Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeআজকেAajke | ২২ জানুয়ারি এ বাংলায় কারা রাস্তায় থাকলেন?

Aajke | ২২ জানুয়ারি এ বাংলায় কারা রাস্তায় থাকলেন?

Follow Us :

সারা দেশ রাজনৈতিক ভাবে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গেছে, পরিষ্কার সেই ভাগ। মধ্যে কেউ নেই তা বলছি না বা এপার থেকে ওপারে কেউ যাবেন না এমন কথাও হলফ করে বলা যাবে না কিন্তু একটা আড়াআড়ি ভাগ আমরা দেখতে পাচ্ছি। একদিকে হিন্দুত্ববাদী আরএসএস-বিজেপির জোট, তাদের সমর্থকেরা। অন্যদিকে উদার গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক জোটের সমর্থকেরা। একটা এসপার ওসপারের লড়াইয়ের পূর্বমুহূর্ত। আর ঠিক সেই সময়ে হিন্দুত্ববাদীরা তাদের হাতের ট্রাম্প কার্ডটা ফেলেছে, রামমন্দির, দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ, নতুন ভারতের নবনির্মাণ ইত্যাদি। সব্বাই কি রামলালার আহ্বানে অযোধ্যায় চলে গেছেন। না, খোদ অমিত শাহ দিল্লিতে মিছিল সভা করছেন, হিমন্ত বিশ্বশর্মা অসমে রাহুলকে আটকাতে ক্যাডার নামিয়েছেন। রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি নেতামন্ত্রীরা রামমন্দিরের ফায়দা তোলার জন্য রাস্তায়। তামিলনাড়ুতে দায়িত্ব নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই বাংলার দিকে তাকিয়ে দেখুন, সাতসকাল থেকে শুভেন্দু অধিকারী থেকে সুকান্ত মজুমদারেরা রাস্তায়। দিলীপ ঘোষ মধু পাঠিয়েছেন শুনে সুকান্ত চাল পাঠিয়ে দিলেন। কেন? কারণ এটা তো কেবল এক মন্দির উদ্বোধন নয়, এটা রাজনীতি, এটা এক রাজনৈতিক ইস্যু যার নির্মাণ বহু বছর ধরে করা হয়েছে। এ কি কেবল এই মন্দিরেই থেমে যাবে? তাও তো নয়, অযোধ্যা জুড়ে রাস্তায় রাস্তায় স্লোগান শোনা যাচ্ছে, কাশী মথুরা বাকি হ্যায়। কাশী বা মথুরাতেও আজ তারা সেইখানেই জড়ো হয়েছে যেখানে আবার নতুন করে মন্দির মসজিদের জিগির তোলা যাবে, আবার একটা মসজিদ ধ্বংস করে আবার এক মন্দিরের পুনর্নির্মাণ। এটাই তো আরএসএস–বিজেপির রাজনীতি। হিন্দুত্ববাদী জঙ্গি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক জোটের এটাই তো চাহিদা আর সেই চাহিদা অনুযায়ী আজ এক রেড লেটার ডে। আজ তারা মাঝমাঠের দখল নিতে এগোচ্ছে। সেইজন্যই অন্য পক্ষ কে কী করছে সেটাও জানাটা দরকার। রেড লেটার ডে-তে রাস্তায় কারা থাকল? ধৃতরাষ্ট্র তো অন্ধ ছিলেন, জিজ্ঞেস করেছিলেন, ধর্মক্ষেত্র কুরুক্ষেত্রে সবাই জড়ো হয়ে কী করছে? সঞ্জয় আমাকে বলো। আমি আপনি তো দেখতে পাই, তাই দেখে নেওয়া দরকার কারা মাঠে আছে? কে কোন দিকে আছে। আসন্ন যুদ্ধে কে আপনার পক্ষে কে বিপক্ষে? আর সেটাই বিষয় আজকে, ২২ জানুয়ারি এ বাংলায় কারা রাস্তায় থাকলেন?

ফেসবুক খুলুন, সমস্ত ছদ্মবেশ খুলে রেখে যাঁরা পিছন থেকে আড়াল থেকে ইন্ধন জোগাচ্ছিল, তারাও আজ সামনে। রাস্তায় আজ সকাল থেকে তারা নেমেছে, বাংলার প্রত্যেক শহরে কম বা বেশি বিজেপিকে দেখা গেছে। শুভেন্দু মিছিল করেছেন, উত্তরবঙ্গেও মিছিল বেরিয়েছে, হাতে চে গ্যেভারার উল্কি নিয়েই বিজেপির শঙ্কর ঘোষও মিছিলে। কংগ্রেসের সংখ্যায় কম হলেও আজকেই দু’ তিনটে ঘোষিত প্রোগ্রাম আছে, তাঁরাও কেউ কেউ রাস্তায়, দেশ জুড়ে অবশ্যই তাঁরা রাস্তায়, রাহুল গান্ধী তো রাস্তাতেই আছেন।

