ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif, Pakistan Prime Minister) এবং বিদেশ বিষয়ক দফতের রাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার (Hina Rabbani Khar, Minister of State for Foreign Affairs)-এর মধ্যে হওয়া গোপন কথপোকথন (Secret Discussion) ফাঁস হয়ে গিয়েছে। ওই বৈঠকে তাঁদের সঙ্গে আরও সহকারী (Assistant) ছিলেন। রবিবার (৩০ এপ্রিল) এই নিয়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বৈঠকে পাক প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশ বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানির মধ্যে দেশের বৈদেশিক নীতি (Foreign Policy) নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States of America – USA) সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক (Bilateral Relation) এবং চীনের (China) সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। শরিফ ও রব্বানির মধ্যে যে কথপোকথন ফাঁস হয়েছে, তাকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ডিসকর্ড লিকস (Discord Leaks) বলা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকে পাক প্রধানমন্ত্রী শরিফ এবং বিদেশ বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী হিনার মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্ব (Ukraine-Russia Conflict) নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘে (United Nations – UN) যে ভোটাভুটি হয়েছে, সে বিষয়ে কথা হয়েছে। ফাঁস হওয়া নথি অনুসারে, হিনা বলেছেন, পশ্চিমী দুনিয়াকে পাকিস্তানের খুশি করে চলা এড়ানো উচিত। আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব (Strategic Partnership) বজায় রাখার ইচ্ছে জিইয়ে রাখতে গিয়ে দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে পাকিস্তানের। পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মহলে ও রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে চীন বরাবরই পাকিস্তানের নীতি ও সিদ্ধান্তকে (Pakistan’s Policies and Decisions) সমর্থন জানায়। কিন্তু অতিরিক্ত মার্কিন ঘনিষ্ঠতার জেরে চীনের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি হয়েছে পাকিস্তানের।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে, গত মার্চ মাসে পাকিস্তানে বিদেশ দফতরের মন্ত্রী হিনা রব্বানি বলেছেন, চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যে মধ্যস্থতাকারী স্থল (Middle Ground) হিসেবে পাকিস্তানের মাটিকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়, এবার তা বন্ধ হওয়া উচিত।
খবরে প্রকাশ, বৈঠকে উপস্থিত এক সহযোগী পাক প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবকে সমর্থন করলে রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য ও শক্তি চুক্তি (Trade and Energy Deals) বিপন্ন হবে এবং তার ফলে পাকিস্তানের অবস্থানেও পরিবর্তন ঘটবে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে (UN General Assembly) ভোটাভুটি হয়েছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে। তাতে ৩২টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। তার মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম।