Friday, June 27, 2025
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | ২০২৪ এর পরে কোন কোন দলের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন...
Fourth Pillar

Fourth Pillar | ২০২৪ এর পরে কোন কোন দলের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠল?

এই বিরাট লিস্টের মধ্যে একটা তত্ত্ব লুকিয়ে আছে, যা সবচেয়ে বেশি করে আলোচনা হওয়া উচিত

Follow Us :

বহু রাজনৈতিক দল ইতিহাস থেকে মুছে গেছে, গায়েব হয়ে গেছে। কোনওটা হঠাৎ উবে গেছে, কোনওটা সিনেমার ভাষায় স্লো ফেড আউট, আস্তে আস্তে মুছে গেছে। কেন? কারণও একরকম নয়, ধরুন কোনও দল দেশের রাজারাজড়াদের সমর্থনে গড়ে উঠেছিল, তাদের মাথায় ছিল আবার সেই এস্টেট অফ বিকানির, মাইসোর কিংডম বা নিজামি হুকুমত ফিরে আসবে, কিছুদিন পরেই এসব ছোটলোকেদের দল দেশ চালাতে পারবে না, এসব গণতন্ত্র দিয়ে দেশ চলে নাকি? এইসব ভেবে রাজনৈতিক দল তৈরি হয়েছিল, তারা নির্বাচনেও নেমেছিল, কিন্তু দেশের গণতন্ত্র ক্রমশ মজবুত হয়েছে, তারা উবে গেছে। আবার ধরুন কংগ্রেস ভেঙে বহু দল তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে এক টিমসি আর খানিকটা এনসিপি আর ওয়াইএসআর কংগ্রেস টিকে আছে, বাকিরা মুছে গেছে। আরেকটা টিএমসি ছিল, তামিল মানিলা কংগ্রেস, চিদম্বরমের দল, চিদম্বরম কংগ্রেসে এসেছেন, সেই দল আর নেই। প্রণববাবু রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন, এখন ভ্যানিশ, নেই। আবার কিছু দল নাম বদলে, ভোল পালটে এসেছেন, যেমন জনসংঘ, তারা এখন বিজেপি, জনসংঘ হারিয়ে গেছে, প্রায় নেই সেই হিন্দু মহাসভা। তো নির্বাচন আসে, অসংখ্য দল তৈরি হয়, দল উবে যায়, এটা নতুন কিছু নয়। আজ আমরা সেইরকম ক’টা দলের কথা বলব যা নাকি উবে যেতে পারে। সেই তালিকার এক্কেবারে প্রথমে আছে নেতাজি সুভাষ বসুর তৈরি ফরোয়ার্ড ব্লক। আজ দেশ জুড়ে তাদের কোনও অস্তিত্বই নেই, না আছে ভোট, না আছে এমএলএ, না আছে এমপি। দলের একটা সদর দফতর আছে, একটা কমিটি এখনও আছে, তারা বামফ্রন্টের সদস্য, কিন্তু ক্রমশঃ দুর্বল হচ্ছেন কারণ তাদের বাম জনভিত্তি কবেই ক্ষয়ে গেছে আর নেতাজির দলের যে জাতীয়তাবাদী জনভিত্তি থাকার কথা তা আপাতত নেই। ওনারা কংগ্রেসের বিরাট বিরোধী, ওনারা বিজেপির সঙ্গে যেতে পারবেন না, ওনারা তৃণমূলের হাত ধরতে রাজি নন, ওনারা বামফ্রন্টে আছেন কিন্তু নেই। সব মিলিয়ে এখনও খাতায় কলমে এসইউসিআই-এর মতো টিকে আছে এই দল কিন্তু তাও থাকবে না কারণ এসইউসিআই-এর সে স্ট্রং ক্যাডার বেস আছে তাও এনাদের নেই।

