনি বাঁচিয়ে দলের দুর্গ রক্ষা করলেন তা গুণে শেষ করা যাবে না। বরিস সিং কিংবা ড্যানিয়েল চিমা সহজতম সুযোগ নষ্ট না করলে জামশেদপুরেরই জেতা উচিত ছিল। কিন্তু রেহনেশের দুটো হাত একটার পর একটা দুরন্ত সেভ না করলে জামশেদপুর এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত না।
জুয়ান ফেরান্দো অবশ্য সাফাই গাইতে পারেন হুগো বুমোকে তিনি এই ম্যাচেও পাননি। কার্ড সমস্যায় বেঙ্গালুরু ম্যাচে তিনি ছিলেন না। এদিন তাঁর কুচকিতে ছোট ছিল। তাই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়নি জামশেদপুরে। কার্ড সমস্যায় পাওয়া যায়নি আশিক কুরুনিয়নকেও। তাই শুরু থেকে নামানো হয় কিয়ান নাসিরিকে। আর বুমোর জায়গায় ফেদরিকো গালেগো। কিয়ান নাসিরি এখনও প্রথম টিমে আসার মতো জায়গায় আসেননি। জামশেদ নাসিরির ছেলে পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু একটা এক্স ফ্যাক্টর এখনও তাঁর খেলায় আসেনি। গালেগো মন্দ নন। কিন্তু হুগো বুমো যে কার্যকরী ফুটবলটা খেলতেন তা তাঁর মধ্যে নেই। তাই মোহনবাগানের সেই মাস্তানিটা ছিল না। বরং পিছন দিকে গ্লেন মার্টিন্স এবং কার্ল ম্যাকহিউ অনেকটা জায়গা জুড়ে খেললেন। বাগানের তৃতীয় অ্যাটাকার মনবীর সিং এখনও তাঁর পুরনো ফর্মের ধারেকাছে নেই। শেষ কুড়ি মিনিটের জন্য তাঁর বদলে নামানো হল ফারদিন আলি মোল্লাকে। এই তরুণ এদিন দর্শক হয়েই থাকলেন। আর আটটা গোল করার পরেও দিমিত্রি পেত্রাতোস এখনও যেন প্যাসেঞ্জার। দলের নয় নম্বর জার্সির মান ডোবাচ্ছেন। তবু বাগানের টিমের ওজন তো আছে। তাই প্রচুর শট হল গোলে। কিন্তু রেহনেশ তো এদিন প্রতিজ্ঞা করে নেমেছিলেন গোল খাবেন না। তাই গোল হবে কী করে ?