দিলীপ ঘোষ এক মজার কথা বলেছেন, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে অমিত শাহ আমাদের টার্গেট দিয়েছিলেন ২৫ টা আসনের , আমরা ১৮ টা আসন এনে দিয়েছিলাম, এবারে বলেছেন ৩৫ টা আসনের টার্গেট দিয়েছেন, কিছু না হলেও তো অন্তত ৩০ টা আসন তো আমরা পাবোই। দিলীপ ঘোষ সংসদের আসন কে খানিকটা হাতের মোয়ার মতনই ভাবছেন, হাত ঘুরিয়েই এনে দেবেন। গজনী ছবিতে শর্ট টার্ম এমোরি লসের মতনই তিনি ভুলে মেরে দিয়েছেন ২০২১ এর কথা, যে বিধানসভার নির্বাচনে এই ছোটা মোটা ভাই অমিত শাহ বলেছিলেন অব কি বার ২০০ পার, তো শুভেন্দু, দিলীপ সুকান্ত ব্রিগেড কত এনেছিলেন? ৭৭। সেই ৭৭ এরও কত অবশিষ্ট আছেন তাও ওনারা জানেন না। বিজেপি তেই এখনও বসে আছেন এমন বেশ কয়েকজন নেতা দলের ভেতরের পরিকল্পনা, গোপন রিপোর্ট, অমিত শাহের নির্দেশের খুঁটিনাটি তুলে দিচ্ছেন তৃণমূল কিছু নেতার হাতে, সাংবাদিকদের হাতে। সেইরকমই এক রিপোর্টে সোশ্যাল মিডিয়া, সংখ্যালঘু ভোটের বিভাজন ইত্যাদি নিয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গ্যালো। এমনিতেই বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি ব্যাপারে অন্যদের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে আছে, তাদের সোশ্যাল মিডিয়া সেল গোয়েবলস কে ছবার কিনে ১০ বার হাটে বেচে দেবার ক্ষমতা রাখে। সেই সোশ্যাল মিডিয়া সেল কে আলাদা করে অ্যাকটিভেট করারও দরকার নেই, সে টোয়েন্টি ফোর ইনটু সেভেন কাজ করে চলেছে। অমিত শাহ তিনজন নিজের লোক এ রাজ্যে পাঠিয়েছেন, তাঁরা সারাক্ষণ ইনপুট দিয়ে চলেছে, প্রফেসনাল এজেন্সি নিয়োগ করা হয়েছে, তারাও ইনপুট দিচ্ছে। বাংলা থেকে তাদের আসন না বাড়াতে পারলেও অন্তত আগের বারের আসন পেতেই হবে, এটাই লক্ষ্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা রিপোর্ট তাতে ৫ টা আসন পাবোই বলার পরে বাকি আসন নিয়ে সন্দিহান বিজেপি হাইকমান্ড। আর সেই জন্যই কিছু নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে আবার অমিত শাহ, সেটাই বিষয় আজকে, অমিত শাহ অ্যান্ড কোম্পানির গোপন প্ল্যানিং।
আপনি যদি এই রেজিমের মানে মোদি শাহ রেজিমের বিরোধী হন, তাহলে খেয়াল করেছেন কি যে আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্টের রিচ হঠাৎ করেই কমে গেছে? কেবল তাই নয় এক সঙ্গে এক বিরাট ট্রোল বাহিনী এসে জুটে যাচ্ছে আপনার যে কোনও পোস্টের সঙ্গে সঙ্গে, তারা কোনও তর্ক করছে না, কোনও যুক্তি দিচ্ছে না, পালটা কোনও বক্তব্যও লিখছে না পোস্ট করছে না, তারা কেবল নোংরা গালিগালাজ করছে, অকথ্য গালি গালাজ। হ্যাঁ এটা শুরু হয়েছে তাও মাস খানেক হল, বিশ্বাস হচ্ছে না? আপনি আমার এই অনুষ্ঠানের ইউ টিউব লিঙ্ক খুলুন, বুঝতে পারবেন। অন্যদিকে সেই সব ধামাধরা কুনকি হাতিদের পোস্টের ভিউইং বাড়ছে, বিরাট ভাবে বাড়ছে। এদের অনেকেই বিভিন্ন কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। অনেকেই বিভিন্ন সুত্রে বিরাট টাকাও পাচ্ছেন, অনেকে আবার জামিনে জেলের বাইরে আছেন, আবার যাতে জেলে না যেতে হয় তার জন্য কেউ কেউ বিজেপির হয়ে লিখছেন, কেউ কেউ বিজেপি বিরোধীদের বিরুদ্ধে জেহাদ শুরু করেছেন, ভাবখানা হল সাংবাদিকতা করছেন, আসলে কিন্তু এই এঁরা হলেন আসছে লোকসভা প্রচারে আর এস এস – বিজেপির ফুট সোলজার। এনাদের সঙ্গে অমিত