কদিন আগেও যাঁরা ছিলেন শ্রী সিমেন্টের দেওয়া চুক্তিপত্রে সই করার বিরুদ্ধে লাল হলুদের সেই প্রাক্তনরাই সোমবার সিদ্ধান্ত নিলেন ক্লাব চুক্তিপত্রে সই করে ফুটবল খেলার দিকে এগিয়ে যাক। চুক্তিপত্রে যে সব ব্যাপারে ক্লাবের আপত্তি আছে সেগুলো নিয়ে তারপর আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
সোমবার বিকেলে ইস্ট বেঙ্গল তাঁবুর ড্রেসিং রুমে লাল হলুদের প্রাক্তন ফুটবলাদের নবনির্বাচিত কমিটি চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। সভায় ছিলেন না অন্যতম আহ্বায়ক মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। ছিলেন বাকি দশজন। সভায় মনোরঞ্জনের দেওয়া ফর্মুলা নিয়েই আলোচনা হয়। মনোরঞ্জন বলেছিলেন, “নতুন মরসুম শুরু হতে আর বেশি দেরি নেই। এখন আগে দরকার চুক্তিপত্রে সই করা। কারণ চুক্তিপত্রে সই না করলে শ্রী সিমেন্ট টিম গড়ার কাজে হাত দেবে না। সই হলে টিমটা হবে। তার পর যে দুটি বিষয় নিয়ে সমস্যা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।”
শুধু মনোরঞ্জনই নন, বাইচুং ভুটিয়াও রবিবার তাঁর মত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, “ফুটবলের স্বার্থে ক্লাবের উচিত অবিলম্বে চুক্তিপত্রে সই করা।” মনোরঞ্জন এবং বাইচুং-এর দেওয়া ফর্মুলা মেনে নিলেন বাকি দশজন ফুটবলার। সভার শেষে কমিটির অন্যতম সদস্য সুমিত মুখোপাধ্যায় বললেন, “আমরা প্রাক্তন ফুটবলাররা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় মনাদার দেওয়া ফর্মুলাটাতেই এক মত হলাম। কারণ এই টালাবাহানা আর ভাল লাগছে না। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। এখন দল গড়তে নামলে যে ভাল টিম গড়া যাবে তা নয়। তবে চেষ্টা তো করা যাবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম চুক্তিপত্রে সই করে দেওয়া হোক। আমরা ক্লাবকে আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিচ্ছি। এখন ক্লাবের কার্যকরী কমিটি যদি তা মেনে নেয় তা হলে সমস্যা মিটে যেতে পারে।”
প্রাক্তনদের সিদ্ধান্তের আগেই অবশ্য ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সভা ডাকা হয়েছে বুধবার বিকেল চারটেয়। শ্রী সিমেন্টের দেওয়া যে সব শর্ত ছিল তার থেকে তারা অন্তত সাতটি বিষয়ে নমনীয় হয়েছে। বাকি রয়েছে দুটি বিষয়, যা নিয়ে এখনও ঐক্যমত্য হওয়া যায়নি। এক, দুই পক্ষের বিচ্ছেদের শর্ত এবং দুই, ক্লাবের ড্রেসিং রুমের মালিকানা শ্রী সিমেন্টের হাতে হস্তান্তর। এখন এই দুটি বিষয়ে সমঝোতা হওয়ার আগেই কি ক্লাবের পক্ষে চুক্তিতে সই করা সম্ভব? জবাবে কার্যকরী কমিটির এক সদস্য বললেন, “কী করে সম্ভব? আমরা সই করে দিলাম। কিন্তু শ্রী সিমেন্ট সেটা মানল না। তাহলে কী হবে? তখন কি আমরা শ্রী সিমেন্টের পায়ে ধরতে যাব? না কি তা যাওয়া সম্ভব? তাহলে এতদিন ধরে আমরা সই করতে আপত্তি জানালাম কেন? এটা আমার ব্যক্তিগত মত। বুধবার কার্যকরী কমিটি কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তো সেদিনই ঠিক হবে। কিন্তু সব কটা বিষয় নিয়ে ঐক্যমত্য না হলে সই করা সম্ভব নয় বলেই আমার মনে হয়। তাহলে এত দিন ধরে অপেক্ষা করার কী ফল হল?”