কলকাতা: এবার ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) (ববি) দুই পদ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Ananda Bose)।ববি একাধারে পুরমন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র। রাজ্যপালের প্রশ্ন, দুই পদে থেকে কি ফিরহাদ আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন না? এই মর্মে তিনি রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছেন।
এই মুহূর্তে কলকাতা-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা ভয়াবহ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। রাজ্যপালের অভিযোগ, কলকাতার মানুষ ডেঙ্গি মোকাবিলায় সুষ্ঠু পরিষেবা পাচ্ছে না। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, পুরসভায় ফোন করলে বলা হচ্ছে, মেয়র নবান্নে রয়েছেন। আবার নবান্নে খোঁজ নিলে বলা হচ্ছে, তিনি পুরসভায় আছেন। রাজভবনের পিস রুমে তা নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। কেউ কেউ আবার কলকাতার মেয়র নিখোঁজ বলে বিজ্ঞাপনও দিতে চেয়েছেন বলে রাজ্যপাল চিঠিতে লিখেছেন।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রতি বছরের মতো এ বছরেও ডেঙ্গি মারাত্মক আকার নিয়েছে। যথারীতি রাজ্য সরকার এবং কলকাতা পুরসভার প্রসাসন প্রথম দিকে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামায়নি। কয়েকদিন আগেই মেয়র দাবি করেন, কলকাতায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনেক বেশি সচেতন এসব ব্যাপারে। তারও কয়েকদিন আগে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী দাবি করেছিলেন, ডেঙ্গি এখন কমতির দিকে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলছে। এখন রোজই মুখ্যসচিব ডেঙ্গি নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, জেলা স্বাস্থ্য দফতরগুলিকে নানা নির্দেশ দিচ্ছেন। ডেঙ্গি (Dengue) মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ ঢাক ঢোল বাজিয়ে শহরে ডেঙ্গি সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছেন। তবে রাজ্য সরকার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এবং মৃতের সঠিক পরিসংখ্যান দিচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুমার অপারেশন ব্লু স্টারের স্বর্ণমন্দিরে নীল স্কার্ফ মাথায় রাহুল
এর মধ্যেই রাজভবনের পিস রুমে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। অভিযোগ উঠেছে, কলকাতায় এবং বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত জঞ্জাল পরিষ্কার হয় না, বহু জায়গায় খোলামুখ নর্দমা থাকায় সেখানে মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে। তারপরেই রাজ্যপালের এই পত্রবাণ। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের অনেক নেতাই দুটি পদ দখল করে রয়েছেন। মেয়রের মতোই ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বিধায়কও বটে। অনেক পুরসভার চেয়ারম্যান বিধায়ক পদে আছেন।
এমনিতেই রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত এখন দৈনন্দিন চর্চার বিষয়। রবিবার ছুটির দিনেও রাজ্যপাল ছটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। আগের মতো এই নিয়োগ নিয়েও রাজ্য সরকার আপত্তি জানিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন। তার মধ্যেই ফিরহাদের দুই পদ নিয়ে রাজ্যপাল প্রশ্ন তুলে মৌচাকে ফের ঢিল ছুড়লেন বলে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও অন্য খবর দেখুন