কলকাতা: মঙ্গলবার খিদিরপুরের অগ্নীকাণ্ডে (Khidirpur Bazar Fire) ক্ষতিগ্রস্ত বাজার যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেখান থেকে অগ্নীকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানালেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর অভিযোগ করেন, ‘খিদিরপুরে মেন মেড অগ্নিকাণ্ড। পরিকল্পনামাফিক আগুন লাগানো হয়েছে’। কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ও দামী জমিগুলিতে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে সেগুলি গরিব ব্যবসায়ীদের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে প্রোমোটারদের হাতে তুলে দিচ্ছে সরকার। নাম করে ফিরহাদ হাকিম ও সুজিত বসুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড রবিবার গভীর রাতে খিদিরপুরে শতাব্দীর প্রাচীন বাজারে পুড়েছে শতাধিক দোকান। সোমবার দুর্ঘটাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই আগুনে ভস্মীভূত খিদিরপুর মার্কেট পরিদর্শন করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। খিদিরপুরে আগুন নিয়ে শুভেন্দু বলেন, রাজ্য সরকার পরিকল্পনা করে জমিতে আগুন লাগাছে। রাজ্য সরকারকে নিশানা করে তিনি আরও বলেন, ‘আলিপুর সেন্ট্রাল জেল, চিড়িয়াখানা সব বিক্রি করে দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। আর যেখানে আগুন লাগছে, সেখানেই পরদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন জায়গা ঠিক হয়েছে, এক লাখ টাকা দিলাম। কিন্তু পরে ওই জমিতে গড়ে উঠছে শপিং মল। গরিব মানুষদের তাড়িয়ে দিয়ে বড় বড় প্রমোটারদের টাকা কামানোর বন্দোবস্ত হচ্ছে। খিদিরপুরের জমি বেচে দিয়েছে সরকার।’
আরও পড়ুন: খিদিরপুর বাজারে বিধ্বংসী আগুন, ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী, কী কী নির্দেশ
শুভেন্দু দাবি করেন, খিদিরপুরে আগুন লাগার ঘটনার পিছনে রয়েছে ষড়যন্ত্র। তাঁর কথায়, রাত ১টার সময় আগুন লাগে, অথচ দমকল আসে ভোর ৪টেয়। মুখ্যমন্ত্রী সব জানতেন, কিন্তু আগুন নেভাতে নয়, পুলিশ ও দমকলকে বলেছেন ঘর ভাঙতে। তাঁর দাবি, এটা ম্যান মেড ফায়ার। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পনামাফিক আগুন লাগিয়ে গরিব মানুষদের উচ্ছেদ করার ছক কষা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের সিস্টেম সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। প্রশাসন নীরব। জমি ও গরিব ব্যবসায়ীদের জীবিকা রক্ষার কোনও সরকারি উদ্যোগ নেই। টালিগঞ্জ-ঢাকুরিয়ার মতো জায়গাও বেচে দেওয়া হচ্ছে। চারদিকে শুধু শপিং মল, ফ্ল্যাট, আর গরিবের উচ্ছেদ। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা যাতে কোনওভাবেই নিজেদের জায়গা না ছাড়েন, সেকথা বারবার এদিন বুঝিয়ে যান শুভেন্দু। তিনি আরও বলেন, হকের দাবিতে লড়াই হবে একসঙ্গে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু।
উল্লেখ্য, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্থায়ী দোকানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার হবে। শুধু তাই নয় সরকারের তরফে বাজার তৈরি করে দেওয়ার হবে বলে জানান। মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ১ লক্ষ টাকা ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ হাজার টাকা করে কাচামাল কেনার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
অন্য খবর দেখুন