কলকাতা: মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি। তাঁরা ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে আসা হচ্ছে কলকাতায়। কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার জন্য আনা হয়েছে অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স। এই অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে মেদিনীপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে গ্রিন করিডোর করে নিয়ে আসা হবে। আনা হচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালে। রবিবার জানালেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এদিকে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় বাম ও বিজেপি এদিন বিক্ষোভ দেখায় হাসপাতাল চত্বরে। মুখ্যমন্ত্রীর ফ্লেক্স নিয়ে টানাটানি করেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন কাণ্ডে (Medinipur Saline Incident) সবার নজর এখন একমাত্র এই হাসপাতালের দিকে। গত কয়েকদিন ধরে মেদিনীপুরের এই মেডিক্যাল কলেজে দুটি প্রসূতির মৃত্যুর খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে চিকিৎসা মহলে নানা প্রশ্ন উঠছে। কীভাবে স্যালাইন ব্যবহারের কারণে এত বড় বিপদ ঘটল? কেন এমন ঘটনা ঘটল যেখানে দুজন প্রসূতির জীবন ঝুঁকিতে পড়ল? জনস্বাস্থ্য বিষয়ক এই গুরুতর ঘটনার জেরে স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক দল তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত চলছে, তবে কোথায় কী ভুল হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
আরও পড়ুন: শহরে শীতের দাপুটে ব্যটিং! মকরসংক্রান্তিতে কেমন থাকবে শীত?
তবে তদন্তের সূত্রপাতেই জানা গেছে যে, স্যালাইন ব্যবহারের পর প্রসূতিদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে এবং রক্ত কণিকার ভাঙন ঘটেছে। এমন অবস্থায় রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন ব্যবহারের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর। কমিটির সদস্যরা জানান, এই স্যালাইন ব্যবহারের পরই প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাঁদের শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে গিয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
সার্বিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য দফতর আরও গভীর তদন্তে নেমেছে। একদিকে, প্রসূতিদের শরীরের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কারণে তাদের অক্সিজেনের সরবরাহেও সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে, কিডনিতে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় তিনটি প্রসূতির ডায়ালিসিস চলছে। এই পরিস্থিতি যথেষ্ট শঙ্কাজনক। এরপরই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক সামনে এসেছে। হাসপাতালের পুরনো স্যালাইন স্টোরেজের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দীর্ঘদিন স্যালাইনগুলি বাক্সবন্দী অবস্থায় ছিল, এবং সেগুলির রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়েছিল কিনা, তাও পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে।
তদন্তকারীরা একের পর এক নতুন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেছেন। তাদের মধ্যে একটি বড় প্রশ্ন হচ্ছে, প্রসবের পর যে অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল, তা এবং রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনের মধ্যে কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা। প্রশ্ন উঠছে, যদি দুটো একসাথে শরীরে প্রবাহিত হয়, তা হলে তার প্রতিক্রিয়া কি এমন কিছু সৃষ্টি করেছে, যার ফলে এই বিপদ ঘটল?
দেখুন অন্য খবর: