কলকাতা:পরিচালক-ফেডারেশন দ্বন্দ্বে সোমবার সকাল থেকে স্তব্ধ টলিপাড়ার সিনেমা থেকে সিরিয়ালের সব শুটিং। পরিচালকরা শনিবারই জানিয়েছিলেন, ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হল। পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়কে বয়কটের সিদ্ধান্ত ফেডারেশন প্রত্যাহার না করলে সোমবার থেকে তাঁরা কাজ করবেন না। সেইমতো এদিন কোনও স্টুডিওতে কাজ হয়নি। এদিকে বিকেলে ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস জানিয়ে দেন, রাহুলকে ক্রিয়েডিভ প্রডিউসার মানতে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু ফেডারশনের (Technitians Meeting) কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত মেনেই তাঁরা পরিচালক রাহুলের সঙ্গে কাজ করতে রাজি নন। তাঁর অভিযোগ, পরিচালকদের একাংশ ষড়যন্ত্র করেছেন। কারও সঙ্গে আলোচনা না করে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত অনভিপ্রেত। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, পরিচালকদের কীসের এত অহঙ্কার। ফলে টলিপাড়ায় জটিলতা অব্যাহত রইল। আবার দুুই পক্ষই আলোচনার কথা বলেছে। দুই পক্ষই চায়, জটিলতা কাটুক। কিন্তু এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত অচলাবস্থা কাটার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। রাতে পরিচালকরা ফের বৈঠকে বসেন।
অচলাবস্থার সমাধান খুঁজতেই সোমবার দুপুরে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Prosenjit Chatterjee) বাড়িতে পরিচালকদের বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ চক্রবর্তী, হরনাথ চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, গৌতম ঘোষ প্রমুখ। তাঁরা সকলেই বলেন, টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে আমাদের কোনও বিরোধ নেই। আমরা চাই, মঙ্গলবার থেকেই কাজ শুরু হোক। সকলে যেন একযোগে কাজে ফেরেন। নাহলে ইন্ডাস্ট্রিরই ক্ষতি। গৌতম ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। প্রসেনজিত বলেন, এটা মানসম্মানের লড়াই। আমরা একটাই পরিবার। মানসম্মান থাকলেও পরিবার ভাঙা কারও কাম্য নয়। কিছু নিয়মের বেড়াজালে সমস্যা হচ্ছে। সেই নিয়মগুলি বদলানো দরকার। ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, এই সামান্য ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া ঠিক নয়। তিনি নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন।
আরও পড়ুন: ‘মানসম্মানের লড়াই চলছে’, পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্তব্য প্রসেনজিতের
এদিন দুঘণ্টার নোটিসে ফেডারশনের সভা বসে। সভাপতি এবং অন্য কর্তারা বলেন, পরিচালকরা কাজ বয়কট করে আমাদের কর্মসমিতিকে অবমাননা করলেন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ‘ইন্ডাস্ট্রি’র অভিভাবক বুম্বাদা এবং প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফের কর্ণধারকে নিয়ে মিটিং করা হয়। ওঁদের অনুরোধেই রাহুল মুখোপাধ্যায়কে ক্রিয়েটিভ প্রডিউসার হিসেবে থাকার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিই। ২৬ জুলাই দেখা যায়, সমস্ত কলশিটে রাহুলের নাম। তারপর শোনা যায়, ডিরেক্টর্স গিল্ড রাহুলের উপর থেকে শাস্তি তুলে নিয়েছে। ফেডারেশনের দাবি, মনোমালিন্য হতেই পারে। কাউকে ছাড়া কারও চলবে না। ‘পরিচালকদের ফিরে আসার’ অনুরোধ জানান কলাকুশলীরা।
অন্য খবর দেখুন