কলকাত: কলকাতায় তৃণমূলের সঙ্গে যেখানে খুশি বসে কথা বলতে রাজি বলে শনিবার জানালেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি (Union Minister Niranjan Jyoti)। এদিন বিধাননগরে বিজেপি দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী দাবি করেন, ৩ অক্টোবর দিল্লিতে তাঁর দফতর থেকে তিনি পালিয়ে যাননি। তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। তৃণমূলই (Trinamool) বরং কথা বলতে চায়নি। তারা নানা বাহানা করে বিষয়টি নিয়ে নাটক করেছেন। তিনি আড়াই ঘণ্টা তৃণমূলের প্রতিনিধিদের জন্য দফতরে অপেক্ষা করেছিলেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, তৃণমূল নেতারা বিজেপি দফতরে এসে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তৃণমূল অবশ্য সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কলকাতা সফর নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। রাজভবনের সামনের ধরনা মঞ্চ থেকে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা দাবি করেন, তাঁদের আন্দোলনের চাপে পড়েই মন্ত্রী কলকাতায় আসতে বাধ্য হয়েছেন।
শনিবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন নিরঞ্জন জ্যোতি। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ তিনি বিজেপি দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেন। মন্ত্রী বলেন, আমি সব তথ্য নিয়ে এসেছি। তাঁর দাবি, ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চার বছরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয়। তাতে বলা হয়েছিল, রাজ্যের একাধিক জেলায় একশো দিনের কাজে নানা অনিয়ম হয়েছে। সরকার যেন ব্যবস্থা নেয়। মন্ত্রীর আরও দাবি, মনরেগা আইনে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা আটকে রাখার অধিকার রয়েছে বেনিয়ম হলে। তিনি বলেন, আদালতে গেলেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হয়ে যাবে। তাই তৃণমূল আদালতে যাচ্ছে না। এমনটাই অভিযোগ বিজেপি নেতাদের।
আরও পড়ুন: ৪ মাসের মধ্য়ে নারকেলডাঙায় বেআইনি বাড়ি ভাঙার নির্দেশ হাইকোর্টের
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের অভিযোগ ছিল, দফতরে প্রতিনিধিদের আড়াই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে মন্ত্রী পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এদিন কলকাতায় নিরঞ্জন বলেন, তৃণমূল সাংসদ অসত্য কথা বলেছেন। আমি প্রতিদিন কৃষি ভবনের ৪ নম্বর গেট দিয়েই ঢুকি এবং বেরই। সেদিনও তাই করি। আমার দফতরে কোনও পিছনের দরজা নেই।
সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, আমি তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলতে রাজি ছিলাম। কিন্তু নেতারা দলীয় কর্মীদের নিয়ে ভিড় করে আলোচনা করতে চান। তৃণমূল যাদের বঞ্চিত বলছে, তারা আদতে তৃণমূলেরই লোক। সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রীর দুই পাশে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং দাবি করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির জমানায় গত নয় বছরে বাংলা ৫৪ হাজার কোটি টাকা পেয়েছে। এদিন নিরঞ্জনও একই কথা বলেন।
শুক্রবার রাজভবনের সামনের ধরনা মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, শনিবার বিজেপি দিল্লি থেকে কলকাতায় নিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। তিনি এসে মিথ্যে কথা বলবেন। মঞ্চ থেকে অভিষেক-সহ তৃণমূলের অন্য নেতারা দাবি করেন, তাঁদের আন্দোলনের চাপে পড়েই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কলকাতায় আসছেন।
আরও অন্য খবর দেখুন