এরপরের দল হল এআইডিএমকে, জয়ললিতার নেতৃত্বে এই দল ক্ষমতার শিখরে পৌঁছেছিল, তিনি মারা যাওয়ার পরে দল দু’ ভাগ। এদিকে বিজেপি আস্তে আস্তে তাদের জনভিত্তি বাড়াচ্ছে আর দলের উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতারা হয় ডিএমকে না হলে বিজেপিতে যাচ্ছেন, এবারে সেই যাত্রায় গতি আসবে। কিন্তু এদের উবে যাওয়ার বিনিময়ে তামিলনাড়ুতে জমি পাবে বিজেপি। ওদিকে অসম গণ পরিষদ। একজন লোকসভায়, একজন বিধানসভায় আর অসমে ৭ জন এমএলএ আছেন কিন্তু আপাতত সবটাই বিজেপি নির্ভর, বিজেপি সমর্থন না দিলে এক দুজন এমএলএ-র বেশি কিছুই থাকবে না। অথচ এই দল অসমের ১৯৮৫, ১৯৯৬ দুটো টার্মে রাজ্য সরকার চালিয়েছে, প্রফুল্ল মহান্ত মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, এখন সবটাই খণ্ডহর হয়ে পড়ে আছে। ওদিকে ওয়াই এস আর রেড্ডির ছেলে জগন রেড্ডি কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে দল তৈরি করেই তাক লাগিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু উল্কার মতো উপরে ওঠার পরে উল্কার মতনই নামছে, ১৭৫ জনের বিধানসভায় এবারে ১১টা আসন পেয়েছে ওয়াই এস আর কংগ্রেস, আর সাংসদ মাত্র চার জন। কিন্তু খেলা তো এখানেই শেষ নয়, আরও ভাঙবে, খুব শিগগির এই দল ভাঙবে, আর সেই জায়গা কিন্তু কংগ্রেস পেতে চলেছে। আবার এদের এমপিদের ভাঙিয়ে নেওয়ার জন্য বিজেপিও সক্রিয়। শিরোমণি অকালি দল, দেশের সব থেকে পুরনো ধর্মভিত্তিক দল, হ্যাঁ, হিন্দু মহাসভারও আগে এই দল শিখ ধর্মকে সামনে রেখেই পথ চলা শুরু করেছিল, রাজ্য সরকারের ক্ষমতায় থেকেছে। এই দল থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে, কিন্তু সেই দল এখন অস্তিত্বের সংকটে, দুটো কারণে, এক হল বিজেপির সঙ্গে তাদের আঁতাঁত শিখরা মেনে নেয়নি, পঞ্জাবে হিন্দু-মুসলমান বিবাদ নেই কিন্তু হিন্দু-শিখ বিবাদ আছে, দুই হল শিখ ধর্ম নিয়ে আরও র‍্যাডিকাল সংগঠন শিরোমণি অকালি দলের রাজনৈতিক ভিত্তি কেড়ে নিচ্ছে। এবারে লোকসভাতে মাত্র একজন জিতেছেন এই অকালি দলের অন্যদিকে ফরিদকোটে শিখ র‍্যাডিকালদের একজন সরবজিৎ সিং খালসা জিতেছেন আর খদ্দর সাহিবে তো ইউএপিএতে গ্রেফতার শিখ র‍্যাডিকাল নেতা অমৃতপাল সিং জেলে বসেই জিতে গেলেন। মানে দু’ ধার থেকে অকালি দল পিছচ্ছে, কতদিন অস্তিত্ব ধরে রাখতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | অগ্নিমিত্রা পল স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা বলছেন

এরপর ওড়িশার বিজেডি, বিজু জনতা দল গড়ে উঠেছিল বিজু পট্টনায়কের লিগাসিকে ধরে, নবীন পট্টনায়ক, তাঁর ছেলের হাত ধরে, কিন্তু তিনি বয়স্ক। এক দক্ষিণের আমলা ভি কে পান্ডিয়ানকে উত্তরসূরি করার সিদ্ধান্ত ব্যাক ফায়ার করেছে, আর বিজেপির বিরুদ্ধে সেই বিরোধিতা না থাকা, কংগ্রেসের ভোট কাটা ইত্যাদির ফলে বিজেডি তার জমি দ্রুত হারাচ্ছে, লোকসভাতে একটা আসনও পায়নি বিজেডি আর বিধানসভাতে ৫১টা আসন পেয়ে বিরোধী দলে। এই দলের তবু উঠে আসার সম্ভাবনা আছে যদি তারা এক শক্তপোক্ত ঠিকঠাক উত্তরসূরি পায়, আর কংগ্রেসের সঙ্গে একটা বোঝাপড়াতে আসতে পারে, না হলে নবীন পট্টনায়কের পরে এ দল কার্যত অনাথ হয়ে পড়বে আর ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। এবারে শেষ দলটার আলোচনাতে যাই, বিএসপি, কাঁসিরামের তৈরি বহুজন সমাজ পার্টি। কেবল উত্তরপ্রদেশেই নয়, গোটা কাউ বেল্টে দলিত, হরিজনদের দল হয়ে উঠেছিল বিএসপি, তারপর ক্রমশ তার রাজনীতি সঙ্কুচিত হয়েছে, কাঁসিরামের পরে মায়াবতী এসেই মূলত সেই পতনকে অবশ্যম্ভাবী আর অনিবার্য করে তুলেছেন। একদা উত্তরপ্রদেশের শাসক, অন্যতম দল এবারে ৯.৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন, একটা আসনও পাননি, ওনাদের ভোট বাক্স ভাগাভাগি হয়ে গেছে, কিছুটা পেয়েছে কংগ্রেস, কিছুটা বিজেপি আর সামান্য কিছু সমাজবাদী দল। সব মিলিয়ে বিএসপির হাতি প্রকৃত অর্থেই কাদায় পড়ে আছে, এর থেকে বের হওয়া এই মুহূর্তে প্রায় অসম্ভব।

