কলকাতা: তিলজলায় (Tiljala) বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পুলিশ (Police) ২০ জনকে গ্রেফতার (Arrest) করেছে। সোমবার রাতভর বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায় পুলিশ। সিসিটিভি (CCTV) ফুটেজ দেখে ওই ২০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। এদিনও এলাকায় বেশ উত্তেজনা ছিল। তবে মঙ্গলবার আর কোনও গোলমাল হয়নি। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে তিলজলা। দোকানপাট খুলেছে। যান চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গতকালের ওই তাণ্ডবলীলার পর এদিন বাড়ি থেকে অনেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। তাই বাজার খুললেও সেভাবে ক্রেতার দেখা নেই। এই পরিস্থিতিতে একজন ডিসি, একজন এসি, এবং দুজন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদা সহ ৭০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়।
শিশুমৃত্যুর ঘটনায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তিলজলায়। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তিলজলা, পার্ক সার্কাস, বন্ডেল রোড, পিক গার্ডেন এলাকা। হিংসা ছড়িয়ে পড়ে রেললাইনেও। ট্রেন আটকে চলে বিক্ষোভ। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি সহ পথচলতি বাইক। পড়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে, লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এদিকে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কেন উন্মত্ত জনতা হঠাৎ করে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরাল, অভিযুক্তদের থেকে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:Kolkata Leather Complex | তিলজলার পর এবার কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স, ভেড়ি থেকে উদ্ধার নাবালিকার দেহ
নৃশংস এই খুনের ঘটনায় তৎপর হয়েছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন(National Child Rights Commission)।রাজ্যের দুই আধিকারিককে ইতিমধ্যেই নোটিসও (Notice) পাঠিয়েছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্যসচিবকে এই ঘটনা নিয়ে নোটিস পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে কমিশন রাজ্যে একটি দল পাঠানোর কথা ভাবছে বলেও জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, তিলজলা থানা এলাকার ২১ নম্বর শ্রীধর রায় রোডে একটি বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাটে মা, বাবা, ভাইয়ের সঙ্গে থাকত ৪ বছরের নাবালিকাটি। পরিবারটি বিহারের বাসিন্দা। এদিন সকালে ময়লা ফেলতে রাস্তায় বেরিয়েছিল নাবালিকাটি। তারপর তার আর হদিশ মেলেনি। বহু খোঁজাখুঁজির পরেও নাবালিকাটির কেউ কোনও খবর দিতে পারেনি। এরপর নাবালিকাটির পরিবার তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তারপর রাত ১০টা নাগাদ তিলজলা থানার পুলিশের তল্লাশি অভিযানে ওই বিল্ডিংয়েরই প্রতিবেশী অলোক কুমারের ফ্ল্যাটে রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের পাশ থেকে হাত, পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ আরও আগে তল্লাশি শুরু করলে নাবালিকাটিকে বাঁচানো যেতে বলে দাবি মৃতের পরিবার সহ প্রতিবেশীদের। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে রবিবার রাতেই তিলজলা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই গোলমাল। এরপরই নাবালিকার খুনে অভিযুক্ত প্রতিবেশীকে আটক করে পুলিশ।