কলকাতা: শনিবার সকালে রেড রোডে (Red Road) ইদের (EID) নমাজে সেরে তিলজলায় রিজওয়ানুর রহমানের (Rizwanur Rahaman) বাড়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ও মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। সেখানে পৌঁছে প্রথমে তিনি রিজওয়ানুরের স্মৃতিতে তৈরি বেদিতে মাল্যদান করেন। এরপর তাঁর বাড়িতে যান। দীর্ঘক্ষণ পরিবারের সদস্যদের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন রিজওয়ানুর মা, দাদা রুকবানুর রহমানের সঙ্গেও।
শনিবার সকালে প্রথমে রেড রোডে যান মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে নমাজ পাঠে উপস্থিত নমাজিদের শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী। রেড রোড থেকে তিনি যান পার্ক সার্কাসের লাল মসজিদে। রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সকলে শান্তিতে থাকুন। কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না। বাংলায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি, কোনও ভাবেই বাংলায় অশান্তি বরদাস্ত করবে না তাঁর সরকার। পার্ক সার্কাসে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী খুব বেশিক্ষণ ছিলেন না। সেখান থেকে অভিষেক এবং বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে মমতা তিলজলায় রিজওয়ানু রহমানের বাড়িতে গিয়ে হাজির হন।
আরও পড়ুন:Eid | Wishes | খুশি ইদে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সম্প্রীতির বার্তা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর
২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাতিপুকুর রেলস্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে উদ্ধার হয় রিজওয়ানুর রহমানের দেহ। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলে। সল্টলেকের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অশোক টোডির মেয়ে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে রিজওয়ানুরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অভিযোগ, ওই বিত্তশালী পরিবার কলকাতা পুলিশের একাধিক আইপিএস অফিসারের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা এবং রিজওয়ানুরকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেন। আরও অভিযোগ ওঠে, রিজওয়ানুরকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার সিবিআই তদন্ত হয়। পরের বছর সিবিআই চার্জশিটে জানায়, রিজওয়ানুর আত্মঘাতী হন। তাঁর পকেট থেকে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছিল। সেই নোটে একাধিক পুলিশ অফিসারের নাম ছিল। সিবিআই চার্জশিটে আরও জানায়, ওই ঘটনায় পুলিশ অফিসারদের প্ররোচনা ছিল।
ঘটনার পরই কলকাতার পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়। সরানো হয় কলকাতা পুলিশের আরও একাধিক কর্তাকে। রিজওয়ানুরের মৃত্যুকে ঘিরে ঘটনার দিন কলকাতা শহরে ব্যাপক হিংসার ঘটনা ঘটে। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। বস্তুত, রিজওয়ানুরের মৃত্যুই ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের প্রথম অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। সেই মামলা এখনও চলছে। ২০১১ সালে রিজওয়ানুরের দাদা রুবানুর রহমানকে তৃণমূল বিধানসভার টিকিট দেয়। তিনি নদিয়া থেকে জিতে আসেন। এখনও বিধায়ক রয়েছেন রুকবানুর। প্রতি বছর ইদের দিন মমতা তিলজলায় রিজওয়ানুরের মায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। শনিবারও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি।