Monday, June 9, 2025
HomeScrollFourth Pillar | রাজনৈতিক দল নয়, আরএসএস-বিজেপির বিরুদ্ধে ভরসা আমাদের অন্নদাতারা
Fourth Pillar

Fourth Pillar | রাজনৈতিক দল নয়, আরএসএস-বিজেপির বিরুদ্ধে ভরসা আমাদের অন্নদাতারা

Follow Us :

স্বাধীনতার পরে মধ্য চাষি বা প্রান্তিক চাষিরা কিছু আন্দোলন করেছিলেন, তেভাগার আন্দোলন। পরবর্তীতে নকশালবাড়ির লড়াই, কিন্তু তা ছিল কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে। ১৯৮৮তে অক্টোবর নভেম্বর মাসে মহেন্দ্র সিং টিকায়েতের নেতৃত্বে, কম বেশি সম্পন্ন কৃষকেরা, এইভাবেই দিল্লিতে এসেছিল। নরেন্দ্র মোদি, রবিশঙ্কর প্রসাদেরা সম্ভবত এই আন্দোলনের কথা বিলকুল ভুলে গেছেন। আজকের নরেন্দ্র মোদি, বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়েও সেই সময়ে সরকারের প্রধান, রাজীব গান্ধীর কাছে ছিল ৪০৪ জন সাংসদ। মানে এখনকার বিজেপির থেকে অন্তত ১০০ জন বেশি এমপি, সেই সময় মিডিয়া বলতে খবরের কাগজ আর দূরদর্শন, তার পরেও টিকায়েতের ডাকা দিল্লি চলোতে রাজধানীর সর্বত্র সেদিন কৃষকেরাই ছিল। বোট ক্লাব থেকে রাজপথ, ইন্ডিয়া গেটে কেবল কৃষক, কেউ কেউ বড় বড় হুক্কা নিয়ে রাজপথেই বসে, সেদিন তাদের দিল্লি ঢোকার আগে রাস্তা কেটে দেওয়া হয়নি, জলকামান ছোড়া হয়নি, তাদেরকে মাওবাদী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী বলা হয়নি। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল, কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছিল, শেষে কৃষক নেতা টিকায়েত আন্দোলন ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, কৃষকরা ঘরে ফিরেছিল। ৩৫টা দাবি, আখের আরও বেশি সহায়ক মূল্য, বিদ্যুৎ ভর্তুকি, সেচে ভর্তুকি মেনে নিয়েছিল সরকার, মানে মানতে বাধ্য হয়েছিল।
আজকের সরকারের সে খবর হয় জানা নেই, নয় মনেই নেই। এই কৃষক আন্দোলন যে পর্যায়ে গেছে, তাতে করে ওসব মাওবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে এই আন্দোলনকে দমানো যাবে না, এ আন্দোলনের চেহারা আরও অনেক বড়। মনে হতেই পারে যে তারা ফিরে গেছে, আন্দোলন শেষ, কিন্তু এ আন্দোলন রাজনৈতিক নেতাদের মতো এমএলএ, সাংসদ হওয়ার আন্দোলন নয়। ভাতের লড়াই, জমির লড়াই, হকের লড়াই।