কিন্তু এই বিরাট লিস্টের মধ্যে একটা তত্ত্ব লুকিয়ে আছে, যা সবচেয়ে বেশি করে আলোচনা হওয়া উচিত, আঞ্চলিক দল, ছোট দলগুলোর এই উবে যাওয়া থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। খেয়াল করে দেখুন এক ওই ফরোয়ার্ড ব্লককে বাদ দিলে বাকি দল হয় বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। না হলে বিজেপির বিরোধিতা করেনি, দুটো ক্ষেত্রেই তাদের দল ভেঙেছে, দলের ভোটার বেস সরে গেছে, তাঁরা হেরেছেন, প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল বিএসপি, বিজেডি আর ওয়াই এস আর কংগ্রেস, এই তিন দলই বিজেপি সম্পর্কে এক ধরনের উদাসীনতা নিয়েই চলেছে, বিজেপি এদের উদাসীনতা থেকে উপকৃত হয়েছে আর সময় পেয়েই বিজেপি এক ধাক্কায় এদেরকে কাট টু সাইজ, এক্কেবারে বিলুপ্তির কিনারায় এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিজেপির তীব্রতম বিরোধিতা করা, বিজেপির সঙ্গে হেড অন কলিশনে যাওয়া ছাড়া ছোট দলের সারভাইভালের কোনও জায়গাই নেই। যারাই বিজেপি সম্পর্কে নরম হয়েছে, বিজেপি প্রথম চান্সেই তাদের শেষ করেছে, এটাই সারমর্ম। অনেকে বলবেন আপ-এর কথা বললাম না কেন? সত্যিই আপ যেভাবে উঠেছিল, কংগ্রেসকে ভেঙে উঠেছিল, দিল্লিতে পঞ্জাবে ক্ষমতাতেও এসেছিল, তারা দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেও শূন্য, পঞ্জাবে মাত্র ৩, তাদের ভোট শতাংশ কমেছে। কিন্তু তাদের এই হার তাদের মূল এজেন্ডাতে ধাক্কা লাগার ফলেই হয়েছে। এক দুর্নীতি বিরোধী স্ট্যান্ড পয়েন্ট থেকেই তারা রাজনীতি শুরু করেছিল, সেই দুর্নীতি বিরোধী আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল কংগ্রেস, আজ সেই কংগ্রেসের সঙ্গে আংশিক হলেও সমঝোতা, দুই তাদের নিজেদের দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের গায়ে দুর্নীতির অপবাদ। এই দুই কারণে তারা তাদের জমি হারাচ্ছে, কংগ্রেস বাড়বে, আপ জমি হারাবে, এবং এই প্রসেসে তাদের এক অংশ আবার বিজেপি মুখো হবে, অন্য অংশটা কংগ্রেসের দিকে যাবে, সেই যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। আপের ভোটারেরা কনফিউজড, আর কোথায় যেন একটা কিছু বেসুরো বাজছে, কোথাও যেন একটা বোঝাপড়ার গন্ধ আসছে, এখনই বলেই দেওয়া যাবে না যে বিজেপি-আপ বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই কেজরিওয়াল জামিন পেয়ে বেরিয়ে এলেন, এখনই সেটিং তত্ত্ব বাজারে ছেড়ে দিতে আমি রাজি নই কিন্তু পরবর্তীতে আপের কাজকর্ম সেদিকেই গেলে আমি অবশ্য অবাক হব না।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Iran-Israel | ফের যু/দ্ধ শুরু? এ কী করল ইজরায়েল? এবার পাল্টা ত/ছন/ছ করবে ইরান
00:00
Video thumbnail
Weather Update | শুরু হবে প্রবল বৃষ্টি, ভাসবে কোন কোন এলাকা? জেনে নিন বড় আপডেট
00:00
Video thumbnail
Digha | Rath Yatra | আজ রথ, এই মুহূর্তে দিঘায় কী অবস্থা? দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
03:03:38
Video thumbnail
Rath Yatra | Digha | আজ জগন্নাথের রথযাত্রা, দেখুন দিঘা থেকে সরাসরি
02:33:32
Video thumbnail
Puri | Rath Yatra | আজ জগন্নাথের রথযাত্রা দেখুন পুরী থেকে Live
02:30:02
Video thumbnail
Digha | Rath Yatra | দিঘায় কীভাবে রথে তোলা হল জগন্নাথকে? দেখুন Live আপডেট
06:46
Video thumbnail
Iran-Israel | ফের যু/দ্ধ শুরু? এ কী করল ইজরায়েল? এবার পাল্টা ত/ছন/ছ করবে ইরান
08:05
Video thumbnail
The Heritage School | ২৪তম বর্ষে পদার্পণ দ্য হেরিটেজ স্কুল, শুভ সূচনা রজতজয়ন্তী বর্ষের
01:05
Video thumbnail
Rath Yatra | বাংলাজুড়ে রথযাত্রা, একনজরে দেখুন রথের ছবি
15:32

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39