আরও পড়ুন: আজকে (Aajke) | সেটিং……… সেটিং………

মমতা কালীঘাটে গেছেন পুজো করতে, তারপর মিছিল, সেখান থেকে মসজিদ, গুরুদ্বারা চার্চ হয়ে সমস্ত ধর্মের মানুষজনদের নিয়ে পার্ক সার্কাসে। বললেন সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের কথা, বললেন রাম আমাদেরও কিন্তু আল্লা, গডও আমাদের। আমরা একসঙ্গে থাকব। আজ সকালে গণশক্তিতে অর্ধেন্দু সেন লিখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব ধর্মের মানুষজনদের নিয়ে এই রামমন্দির রাজনীতির বিরুদ্ধে মিছিল করবেন, এটা প্রশংসনীয়। বিরাট মানুষজনকে সঙ্গে নিয়েই মমতা যে কেবল কলকাতাতেই রাস্তায় নামলেন তাও নয়, বাংলা জুড়েই তৃণমূল এই ধরনের মিছিল করেছে। সংহতি মিছিলে শোনা গেল বাংলার মাটি বাংলার জল। বামফ্রন্টের বাইরের বাম, বাম বুদ্ধিজীবীরা, বিভিন্ন সংগঠন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঐক্যের ডাক দিয়ে রাস্তায় নামলেন। দেখার মতো ভিড় ছিল সেখানেও, বিভিন্ন স্তরের মানুষ এসেছেন, রাস্তায় গান হচ্ছে, তাঁরাও হাঁটলেন কলেজ স্কোয়ার থেকে ইন্ডোর স্টেডিয়াম। যাদবপুরের ছাত্ররা আলাদা করে প্রতিবাদ জানালেন তাঁদের মতো করে। কিন্তু অফিসিয়াল বামেরা কই? কোথায় গেলেন তাঁরা? আজই কি ছিল না তাঁদের রাস্তায় নামার দিন? যেখানে যেটুকু সামর্থ্য আছে সবটুকু নিয়ে এই মন্দির রাজনীতির বিরোধিতায় নামার কথা ছিল না বামেদের? কোথায় তাঁরা? একটাও ঘোষিত কর্মসূচি নেই, কোথাও ছাত্র কমরেড, পার্টি নেতৃত্ব, শ্রমিক সংগঠনকে রাস্তায় দেখা গেল না কেন? কোন কারণে তারা আজকের মতো দিনে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখলেন? যেদিন সারা দেশে তাণ্ডব করে বেড়াচ্ছে ভক্তের দল, সেদিন দেশজুড়ে অফিসিয়াল বাম, সিপিএম, সিপিআই-এর হীরণ্ময় নীরবতা কেন? এই বাংলায় তাঁদের এখনও বচাখুচা সমর্থক কর্মীদের কাছে কোন মেসেজ পাঠালেন কমরেড সেলিম। আমরা আমদের দর্শকদের প্রশ্ন করেছিলাম, আজ ২২ জানুয়ারি আরএসএস-বিজেপির কর্মীরা বাংলার বিভিন্ন জেলায়, শহরে রাস্তায় তাঁদের কর্মসূচি পালন করছেন। পাল্টা মিছিলে তৃণমূল। নকশালপন্থী বাম বুদ্ধিজীবীরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মিছিলে সমাবেশে। কিন্তু সিপিএম সিপিআই-এর আজকের দিনে একটাও ঘোষিত কর্মসূচি নেই। তাঁরা রাস্তাতেই নামলেন না। কেন নামলেন না তাঁরা? আপনাদের কী মনে হয়? শুনুন তাঁরা কী বলেছেন।

কিছুদিন আগে যুব সমাবেশে কমরেড মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বললেন, আমরা মাঝমাঠের দখল নেব, শুনে হাততালি বাজিয়েছিল ব্রিগেডে আসা ছাত্রযুবরা। আর আজ যখন রাস্তায় নামার কথা তখন মাঝমাঠ তো ছেড়েই দিন, সাইড লাইনের বাইরে বসে থাকল সিপিএম সিপিআই, এসএফআই, ডিওয়াইএফআই। বিকেলে কমরেড সেলিমের সাংবাদিক সম্মেলন ব্যস, ফুটকি। রাজ্যে বাম মনোভাবাপন্ন মানুষের সংখ্যা কম নয়, এখনও সিপিএম সিপিআই সরকারি বাম দলগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর তত্ত্বে বিশ্বাস করে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। ২২ জানুয়ারি তাঁরা হতাশ হলেন, এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ দিনে তাঁদের হীরণ্ময় নীরবতা সত্যিই হতাশার।

RELATED ARTICLES

Most Popular