হুগলি: ভুয়ো চিকিৎসা করার অভিযোগ। একদিন-দুদিন নয়। ২২ বছর ধরে রমরমিয়ে চলছিল চেম্বার। আয়ুর্বেদিক ডাক্তার (Hoogly Doctor) হয়ে অ্যালোপাথি চিকিৎসা (Allopathic Medicine)। এলাকার একটি ওষুধের দোকানে দীর্ঘদিন ধরে চেম্বারে বসে রোগী দেখতেন নিতাই সেনাপতি। নিজেকে এমডি পরিচয় দিয়ে অ্যালোপ্যাথি ওষুধও লিখে দিতেন। রোগী প্রতি ৪০০ টাকা করে ভিজিট নিতেন তিনি, যা ২৫০ টাকা তার ও ১৫০ ওই ওষধের দোকানদারের। ওষধে ইনকাম অবশ্য আলাদা। তবে প্রেসক্রিপশনে দেখেই হত সন্দেহ। অবশেষে এত বছর পর সামনে এল আসল সত্যিটা। অভিযোগ দায়ের হুগলি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে।
হুগলির পাণ্ডুয়ার ঘটনা। কালনা মোড়ের কাছে রয়েছে “চৌধুরী মেডিক্যাল” নামক এক ওষধের দোকান। তাতেই রয়েছে নিতাই সেনাপতির চেম্বার। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে পান্ডুয়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মঞ্জুর আলমের কাছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগ ছিল, যে প্রেসক্রিপশনে তিনি ওষুধ লিখে দিতেন, তার কোনোটায় রেজিষ্ট্রেশন নম্বর আছে,আবার কোনোটায় নেই। ‘এমডি’ বলে উল্লেখ থাকলেও তিনি কিসে MD তার কোনরকম তথ্য নেই। সেই প্রেসক্রিপশনে দেখেই বাড়তে থাকে সন্দেহ।
আরও পড়ুন: সাতসকালে স্বরূপনগরে শুটআউট, মৃত ১
পাণ্ডুয়ার BMOH, পাণ্ডুয়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ও ৩জন স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষদের সঙ্গে নিয়ে সটান পান্ডুয়া কালনা রোড সংলগ্ল চৌধুরী মেডিক্যালে ওই চিকিৎসকের চেম্বারে হাজির হন। চিকিৎসককে সব কাগজ নিয়ে পাণ্ডুয়া ব্লক অফিসে দেখা করতে বলেন। সেই মত গত সোমবার রাতেই চেম্বার শেষ করে ব্লক অফিসে গিয়ে দেখা করেন ওই চিকিৎসক। তাঁর কাগজপত্র দেখে ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর চক্ষু চরকগাছ হয়ে যায়। যে আদতে একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। তা সত্ত্বেও নিজেকে এমডি লিখে দিনের পর দিন অ্যালোপ্যাথি ওষুধ দিয়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করে আসছিলেন। এই সব দেখে ওই চিকিৎসককে মুচলেকা দিতে বলা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি আর অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করবেন না।
পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ নিশাপতি রক্ষিত বলেন, “আসলে উনি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। ৪০০ টাকা করে ভিজিট নিতেন। দেড়’শ টাকার ওষুধের দোকানে দিতেন। উনি বেআইনিভাবে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করছিলেন। পরে ওঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটা আমরা ভাবছি। প্রয়োজনে থানায় অভিযোগও করা হতে পারে। কারণ বহু মানুষকে ঠকিয়েছেন উনি।” তবে নিতাই সেনাপতি নামে ওই চিকিৎসকের দাবি, নিয়মের বাইরে তিনি কিছু করেননি। তিনি বলেন, “আমার যা যা কাগজ ছিল তা দেখিয়েছি। আমি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাই করব।” একজন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হয়ে কেন দিনের পর দিন অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক বলেন, “আমাদের কাউন্সিলের নির্দেশ আছে শুধু ৬৭ টা ওষুধ লেখা যায়।” তাই করেছি অন্যদিকে পান্ডুয়া চৌধুরি মেডিক্যাল হল নামক ওই ওষধের দোকানদার ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে চাননি।
অন্য খবর দেখুন