Wednesday, June 25, 2025
HomeScrollঅদিতির সঙ্গে সাদা কালো | লেনিন, লেলিন, লেলিল
Aditir Songe Sada Kalo

অদিতির সঙ্গে সাদা কালো | লেনিন, লেলিন, লেলিল

ঋত্বিক ঘটকের ওই ছবি ‘আমার লেনিন’-এর উপর এই কি প্রথম ঝাড় নেমে এল?

Follow Us :

যেমনটা রোজ করে থাকি, একটা বিষয়ের অবতারণা আর সেই বিষয়কে নিয়ে অন্তত দুটো ভিন্ন মতামতকে এনে হাজির করা, যাতে করে আপনারা আপনার মতটাকে শানিয়ে নিতেই পারেন আবার আপনার বিরুদ্ধ মতটাকেও শুনে নিতে পারেন। আজ শুরুতে একটা কবিতা শোনাই? অন্নদাশঙ্কর রায় সেই কবে লিখে গেছেন–

যেখানে যা কিছু ঘটে অনিষ্টি সকলের মূলে কমিউনিষ্টি।

মুর্শিদাবাদে হয় না বৃষ্টি গোড়ায় কে তার? কমিউনিষ্টি।

পাবনায় ভেসে গিয়েছে সৃষ্টি তলে তলে কেটা? কমিউনিষ্টি।

কোথা হতে এলো যত পাপিষ্ঠি নিয়ে এলো প্লেগ কমিউনিষ্টি।

গেল সংস্কৃতি, গেল যে কৃষ্টি ছেলেরা বললো কমিউনিষ্টি।

মেয়েরাও হতে পায় কী মিষ্টি। সেধে গুলি খায় কমিউনিষ্টি।

যেদিকে পড়ে আমার দৃষ্টি সেদিকেই দেখি কমিউনিষ্টি।

তাই বসে বসে করছি লিষ্টি এ পাড়ার কে কে কমিউনিষ্টি।

আরও পড়ুন: অদিতির সঙ্গে সাদা কালো | নির্মলা মাসির উজ্জ্বলা যোজনা

সেই কমিউনিস্টদের মধ্যে এক্কেবারে আগমার্কা সিপিএম এখন শূন্য, তা নিয়ে কত খিল্লি, কত রগড়। অথচ কেলোটা একবার দেখো, এখনও লেনিন দেখলে সিপিএম মনে করে আঁতকে ওঠেন ‘তিনোমূল’ দাদারা। তাঁদের কাছে লেনিন, ঋত্বিক, জ্যোতি বসু, মহম্মদ সেলিম আর সিপিএম একই ব্র্যাকেটে রাখা শত্রু, লাল হটাও দেশ বাঁচাও প্রকল্পের সেসব লোকজনেদের মনেই নেই এখন এমনকী দিদিমণির সিংহভাগ বক্তৃতার সিংহভাগ জুড়ে থাকে বিজেপির বিরোধিতা, শেষ কবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে লাল হটাও দেশ বাঁচাও স্লোগান শুনেছেন বলুন তো? কেন শোনেননি কারণ সংসদীয় রাজনীতিতে আপাত শত্রুই শত্রু, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোদি–শাহকে ছেড়ে সুজন সেলিমকে আদত টার্গেট বানানোটা বোকামি, এটা দিদিমণি জানেন কিন্তু তাঁর বোক্কা ভাইয়েরা জানে না। জানার অবশ্য কথাও নয়। নাকতলার এক স্কুলে এক ঘরে ঋত্বিক ঘটকের ‘আমার লেনিন’ আর ‘কোমলগান্ধার’ দেখানো হবে। উরিব্বাস লেনিন? জ্বলে গেছে সবকিছু, গিয়ে স্কুলের হেডুকে কড়কে দিয়েছেন, সে কড়কানির ভাষা আমরা জানি, এই একইভাবে বছর কুড়ি আগে অনেক হেডু এই কড়কানি শুনেছে, ব্রিগেডে মিটিং, আজ হাফ ডে, চললাম, লাল সেলাম। লোকজন কি খুব পাল্টেছে? সেই লোকেরাই আছে, এখন কেবল শিবির বদল। আর একটু নতুন লব্জ, সময়টা তো সময় রায়নার। তো সেই হেডুর তো শর্ট সার্কিট, তিনি জানিয়ে দিয়েছেন স্কুলে লেনিন বন্ধ, ঋত্বিক চক্রবর্তী, ঋত্বিক ঘটক কিচ্ছুটি চলবে না। ব্যস, কোনও এক পশ্চাদপক্ক সাংবাদিক লিখে দিয়েছে, হেডমাস্টার পারমিশন দিয়ে ফিরিয়ে নিয়েছে, তৃণমূলের নেতাদের চাপে। নাও ঠ্যালা, তিনি আবার বিবৃতি দিয়েছেন কই, কেউ তো আমাকে চাপ দেয়নি। আমি বিনা চাপেই ওই সংস্থা যারা নাকি ওই লেনিনবাজি করছিল, তাদের জানিয়ে দিয়েছি, ওসব এখানে হবে না। সেম ওল্ড স্টোরি, মাস্টারমশাই আপনি কিছুই দেখেননি। তো যাই হোক এলাকাতে শান্তি ফিরেছে, পাড়ার এক প্রবীণ বাসিন্দা, নাম পুলিন ঘোষাল এই শান্তি ফিরে আসার খবর জানিয়েছেন।