ঠিক এই মুহূর্তে, আন্দোলনের নেতাদের আর সরকারের বক্তব্যটা দেখে নেওয়া যাক। প্রধানমন্ত্রী এখনও সরাসরি কৃষকদের সঙ্গে বসার কথা ভাবছেন না, আসলে আরএসএস বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা বিফলে গেল, এমন হেডলাইন দেখতে চায় না, তিনি তো মানব নন মহামানব। অতএব তিনি আলোচনায় বসলে সব ঠিক হয়ে যাবে, অন্তত ঠিক হওয়ার দিকেই এগোবে এই ছবি, এই ভাবমূর্তি বরকরার রাখতে হবে। তিনি শেষ খুঁটি, অতএব তিনি বাদে সব্বাই বসে পড়ছেন, আন্দোলনে আছেন এমন কৃষকদের নেতারা আপাতত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কৃষি বিল ফেরত নিয়েছেন বেশ করেছেন কিন্তু আমাদের দাবি তো সেটা ছিল না, আমাদের দাবি এমএসপিকে আইন করতে হবে, এমনকী কিছুটা নমনীয় কৃষক সংগঠনও এই ব্যাপারে অনমনীয় স্ট্যান্ড নিয়েছে। মানে যে দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার সঙ্গে নতুন দাবি যুক্ত হয়েছে, অন্যদিকে সরকার শুরুর দিকে গা ছাড়া ভাব কাটিয়ে কথা বলা শুরু করেছিল, এখন সেই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে দমন নিপীড়নের পথও খোলা রাখছে। যে কোনও দিন কিছু বাছাই কৃষক নেতাদের গ্রেফতার করা হতে পারে, সীমান্তে ডুগডুগি বাজানো হতে পারে। সাড়ে ছ’ বছরে এই মোদি সরকারের প্রথম ধাক্কাটা এসেছিল, এনআরসি, সিএএ আন্দোলন থেকে, আনপ্রিসিডেন্টেড, অভূতপূর্ব ছিল সেই ছাত্রদের আন্দোলন, সংবিধান হাতে নিয়ে পথ চলা, রাতের পর রাত ঠান্ডায় জমায়েত চালিয়ে যাওয়া, উল্লেখযোগ্য ছিল মহিলা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ। কবিতা, গান, দেশের বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণ, সব মিলিয়ে এক নতুন চেহারা। কিন্তু মোদি সরকার যখন সবে ঝুঁকতে শুরু করেছেন, সেই সময় চলে এল কোভিড, করোনা, অতিমারি বাঁচিয়ে দিল সরকারকে। একবার কৃষকদের আন্দোলন তো দেখেছে দেশ, আবার এক নতুন আন্দোলন শুরু হল, এ আন্দোলনও অন্য চেহারা নিচ্ছে, এ আন্দোলনেও সমাজের বিভিন্ন অংশের সমর্থন আসা শুরু হয়েছে। এম এস স্বামীনাথন যাঁকে ক’দিন আগে ভারতরত্ন দেওয়া হল তাঁর কন্যা আন্দোলনের পাশে, বামপন্থীরা তো আছেনই, সঙ্গে আছে আপ, তৃণমূল। রাহুল গান্ধী ঘোষণাই করে দিলেন জিতলে এমএসপি লাগু হবে। এবং অন্য কিছু খাড়া না করলে এ আন্দোলনের সামনে সরকারকে মাথা নোয়াতেই হবে। সবচেয়ে কম যা হতে পারে, তা হল এমএসপিকে আইন মেনে নিয়ে বাকি দাবিগুলোকে আপাতত ঝুলিয়ে রাখা। আর এমএসপি লাগু হলে কোটি কোটি অন্নদাতার আয় দুগুণ তিনগুণও বেড়ে যাবে। এবং এর কমে কোনও সমাধান সূত্র বের হবে না, এটা এমনকী সরকার মহলেরই ধারণা।

আরও পড়ুন: সুকান্তর উপর হামলা, দিল্লিতে ডিজিকে তলব সংসদীয় কমিটির

ফসলের অবশেষ জ্বালানো নিয়ে আইন অবিলম্বে তুলে নিতেই হবে, কারণ দেশজুড়ে ধান, গম কাটা শেষ হয়েছে, আমাদের বাংলায় এ সমস্যা তত বড় নয়, কিন্তু হরিয়ানা, পাঞ্জাবে এ সমস্যা বিরাট। ফসলের অবশেষ তুলতে একজন কৃষককে, তাদের হিসেব মতো বিঘে পিছু ৭০০ টাকা খরচ করতে হবে, তার থেকে জ্বালিয়ে দেওয়া অনেক কম খরচের, যদিও তা আবার পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে বিরাট প্রশ্ন চিহ্ন। কিন্তু কৃষকদের প্রশ্ন জল, নদী, পাহাড়, জঙ্গলের সর্বনাশ করে ফ্যাক্টরি তোলার সময়, যে সরকারের পরিবেশের কথা মনে থাকে না। সেই সরকার পরিবেশ দূষণের ক্ষেত্রে কৃষির যার নাকি সামগ্রিক দূষণের মাত্র ৩ শতাংশ দায় আছে, তাদের জন্যই এত কড়া কানুন কেন? কেন পরিবেশ আইন লঘু করে দেওয়া হচ্ছে, কেন সেখানে সব আইন কানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাইনিং-এর নামে পাহাড়, নদী, জঙ্গল উজাড় করে দেওয়া হচ্ছে, এর কোনও উত্তর সরকারের কাছে নেই। আবার হাজার হাজার ট্রাক্টর, লক্ষ লক্ষ কৃষক দিল্লির পথে, তারা পঞ্জাব থেকে রাজধানীতে যাবে বলে বের হয়েছে, তাদের ট্রাক্টরের সঙ্গে ট্রলার লাগানো আছে, তাতে খাবার আছে, ঘুম পেলে শোবার ব্যবস্থা আছে, জল রাখার ব্যবস্থা আছে। ছ’ মাসের রসদ নিয়ে আবার তারা পথে। তারা জানে লড়াই চলবে, অতএব তারা সেইভাবেই তৈরি হয়ে এসেছে। পাঞ্জাব থেকে দিল্লি, ট্রাক্টরের তেল খরচ, তারা নিজেরা জোগাচ্ছে। ইতিউতি কিছু লাল ঝান্ডা থাকলেও, এই লং মার্চের নেতৃত্ব ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের হাতে, এই সংগঠন তৈরি করেছিলেন চরণ সিং, যদিও প্রকাশ্যে কোনও দল এই সংগঠনের মাথায় নেই।

