Friday, October 31, 2025
HomeScrollSIR আতঙ্কে বৃদ্ধের আত্মহত্যা, রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী
Mamata Banerjee

SIR আতঙ্কে বৃদ্ধের আত্মহত্যা, রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী

SIR আতঙ্কই ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর পিছনে প্রধান কারণ!

কলকাতা: নাম নেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (Voter List)। তবে আগে-পরে বহুবার। ভোট দিয়েছেন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে। তবুও SIR-এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে ফিরতে হতে পারে বাংলাদেশে (Bangladesh)। এমন আতঙ্কে বৃহস্পতিবার বীরভূমের (Birbhu) ইলামবাজারে ৯৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। ঘটনা রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পরিবারের দাবি, এ আতঙ্কই ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর পিছনে প্রধান কারণ।

এই ঘটনার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে জানিয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলা এসব ঘটনাকে তিনি ‘মানবতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে দেখেন ও ঘটনার জন্য সরাসরি বিজেপি-কে দায়ী করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষকে আত্ববিশ্বাস জোগাতে বলেছেন, “মা-মাটি-মানুষের সরকার পাশে রয়েছে” এবং সতর্ক করে বলেছেন, “চরম কোনও পদক্ষেপ নেবেন না।” একই সাথে তিনি প্রকাশ্যভাবে বলছেন, বাংলায় কারও উপর এনআরসি/বহিরাগত হিসেবে লেবেল পড়তে দেবেন না।

আরও পড়ুন: ফের শহরে টাকার পাহাড়! তারাতলায় ব্যবসায়ীর অফিসে ইডির হানা, উদ্ধার প্রায় ৩ কোটি টাকা

প্রসঙ্গত, ২৮ অক্টোবর থেকে রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এসআইআর-জাতিত আতঙ্ককে কেন্দ্র করে একাধিক মৃত্যু-ঘটনা ঘটেছে। একই অঙ্গভাগের অন্যান্য ঘটনাগুলোর মধ্যে আছে, পানিহাটির প্রদীপ করের আত্মহত্যা এবং কোচবিহারে খায়রুল শেখের নাম ভোটার তালিকায় ভুল থাকার আশঙ্কায় আত্মহত্যার চেষ্টা। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতাই রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা তৈরি করেছে।

মুখ্যমন্ত্রীর পোস্টে প্রশ্নও তুলেছেন, “এধরনের অনিবার্য ঘটনা হলে তার দায় কে নেবে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নাকি বিজেপি ও তার সঙ্গীরা?” এছাড়া তিনি রাজ্যের নির্বাচন কমিশনকেও সরাসরি না উল্লেখ করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। মমতা লিখেছেন, বাংলায় সোজা পথে বা বাঁকা পথে এনআরসি হতে দেবেন না এবং একজন নাগরিককেও বহিরাগত তকমা দিতে দেবেন না। এমন কিছু হলে বাংলা “শেষ রক্তবিন্দু” পর্যন্ত লড়বে।

রাজ্যের শীর্ষ পর্যায়ে এই মন্তব্যের পর কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক মহল ও বিরোধী শিবিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্ব দেশের রাজনীতিক শিবিরকে অভিযুক্ত করায় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে ঘটনাগুলিকে স্থিতিশীল রাখতে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান করা হয়েছে।

স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইলামবাজারের ঘটনায় তদন্ত চলছে। নিহত বৃদ্ধের পরিবারের বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে কোনও রকম তথ্য-দস্তাবেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরও এই ঘটনাগুলো নিয়ে অবিলম্বে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানানো হয়েছে। এসআইআর বাস্তবায়নের কথা বললে নির্বাচন সংক্রান্ত বিশেষ পরিকাঠামো ও প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে ভোটার তালিকার ত্রুটি সংশোধন। কিন্তু বাস্তবে কিছু নামচ্যুতির অভিযোগ, তথ্যগত বিভ্রান্তি ও যোগাযোগ ত্রুটির কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এমন অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

বিভিন্ন মানবাধিকার দল ও নাগরিক সংগঠনও এই ঘটনাগুলোকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং প্রশাসনিক নলেজ-শেয়ারিং ও গ্রাম্য পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির দাবি করেছে। তারা বলছে, এসআইআর কার্যক্রম চালু থাকলেও প্রত্যেক নাগরিককে সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য ও ঠিকঠাক সহযোগিতা দিতে হবে যাতে অনর্থক আতঙ্ক ও হতাহতের ঘটনা না ঘটে। রাজ্যের এই তাজা ঘটনা এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া দেশজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আর প্রশাসনিক ব্যাখ্যা পাওয়া মাত্রই পরবর্তী সংবাদ শিক্ষণীয়ভাবে আপডেট করা হবে।

দেখুন আরও খবর: 

Read More

Latest News