হুগলি: ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পর্ষদের (FSDA) নতুন চেয়ারম্যান হলেন সপ্তগ্রাম (Saptagram MLA) বিধানসভার বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত (Tapan Dasgupta)। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ফুরফুরা শরিফ (Furfura Sharif) উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত বছর জুলাই মাস থেকে হুগলির জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি দায়িত্বে ছিলেন।
মঙ্গলবার দায়িত্বভার পেয়ে তপন দাশগুপ্ত বলেন, ফুরফুরার রাস্তা, পানীয় জল, আলো, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ ফুরফুরায় আসেন সারা বছর। বিশেষ করে ইসালে সওয়াবের সময়। মানুষের চাহিদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূরণ করেছেন। আর যদি কোনও ঘাটতি থাকে, সেগুলো দেখে করা হবে। কাল ফুরফুরার মাজারে যাবেন। পিরজাদাদের দরবারে দেখা করবেন বলে জানান তপন দাশগুপ্ত।
আরও পড়ুন: Lalu Prasad Yadav-CBI: সিবিআই অফিসারদের ‘গুজিয়া’ খাওয়ালেন লালু, ‘হ্যাপি হোলি’ বললেন তদন্তকারীরাও
এফএসডিএ দশ জনের কমিটি। সেখানে চেয়ারম্যান জেলাশাসক ছাড়াও রয়েছেন স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান, জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী, চণ্ডীতলার বিধায়ক স্বাতী খন্দকার, শ্রীরামপুর মহকুমা শাসক সম্রাট চক্রবর্তী, ফুরফুরা প্রধান, ইউডিএমএ’র একজন প্রতিনিধি, মাদ্রাসা শিক্ষা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরের একজন প্রতিনিধি।
উল্লেখ করা যেতে পারে, বর্তমানে ফুরফুরা শরিফের একাংশের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কারণ ফুরফুরা শরিফের এক পিরজাদা আইএসএফের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। সম্প্রতি তাঁকে ৪২ দিন কারাবাসে থাকতে হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচিকে ঘিরে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আইএসএফ সমর্থকদের। সেই ঘটনার জেরে নওশাদ সহ ৮৮ জন আইএসএফ কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন মঞ্জুর হলেও শনিবার মুক্তি পান নওশাদ। তাঁর ৪২ দিন কারাবাসের কারণে ফুরফুরার একাংশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উপর ক্ষুব্ধ। যে কারণে রবিবার স্থানীয় বিধায়ক তথা পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী নওশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেও দেখা হয়নি তাঁদের। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুসলিম ভোটের বাড়া ভাতে যাতে ছাই না পড়ে, তার জন্য সচেষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রীকে দ্রুত কাজে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। তার পরে পাঁচ নেতাকে নিজের ঘরে ডেকে পাঠান মমতা। তাঁরা সকলেই সংখ্যালঘু। গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি, সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান, সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি ও জঙ্গিপুরের মন্ত্রী জাভেদ খান তাঁর ঘরে যান। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এই কমিটিকে সাগরদিঘি ভোটের বিপর্যয় নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। তারপরই রাতারাতি ফুরফুরা শরিফের উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান বদলকে অনেকেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের কৌশল বদল বলে মনে করছেন।