৫০০-র বেশি কৃষক সংগঠন, এমএসপি লাগু করার দাবিতে দিল্লি চলোর ডাক দিয়েছে, তাতে বিজেপি বাদ দিয়ে প্রত্যেক দলের কৃষক সংগঠন আছে। শুরু হয়েছে পঞ্জাব থেকে, হরিয়ানা থেকে, এখন পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকেও কৃষকরা দিল্লির দিকে রওনা দিয়েছেন, দিল্লি আবার এক বিরাট অবরোধের মুখে। লং মার্চ আটকাতে, সরকার রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করেছিল, জলকামান রেখেছিল, টিয়ার গ্যাস, পুলিশ সবই ছিল। কিন্তু সেসব ব্যারিকেড, পঞ্জাব দে পুত্তর এরা উড়িয়ে দিয়েছে সে ব্যারিকেড, ড্রোন থেকে টিয়ার গ্যাস ছোড়ার পরিকল্পনা ছিল, তো আন্দোলনকারীরা ঘুড়ি উড়িয়ে, ঘুড়ির সুতোতেই কাত করে ফেলেছে কয়েকটা ড্রোনকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একজন বাঙালি কৃষকের ছবি চোখে না পড়লেও, বাঙালি কেরানি রক্তে প্রচণ্ড দোলা, দারুণ উত্তেজনা। বিপ্লব বুঝি আসিছে ধাইয়া, ওই তো ওই তো গ্রাম ঘিরছে শহরকে, উত্তেজনার আগুনে হাতে ফোসকা পড়ার জোগাড়। আসলে আমাদের বাংলায় ১২ বিঘে জমিকে এক জোত বলা হয়, মানে ১২ বিঘে জমি থাকলে জোতদার। পঞ্জাবে? বেশিরভাগ চাষির জমির আয়তন হল ৩৫ বিঘের ওপরে, তারা ওখানে ছোট চাষি, সাধারণত ৭০-৮০ বিঘে জমিতে চাষ করে সম্পন্ন চাষিরা। তাদের প্রত্যেকের ট্রাক্টর আছে, ফ্যামিলি সুদ্ধ সবাই চেপে শহরে গিয়ে আইনক্সে সিনেমা দ্যাখে, পপকর্ন খায়। ফিরে এসে আগুন জ্বালিয়ে সাঁঝা চুলহাতে রোটি বানায়, ৩৬ ইঞ্চি ফ্ল্যাট টিভিতে সিরিয়াল দ্যাখে। হরিয়ানা বা পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ছবিতে ওই শহরের সংস্কৃতিটা নেই, ওরা আরও ফিউডাল, আর কনজারভেটিভ। বাকিটা একই রকমের। মানে এরা বড় চাষি, সম্পন্ন চাষি। যারা দিল্লিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়েছে, তারা সম্পন্ন চাষি। তারাই কৃষক বিলের বিরোধিতা করছিল। বিহারে, বাংলায়, কেরালাতে বামেদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি, কই সেখান থেকে চাষিরা গেল না কেন? বাংলার চাষিরা গেল না কেন? তারা কি এমএসপি চায় না? জটিল এসব প্রশ্নগুলো মাথার মধ্যে কামড়ায়, যদিও জানি নিশ্চিত, বড় লোকের ঢাক তৈরি গরিব লোকের চামড়ায়।

