গান্ধীনগর: নিকাশি নালা থেকে উদ্ধার হল দুই সাফাই কর্মীর মৃতদেহ৷ মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের৷ তবে ওই সাফাই কর্মীর দেহ মেলেনি৷ বুধবার নিকাশি নালা পরিষ্কারে নেমেছিলেন এক শ্রমিক৷ তাঁকে খুঁজতে গিয়ে ভেতরে আটকে পড়েন আরও দু’জন৷ বৃহস্পতিবার রাত অবধি দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার হলেও তৃতীয় জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, নিখোঁজ ব্যক্তির মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছে৷ কিন্তু মৃতদেহ মেলেনি৷ পুলিশের অনুমান, নালার ভেতরে থাকা বিষাক্ত গ্যাস শরীরে ঢুকে মৃত্যু হয়েছে তিন শ্রমিকের৷
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে আমেদাবাদের বোপালে৷ ওই ঘটনার পরই নির্মাণ সংস্থা যোগী কনস্ট্রাকশনের মালিক সাকেত দীপক পটেল, সুপারভাইজর হিম্মত বালু পটেল-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে আমেদাবাদ পুলিশ৷ হিম্মত বালু পটেল ধরা পড়লেও বাকিরা পলাতক৷ আমেদাবাদ আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি জানিয়েছে, তিন বছর আগে বোপাল-ঘুমা অংশে নিকাশি নালার পাইপ লাইন বসানোর বরাত পেয়েছিল যোগী কনস্ট্রাকশন৷ তারা আরেকটি সংস্থাটি দিয়ে কাজটি করায়৷ কয়েক মাস আগে পাইপ লাইন বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হলেও ১০ দিন আগে নিকাশি নালা চালু হয়৷ তার পরেও লাইনে কিছু মেরামতির কাজ বাকি ছিল৷ সাফাই কর্মীরা সেটা দেখতে ম্যানহোলে ঢুকেছিল৷ হয়তো তার পর কোনও কারণে জ্ঞান হারায়৷ এইউডিএ-র তরফে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷
আরও পড়ুন: কত জন ভারতীয় এখনও আটকে আফগানিস্তানে জানে না কেন্দ্র
ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশও৷ জানতে পেরেছে, প্রথমে ম্যানহোলের ভেতর একজন শ্রমিক নেমেছিলেন৷ সে আসছিল না দেখে বাকি দু’জন পাইপের ভেতর প্রবেশ করে৷ প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, বিষাক্ত গ্যাস শরীরে প্রবেশ করে তাঁদের৷ সেখান থেকে মৃত্যু হয় তিন জনের৷ তিনজনকে উদ্ধারে নামে দমকল৷ পাইপ লাইনের ২৫ ফুটের ভেতর থেকে দুটি দেহ উদ্ধার হয়৷ কিন্তু তৃতীয়জনের কোনও হদিশ মেলেনি৷ যে দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে তাঁরা হলেন রাজেশ কানু মেদা এবং ভরত মানু মেদা৷ সন্দীপ কানু মেদা নামে তৃতীয় শ্রমিকের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
আরও পড়ুন: সুরা প্রেমীদের জন্য সুখবর! সেপ্টেম্বরেই কমছে বিদেশি মদের দাম
এই ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন দলিত সমাজকর্মী কান্তিলাল পারমার৷ তাঁর দাবি, খোলা নর্দমা পরিষ্কারের কাজ আইন বিরুদ্ধ৷ সুপ্রিম কোর্ট এবং গুজরাত হাইকোর্টেরও রায় রয়েছে৷ গুজরাত ম্যানহোল কামদার ইউনিয়নের সভাপতি শিবকুমার জানিয়েছেন, ১৯৯৩ সাল থেকে এএমসি এলাকায় খোলা নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে ৭৫ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, খোলা নর্দমা পরিষ্কারে নেমে গত পাঁচ বছরে কোনও শ্রমিকের মৃত্যু হয়নি৷