এবারে আসুন একটু অন্য দিক থেকেও বিষয়টা দেখা যাক। ঋত্বিক ঘটকের ওই ছবি ‘আমার লেনিন’-এর উপর এই কি প্রথম ঝাড় নেমে এল? এ ছবি রিলিজই হত না, সেই ১৯৭০ এ সেন্সর বোর্ডই আটকে দিয়েছিল এই ছবিকে। তো ঋত্বিক পরিচিত এক আমলা এবং এক ব্যবসায়ীকে কোনওক্রমে গিয়ে ধরেন ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসের আমলা, পিএন হাকসরকে, তিনি তখন ইন্দিরা ঘনিষ্ঠদের তালিকায় এক্কেবারে উপরে, আর তখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সচিব, ৭১-এ সচিব পদ উঠে যায়, উনি মুখ্যসচিব হয়েছিলেন।  তো তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে একটা নোট পাঠালেন, যার শুরুতেই লেখা ছিল এক আধখ্যাপা মানুষ লেনিনের উপরে একটা ছবি বানিয়েছে যা নিয়ে ভারি বিতর্ক শুরু হয়েছে, ছবিটা লেনিনের জন্ম শতবার্ষিকীতে বানানো, বহু মানুষ এর আগে আইজেনস্টাইন, পুদোভকিন, রসেলিনি এবং অন্যান্যদের তৈরি এরচেয়ে অনেক বেশি প্রোভোকেটিভ, উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন সিনেমা দেখেছেন, এবং তাতে সমাজের রাষ্ট্রের কিছুই হয়নি, বাণিজ্যিক সফলতাও পায়নি। আমি নিজে এই ছবি দেখেছি, এই ছবি দিয়ে বিপ্লব হবে তার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। তিনি তারপরে লিখেছিলেন এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিচালক, ততধিক অসহায় এক প্রযোজক এই ছবিটা সোভিয়েত ইউনিয়নকে বেচে কিছু টাকা রোজগার করার চেষ্টায় আছেন, ভাবুন একবার আমরা লেনিন রফতানি করব সোভিয়েত রাশিয়াতে, সোভিয়েত সেটা নিতে পারবে তো? এই এক ছবির জন্য এত সময় নষ্ট না করে বিতর্ক না চালিয়ে একটা এ মার্কা দিয়ে ছেড়ে দিলেই তো হয়। আর ওই জমি দখলের ছোট্ট একটা অংশ বাদ দিয়েই তা ছেড়ে দেওয়া যায়।  এই নোট ইন্দিরা গান্ধী পড়ে এক মুহূর্ত দেরি না করে, ওই জমি দখলের ছোট্ট ফুটেজটি বাদ দিয়ে ছবিকে সেন্সর সার্টিফিকেট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিন বাধা দেওয়ার পরে ছাড় পেয়েছিল, আজ বাধা দেওয়ার পরে ছাড় পায়নি এটাই তফাৎ। তো জানতে গিয়েছিলাম ওই এলাকার গুপিদার কাছে, আমার একমাত্র তৃণমূলের সোর্স, গুপিদা বলল, লেলিল নিয়ে ব্যবসা চলছে আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি বললাম লেলিন নয়, লেনিন, ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন। আমি তাই বলছি, লেলিল, আমি নস্যি নিই তুই জানিস না?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Donald Trump | NATO বৈঠকে ট্রাম্পকে চাইছে ইউরোপ, বিশ্ব রাজনীতিতে এ কোন খেলা?
00:00
Video thumbnail
Weather Update | প্রবল দুর্যোগের পূর্বাভাস, ভাসবে কোন কোন জেলা? দেখুন বড় আপডেট
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে আগ্রহ ট্রাম্পের, আবার কোন ফন্দি?
00:00
Video thumbnail
Iran | মা/রের চোটে ছালচামড়া গুটিয়ে গেল ইজরায়েলের, পাশে নেই ট্রাম্প,মাথা খারাপ হয়ে গেল নেতানিয়াহুর?
00:00
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Iran | কীসের যু/দ্ধ বিরতি? আরও মা/রব, জানিয়ে দিলেন খামেনি,কী করবে ইজরাইল?
03:12:26
Video thumbnail
Donald Trump | NATO বৈঠকে ট্রাম্পকে চাইছে ইউরোপ, বিশ্ব রাজনীতিতে এ কোন খেলা?
09:24
Video thumbnail
B2 Spirit | যুদ্ধে আমেরিকার বিপরীত মেরুতে তুরস্ক, বিমান হানার পাইলটদের মন মজেছে টার্কি স্যান্ডউইচে
03:58:46
Video thumbnail
Weather Update | প্রবল দুর্যোগের পূর্বাভাস, ভাসবে কোন কোন জেলা? দেখুন বড় আপডেট
02:51
Video thumbnail
Space News | রাকেশ শর্মার পর প্রথম কোনও ভারতীয়র মহাকাশে পাড়ি, দেখুন ভিডিও
01:50