খুব সোজা একটা ব্যাখ্যা আছে, যার যত বেশি লাভ, তার তত বেশি ক্ষতি। বাংলা, বিহার, অসম, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের প্রান্তিক চাষিদের চাষবাসটা কেবলমাত্র খেয়েপরে টিকে থাকার জন্য, ব্যস। তার থেকে বেশি কিছু তারা আশাই করে না, তারা ট্রাক্টরে চেপে শহরে গিয়ে আইনক্সে সিনেমা দেখার কথা চিন্তাও করে না, তাদের ঘরে ৪২ ইঞ্চি ফ্ল্যাট টিভি নেই, এসি নেই। পঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের সম্পন্ন কৃষকরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে, তাদের মান্ডি দখল করবে আদানি, আম্বানিরা। তারা জানে এদের সঙ্গে লড়া অসম্ভব, তারা তাদের ভবিষ্যতের বিপদটা বুঝতে পাচ্ছে পরিষ্কার। বাংলা বিহারের প্রান্তিক কৃষক ভাবছে, যা আছি তার থেকেও খারাপ? হয় নাকি? তাদের কাছে বিপদের স্বরূপ পরিষ্কার নয়, তাদের কাছে ধান বেচে বড়জোর একটা বাইক কেনার স্বপ্ন আছে, এখনও সে স্বপ্নে বাধা নেই। আসলে গ্রাউন্ড রিয়েলিটি মানুষকে স্বপ্ন দেখায়, স্বপ্ন ভাঙায়। বাংলার জমিতে কৃষকের সে স্বপ্ন নেই, স্বপ্নভঙ্গও নেই। পঞ্জাবে ছবিটা বিলকুল আলাদা, সেখানে স্বপ্নভঙ্গ আছে, তাই তারা রাস্তায়, তাই তারা তোয়াক্কা করে না জলকামান বা টিয়ার গ্যাসের, তাই তারা ব্যারিকেড ভাঙছে, তারা দিল্লির দিকে এগোচ্ছে। তারা তাদের আইনক্স, সিনেমা, ফ্ল্যাট টিভি, গাড়ি, ডিজে ডেকে উদ্দাম নাচের স্বপ্ন দেখা ছাড়তে রাজি নয়। চরণ সিং বলেছিলেন কৃষকদের এক চোখ থাকবে জমিতে অন্য চোখ দিল্লির গদির দিকে। পশ্চিম ইউপি, পঞ্জাব, হরিয়ানা ইত্যাদিতে সেটা সত্যি। অতএব কমরেডরা যাঁরা ভাবছেন, দিল্লির লালকিলায় লালনিশান উড়বে, যারা উত্তেজনায় ফুটছেন, তাঁরা সংযত হোন। হ্যাঁ, অবশ্যই খুশি হতে পারেন, এ লড়াইয়ের উল্টোদিকে মোদি-শাহের সরকার। এই বিরাট কৃষক সমাজ যদি সরকারের বিরোধিতা করে, তাহলে সরকারের ওপর চাপ বাড়বে, তাদের যা ইচ্ছে খুশি তাই করার প্রবণতায় অঙ্কুশের কাজ করবে এই লং মার্চ, এই আন্দোলন। এবারে আসুন কেন্দ্র সরকার বিরোধী এক আন্দোলন হিসেবে, এই কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে কিছু কথা বলা যাক, সেটাই খুব জরুরি। নরেন্দ্র মোদির প্রথম সরকার বা দ্বিতীয় সরকারের, একটা প্রবণতা খুব উল্লেখযোগ্য। যে কোনও আন্দোলন একটু তীব্র হলেই সরকার নার্ভাস, সাংসদ ৩০৩, মন্ত্রী সব দফতরেরই বিজেপিরই, দলে ভাঙন নেই, দলের ওপর কন্ট্রোল শাহ মোদির যা আছে তা একমাত্র ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তুলনীয়। বিরোধী দল এতটা দুর্বল ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে ছিল না, তবুও কোনও আন্দোলন একটু তীব্র হলেই সরকার নার্ভাস। তাদের বক্তব্য, তাদের ভাবভঙ্গি নার্ভাস, তার কারণ সামনে নির্বাচন, পাকা ঘুঁটি কাঁচিয়ে দিতেই পারে অন্নদাতাদের এই আন্দোলন। আন্দোলনটা পঞ্জাব বলেই আরও বেশি ভরসা, চেহারা আর মেজাজ জঙ্গি হতে সময় নেয় না, তার কিছু কারণ আছে। প্রথম কারণ হল, শিখ মানুষজন এমনিতে আমুদে, খাওয়াদাওয়া, পানভোজন, নাচগান ভালোবাসেন, এবং তার সবটাতেই প্রবল প্রাণপ্রাচুর্য। তাদের অনুভূতি আর তার প্রকাশ, সবসময়েই ওপরের তারে বাঁধা। আনন্দে নাচ বা গানে যতটা প্রাণ আছে, রাগের অনুভূতি প্রকাশে ততটাই উগ্রতা আছে। অনেকে বলে এই শিখ জাঠ কৃষকরা একটা আখের জন্য জান বাজি রেখে দিতে পারে, আবার তাদের খুশি করলে এক থালা গুড় অনায়াসে দিয়ে দিতে পারে, যা তৈরি করতে ডজন দু’ ডজন আখ লেগেছে। টেকেন ফর গ্রান্টেড বিষয়টা এঁদের সঙ্গে একদম যায় না। আর শিখরা আরও আলাদা কারণ তারা নিজেদের একটা আলাদা কমিউনিটি হিসেবেই ভাবে। বিজেপির চারটে অস্ত্র, এক, নরেন্দ্র মোদি, দুই, মেরুকরণ। তিন সংগঠন আর চার নম্বর অস্ত্র হল তীব্র দেশপ্রেমের বুলি, জঙ্গি জাতীয়তা বোধ। পঞ্জাবে এই চারটে অস্ত্রের মধ্যে তিনটেই কাজ করে না। পঞ্জাবে বিজেপির তেমন সংগঠন নেই, এতদিন তারা অকালি দলের পিঠে ভর করেই চলেছে। অকালি দলের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে তারা আরও নড়বড়ে। মেরুকরণ ওখানে নেই, কারণ শিখদের সঙ্গে মুসলমানদের ঝামেলা দেশভাগের সঙ্গেই শেষ হয়ে গেছে, পঞ্জাবে মুসলমানরা শিখদের কাছে থ্রেট নয়। আর ওই জাতীয়তাবাদের পাঠ শিখদের জন্মসূত্রে পাওয়া। এমন কোনও পরিবার নেই যে পরিবারে কেউ না কেউ আর্মিতে কাজ করেনি, ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ে অংশ নেয়নি। কাজেই উগ্র জাতীয়তাবাদের বুলি ওখানে চলবে না। একটা মাত্র অস্ত্র নরেন্দ্র মোদি, তাই পঞ্জাবে অসহায়। এই কারণেই পাঞ্জাবে কৃষকদের আন্দোলন কেন্দ্র সরকার বিরোধী এক আন্দোলন হয়ে উঠছে, এই কারণেই সেই আন্দোলনের পাশে তাবত সরকার বিরোধী মানুষ জমা হচ্ছেন, হবেন।

