কলকাতা: পুরসভার নিয়োগ (Municipality Scam) দুর্নীতিতে সিবিআই (CBI) তদন্তের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন ঝুলে রইল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। সোমবার (Monday) শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখল হাইকোর্ট।
রাজ্যের দাবি, ইডি’র আবেদনে সাড়া দিয়ে এখানে আদালত সিবিআই তদন্তে সায় দিতে পারে না। কারণ, রাজ্যের কোনও তদন্ত সন্তোষজনক না হলে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে। এখানে রাজ্যের অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই, যা বেআইনি। তাই সংশ্লিষ্ট এফআইআর গ্রহণযোগ্যই নয়। অভিযোগ, রাজ্য সরকার হাইকোর্টে আবেদন করতেই ৭ জুন রাজ্যের অফিসারদের তদন্তের নামে টানা ৮ থেকে ৯ ঘন্টা ধরে হেনস্তা করা হয়েছে। ওই দিন রাজ্যের ১৪টি পুরসভা সহ ২০টি জায়গায় ইডি এবং সিবিআই তল্লাশি চালায়। তল্লাশি চলে বিধাননগরের পুর দফতরের নগরায়ন ভবনেও। তাতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: HC | Abhishik Banerjee | মঙ্গলবার অভিষেক হাজিরা নিয়ে অনিশ্চয়তা
এদিন আদালতের ইডির দাবি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে তদন্তের রিপোর্ট পেশ করা হয়। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়েই পুর দুর্নীতির তথ্য সামনে আসে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই পুর নিয়োগের ক্ষেত্রেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। তাকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায় রক্ষাকবচের দাবিতে। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য রক্ষাকবচ দেয়নি। মামলা ফেরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। তিনিও বলেন, দুই কেলেঙ্কারির উৎস যেহেতু একই, তাই দুই তদন্তই সিবিআই করতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মার্চ ইডি-র জালে ধরা পড়ে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অয়ন শীল৷ তারপরে গত ২০ এবং ২১ মার্চ অয়ন শীলের চুঁচুড়ার বাড়ি ও সল্টলেকের অফিস ও ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ইডি। সেখানেই উদ্ধার হয় পুর নিয়োগের ওএমআর শিট৷ সেই তথ্য আদালতে পেশ করে ইডি৷
সেই সময় মামলাটির শুনানি চলছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে৷ ইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি। এর পরে পুর নিয়োগ কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্ট যায় রাজ্য। সেখানে, হাইকোর্টের নির্দেশে ৭ দিনের অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। তারপরে মামলা সরে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহা বেঞ্চে। তিনিও সিবিআই তদন্তের নির্দেশই বহাল রাখেন।