রিষড়া: সোমবারের পর মঙ্গলবারও পুলিশ রিষড়ায় (Rishra) ঢুকতে দিল না রাজ্য বিজেপির (BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumdar)। ডানকুনি থানার জগন্নাথপুরে দিল্লি রোডের (Delhi Road) উপর মঙ্গলবার পুলিশ (Police) সুকান্ত সহ অন্য নিজেপি নেতা-কর্মীদের আটকে দেয়। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় তাঁদের ঢুকতে দেওয়া যাবে না বলে পুলিশ জানায়। সুকান্তর পাল্টা দাবি, পাঁচ জনের যেতে অসুবিধা কোথায়, তা নিয়ে দফায় দফায় সুকান্তদের সঙ্গে পুলিশের তর্কাতর্কি হয়। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধ্বস্তাধস্তিো চলে। অবশেষে সুকান্ত দলবল নিয়ে রাস্তাতেই বসে পড়েন। পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান চলে। বিজেপি নেতাদের ঘিরে রাখে পুলিশ। ঘণ্টাদুয়েক পরে সুকান্ত কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (C V Ananda Bose) সঙ্গে দেখা করেন।
এদিকে হুগলির বিজেপির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় লোকাল ট্রেনে চেপেই রিষড়া স্টেশনে নামেন। কিন্তু ১৪৪ ধারার অজুহাত দেখিয়ে লকেটকেও স্টেশনের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। লকেট বলেন, শুধু বিজেপির ক্ষেত্রেই ১৪৪ ধারা জারি কেন। তৃণমূলের নেতারা তো রিষড়ায় ঢুকছেন। তা নিয়ে লকেটের সঙ্গেও পুলিশের বচসা হয়।
আরও পড়ুন:Central Assistance | গ্রামীণ প্রকল্পে হাজার কোটি প্রাপ্তি রাজ্যের
এদিন উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রিষড়া যান। কলকাতা বিমানবন্দর থেকেই রাজ্যপাল সোজা রিষড়া পৌঁছন। সেখানে রাজ্যপুলিশ এবং রেল পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যপাল। পুলিশ কর্তাদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, যে কোনও মুল্যে অশান্তি থামাতেই হবে। কোনও দোষীকে রেহাত করা চলবে না। পরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলে, পশ্চিমবঙ্গে অনেকদিন ধরেই রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে। এই দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতেই হবে। সবাই মিলে শান্তি ফেরানোয় সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
এর আগে ডালখোলা ও হাওড়ার শিবপুরে অশান্তির ঘটনা নিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মন্তব্য ছিল, গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এবং জগদীপ ধনখড়ের মতো বর্তমান রাজ্যপালকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না। শুভেন্দুর খোঁচা খেয়েই রাজ্যপাল এদিন রিষড়া ছুটে গেলেন কি না তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে রাজ্যপাল রিষড়া যাওয়ায় খুশি বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বলেন, রাজ্যপাল নিজে গিয়ে রিষড়ার পরিস্থিতি দেখলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললেন। এতে আমরা খুশি।
সোমবার রিষড়া যাওয়ার পথে কোন্নগরে সুকান্তকে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। প্রতিবাদে জিটি রোডেই সুকান্ত কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বসে পড়েন। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজেপির অবস্থান চলে। পরে সুকান্ত জানান, ডালখোলা, রিষড়া, হাওড়ার গোলমালের পর সাধারণ মানুষের উপরও অত্যাচার শুরু করেছে। নির্বিচারে যাকে-তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদেই তাঁদের অবস্থান। মঙ্গলবারও শ্রীরামপুরে অবস্থান চলবে। কিন্তু ডানকুনিতে সুকান্তদের আটকে দেয় পুলিশ।