অন্য খবর দেখুন 

YouTube player
RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Bangladesh | Sheikh Hasina | বাংলাদেশের ভোটে লড়বেন হাসিনা? দেখুন সবচেয়ে বড় খবর
00:00
Video thumbnail
Yunus | Bangladesh | ইউনুস ভোট ঘোষণার পরই আসরে নামল আওয়ামী লীগ, এবার কী করবেন ইউনুস?
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | Nabanna | নবান্ন থেকে বড় বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | ফের কোভিডের সংক্রমণ নিয়ে বিরাট নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর, কী বললেন শুনে নিন
00:00
Video thumbnail
Howrah Bridge | হাওড়া ব্রিজে টাকা তুলছে পুলিশ, তারপর কী হল দেখুন
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | সংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
00:00
Video thumbnail
Fake Voter | TMC | নিউটন অস্বস্তি তৃণমূলের, কী সিদ্ধান্ত দলের?
00:00
Video thumbnail
Dilip Ghosh | BJP | ২৬-এর ভোটে বিজেপির প্রার্থী হবেন দিলীপ ঘোষ? দেখুন কলকাতা টিভি EXCLUSIVE
01:14:30
Video thumbnail
Chhattisgarh Sukma | সুকমার কোন্টায় প্রেশার আইডি বি/স্ফো/রণ, দেখুন চাঞ্চল্যকর খবর
42:11
Video thumbnail
Mamata Banerjee | নবান্ন থেকে বড় বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, দেখুন সরাসরি
04:36