শাহ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের রোজকার যোগাযোগ আছে, বিভিন্নভাবে এনাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ভাইরাল করানো হচ্ছে, ক মাস আগে যাঁদের ইউ টিউবে একহাজার জন দর্শকও জুটতো না এখন তাদের ভিউয়ারশিপ হু হু করে বাড়ছে। সেই মিডিয়া ইনফ্লুয়েনসিয়ারদের কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করলেন অমিত শাহ। অর্থাৎ এই বাংলায় বিজেপির হয়ে সোশ্যাল মিডিয়া আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠবে। আরেকটা কাজ শুরু হয়েছে, সেই স্পেশ্যাল প্ল্যানিং এ নাকি বিরাট টাকা খরচও করা হচ্ছে, সব্বাই জানে আমাদের এই বাংলায় সংখ্যালঘু ভোট, বিশেষ করে মুসলমান ভোট বিরাট ভূমিকা নেয়, তাঁদের সমর্থনে বদলে যায় নির্বাচনের পাটিগণিত আর সেই সমর্থন অনেক কিছু করার পরেও তৃণমূলের দিকে আছে, আবার যা এখনও খবর তাতে তৃণমূল আর কংগ্রেস জোট হচ্ছে, সেক্ষেত্রে এই সংখ্যালঘু ভোট আরও একজোট হয়ে বিজেপির বেশ কিছু আসন কেড়ে নেবে। তাই সেখানেও ভাঙন ধরানোর পরিকল্পনায় এক প্রাক্তন মুসলিম আই পি এস অফিসার, কয়েকজন মুসলমান বুদ্ধিজীবিরা চারতারা হোটেল বুক করে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছেন, ডাকা হচ্চে বিশিষ্ট মুসলমান বুদ্ধিজীবিদের যাতে সবাই মিলে একটা ফ্রন্ট তৈরি করে মুসলমান ভোটকে ভাঙতে পারে, হ্যাঁ টাকা আসছে সেখান থেকেই, তাঁদের কাছ থেকেই যাঁরা এই সংখ্যালঘু ভোট বিভাজন থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধে পাবেন। হ্যাঁ দলের ভেতর থেকেই এই তথ্য উঠে আসছে। ইডি, সি বি আই ইত্যাদিকে দিয়ে যা যা করানোর করা হয়েছে, আপাতত তাদের আর বেশি কিছু করার নেই, মিডিয়া মালিকরা হাতে, তাদের প্রচার যাতে আরও ভালো করে হয় বা হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য তিনজনের কমিটি বানানো হয়েছে, সংখ্যালঘু ভোট ভাঙানোর জন্যে যা যা করার তা করা হচ্ছে, আব্বাস কেও সবকটা আসনে প্রার্থী দেবার, প্রচার করা রেস্ত জোগানোর ব্যবস্থা হচ্ছে আর সোশ্যাল মিডিয়াতে এ বাংলার যে যে ইউটিউবাররা আছেন, যাদের দিয়ে এই কাজ করানো সম্ভব, টাকা দিয়ে, ভয় দেখিয়ে দুই অস্ত্রই ব্যবহার করে তাদেরকে কাজে লাগানো হচ্ছে। অমিত শাহের নেতৃত্বে বঙ্গ বিজেপির টার্গেট বাংলার ৪২ টা লোকসভা আসনের ৩৫ টা, সেটা মাথায় রেখেই প্রস্তুতিতে নেমেছে বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু এই ৩৫ টা আসনের টার্গেট এর কতটা পাবে বিজেপি? আমরা এই প্রশ্ন করেছিলাম আমাদের দর্শকদের, শুনুন তাঁরা কী বলেছেন।
বিজেপির গোবলয়ে সমর্থন বাড়ছে, বিহার বাদ দিলে সর্বত্র বাড়ছে, বিহারে এখনও বিজেপির ভোট ২০% পার করে নি। বিজেপির সমস্যা হল যে জায়গায় ভোট বাড়ছে সে জায়গায় আরও ভোট বাড়লেও আসন তো বাড়বে না, কারণ সেখানে তো আসন সর্বোচ্চ সংক্যা কে ছুঁয়েছে। অন্যদিকে কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, বিহার, পশ্চিমবঙ্গে তাদের আসন কমবে, এবং সেটা হলে কপালে বিপদ। তাই স্পর্বশক্তি নিয়েই মাঠে নামছে বিজেপি। তাদের নজর বাংলা, বিহার, মহারাষ্ট্র আর কর্ণাটকের দিকে। সেই গ্রান্ড প্ল্যানের অংশ হিসেবেই সংখ্যালঘু ভোট ভাঙানো, সোশ্যাল মিডিয়াতে যথেচ্চ মিথ্যাচার নিয়ে মাঠে নামছে বিজেপি।
দেখুন ভিডিও: