নয়াদিল্লি: লোকসভার এথিক্স কমিটির ডাকে আগামী মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর যাবেন না তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে তিনি শুক্রবারেই তা জানিয়ে দিয়েছেন। মহুয়া চিঠিতে লিখেছেন, ৩০ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় বিজয়া সম্মেলন রয়েছে। সেগুলি সব আগে থেকে ঠিক করা। তাঁকে সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে। তাই তিনি ৩১ তারিখ দিল্লিতে থাকতে পারছেন না। ৫ নভেম্বরের পর তাঁকে কমিটির সুবিধা অনুযায়ী যে কোনও দিন, যে কোনও সময় ডাকা হলে তিনি হাজির হবেন।
বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটি প্রথম বৈঠকে বসে। এদিন অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ (BJP MP) নিশিকান্ত দুবে (Nishikant Dubey) এবং আইনজীবী জয়অনন্ত দেহাদ্রাইয়ে বয়ান রেকর্ড করা হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে তাঁদের অভিযোগ শোনে ১৫ সদস্যের এথিক্স কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকার সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মহুয়া মৈত্রকে ৩১ অক্টোবর তলব এথিক্স কমিটির
উল্লেখ্য, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ নিয়ে লোকসভার এথিক্স কমিটি এদিন প্রথম বৈঠকে বসে। স্পিকার ওম বিড়লার কাছে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে নথি জমা দিয়েছিলেন দুবে ও দেহদ্রাই। স্পিকার সেই নথি যাচাই করার জন্য বিজেপি সাংসদ বিনোদকুমার সোনকারের নেতৃত্বাধীন এথিক্স কমিটির কাছে পাঠান।
এর আগে নিশিকান্ত দুবে বলেন, মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু আইনজীবী জয়অনন্ত দেহদ্রাই তাঁকে সমস্ত নথি দিয়েছেন। যে নথিতে স্পষ্ট আদানি এবং মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন তোলার জন্য ব্যবসায়ী হিরানন্দানির থেকে ‘টাকা’ নিয়েছিলেন মহুয়া।
এথিক্স কমিটির প্যানেল জানিয়েছে, সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে প্রশ্নের জন্য নগদ অর্থ নেওয়ার অভিযোগ গত ১৫ অক্টোবর আনেন সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সেই অভিযোগ নিয়ে আইনজীবী দেহদ্রাইয়ের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। স্পিকারের কাছে তাঁর চিঠিতে দুবে জানিয়েছেন, মহুয়ার করা লোকসভায় এখনও পর্যন্ত ৬১টি প্রশ্নের মধ্যে ৫০টি আদানি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে।
প্রসঙ্গত, বুধবারই মহুয়া মৈত্রকে ফের কটাক্ষ করেন বিজেপি এমপি নিশিকান্ত দুবে। তিনি বলেন, আদানি ইস্যু কিংবা ভুয়ো ডিগ্রি কোনও বিষয় নয়। আসলে নিজের দুর্নীতি ঢাকতে দেশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা। অন্যদিকে, নিশিকান্ত দুবেকে ভুয়ো ডিগ্রিধারী বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন মহুয়া।
বুধবার হিন্দিতে এক টুইটে দুবে বলেন, একদিকে সংসদের গরিমা, ভারতের সুরক্ষার প্রশ্ন। আর অন্যদিকে সাংসদের শোভন আচরণ, দুর্নীতি এবং অপরাধ প্রবণতার ইস্যু। ন্যাশনাল ইনফরমেটিকস সেন্টারের মেল দুবাই থেকে খোলা হয়েছিল কি না, এর জবাব তাঁকে দিতে হবে। টাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল কি না এবং বিদেশ ভ্রমণের খরচ কে দিয়েছিল? বিদেশযাত্রার জন্য তিনি লোকসভা স্পিকার কিংবা বিদেশ মন্ত্রকের অনুমতি নিয়েছিলেন কি না, এর জবাবও তাঁকে দিতে হবে, বলেন দুবে।
নিশিকান্ত বলেন, আদানি, ডিগ্রি কিংবা চুরির প্রশ্ন নয়। আপনি যেভাবে আপনার দুর্নীতি ঢাকতে দেশকে বিভ্রান্ত করছেন, প্রশ্ন সেটাই। ‘ডিগ্রিওয়ালি দেশ বেচে’ এবং ‘চান্দ পয়সা কে লে মর্যাদা বিক্রি’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে টুইট করেছেন নিশিকান্ত দুবে।