Tuesday, June 24, 2025
HomeCurrent Newsমোদী- মমতা দ্বৈরথে দ্বিধা বিভক্ত গেরুয়া শিবির

মোদী- মমতা দ্বৈরথে দ্বিধা বিভক্ত গেরুয়া শিবির

Follow Us :

নির্বাচন উত্তর মোদী-মমতা দ্বৈরথে দ্বিধা বিভক্ত বাংলার গেরুয়া শিবির। নারদ গ্রেফতার থেকে আলাপন বিতর্ক , রাজ্য বিজেপিকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে। দলের নেতাদের একাংশ ওই দুই বিষয়ে কেন্দ্রের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তবে সেটা তৃণমূলের প্রতি দুর্বলতার কারণে নয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপির ভাবমূর্তি ভোটের ফল প্রকাশের পর যেটুকু অবশিষ্ট ছিল, সেটুকুও হারানোয় শঙ্কিত বিজেপির রাজ্য ওই অংশের নেতারা। ভোটের আগে পর্যন্ত, কেন্দ্ৰীয় সরকারের হাতে থাকা এজেন্সিগুলিকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের মোকাবিলায় মুরলিধর সেন লেনের রাজ্য দফতরের কর্তারা ছিলেন এককাট্টা। তাঁরাই এখন আলাপন বিতর্কে চুপ। একান্তে অবশ্য নেতৃত্বের ওইসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ গোপন করছেন না। দলের একাংশ এখনও কেন্দ্রের পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করে তৃণমূলকে বিঁধে চলেছেন। এক্ষেত্রে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আড়ালে রেখে শুভেন্দু অধিকারীকে এগিয়ে দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যের আলাপন বিতর্কের আবহে দলের দ্বিধান্বিত আচরণ প্রকট হয়ে পড়ছে।
অর্থবলের সঙ্গে কেন্দ্রের প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহারের নজিরবিহীন যুগলবন্দির সাক্ষী ছিল বিগত রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। অন্যভাবে বলা চলে, সংগঠন বা জনসম্পর্ক নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের ভরসায় ভোট বৈতরণী পার করার স্বপ্নে বিভোর ছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু এত কাঠ-খড় পুড়িয়েও রাজ্যে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন অধরা রয়ে গিয়েছে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা,সায়ন্তন বসুদের। জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী রাজ্যের বিজেপি নেতারা ক্ষমতায় বসার পরেই , কী ভাবে বদলা নেবেন,তার ফিরিস্তিও দিয়ে রেখেছিলেন। ভোটে গো হারা হেরে বস্তুত গুটিয়ে গিয়েছেন সেইসব নেতা-নেত্রী। মৌনী বাবার ভূমিকা নিয়েছেন, মোদী-শাহ।কিন্তু তৃণমূলের কাছে ওই অপ্রত্যাশিত হার কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারেননি তাঁরা। রাজ্যের দলের ওপর আর আস্থা নেই। এবার কেন্দ্রের ক্ষমতা ব্যবহার করেই হারের জ্বালা মেটাতে নানা কৌশল নিয়েছেন মোদী-শাহ।
তারই প্রথম পদক্ষেপ ছিল ,রাজ্যে নির্বাচন উত্তর কালে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ। তাতে কেন্দ্রের শাসক দলের হয়ে সঙ্গত করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
তাতে বিশেষ কাজ না হতেই, নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই ছয় বছরের পুরনো নারদ মামলার জেরে ধরপাকড় শুরু করলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সি বি আই)। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ,মদন মিত্র এবং শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেও কাজের কাজ কিছু করতে পারেনি সিবিআই। উল্টে তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করার শত চেষ্টা করেও আদালতে মুখ পুড়িয়েছে অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে থাকা গোয়েন্দা সংস্থা।

সিবিআই নারদ মামলায় ব্যাক ফুটে গেলেও মোদী-শাহ’র আক্রোশ বিন্দুমাত্র কমেনি। তা টের পাওয়া গেলো আলাপন বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অতিসক্রিয়তায়। যশ তান্ডবের ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকা কলাইকুন্ডার বৈঠকে আলাপনের গরহাজিরার জেরে তাঁকে ‘অবসরের’ পরেও বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। ঘটনাচক্রে আলাপনকে এরই মধ্যে রাজ্য সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।

‘রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে নিয়ে যে বিতর্ক তা কি এই মুহূর্তে খুব প্রয়োজন ছিল? ‘ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য বিজেপির এক কার্য্যকর্তার এই প্রশ্নের মধ্যেই রয়েছে তাঁর ক্ষোভ। তিনি বলেন, ভোটের সময় রাজ্যের একটি বুথেও কোনো বেনিয়মের অভিযোগ ছিল না। সেই ভোটে হেরে গিয়েছি। নতুন সরকার শপথ নিয়েছে। হঠাৎ নারদ নিয়ে তৎপর হয়ে উঠলো সরকার। এসব মানুষ মোটেই ভালো চোখে দেখছে না। আদালতে ধাক্কা শুধু সিবিআই নয় রাজ্যের বিজেপিও খেয়েছে বলে মনে করেন ওই নেতা। এভাবে আক্রোশ মেটানোয় দলের ভাবমূর্তি আরও তলানিতে যাচ্ছে বলে দাবি, বিজেপির এক যুব মোর্চার রাজ্য নেতার। যদিও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে এখনও প্রকাশ্যে আলাপন বিতর্কে বিশেষ কিছু বলতে শোনা যায়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে আপাতত মুখে কুলুপ এঁটে রাখতে বলা হয়েছে,এমনই দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এতে রাজ্য নেতাদের বিড়ম্বনা বেড়েছে। কিছুদিন আগেও কেন্দ্রের তো বটেই এমনকি নির্বাচিন কমিশনের হয়েও যেভাবে রাজ্য নেতারা গলা ফাটাতেন, তাঁরা আজ নীরব। অনেকেই আলাপন বিতর্কের প্রতিক্রিয়া চাইলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। বিজেপির এক বর্ষীয়ান নেতার মতে, মমতা তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগে সরব ছিলেন। তার পাল্টা প্রচার তাঁরা করেছেন। ‘তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারে সুর ছড়িয়েছি, কিন্তু ভোটে হারার পরপরই যেভাবে একেরপর এক ঘটনা ঘটছে,তাতে মমতার প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগই স্বীকৃতি পাচ্ছে অন্তত মানুষের কাছে। একদিকে দলের কর্মীরা ভোটের পর সন্ত্রাসে ঘর ছাড়া, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য আন্দোলন গড়ে তোলা যেতো। কিন্তু তা না করে, কেন্দ্রের প্রশাসনিক পদক্ষেপে তৃণমূলকে কতটা বেকায়দায় ফেলা যায়,আমরা সে দিকেই তাকিয়ে আছি। ‘ প্রবীণ ওই নেতার গলায় এমনই হতাশার সুর। তাঁর দাবি, রাজ্য বিজেপির অতিরিক্ত কেন্দ্র নির্ভরতা দলকে জনসাধারণের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | আমি যুদ্ধ থামিয়েছি, Season 2 ট্রাম্পকে শান্তি নোবেলের
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | পাত্তা দিচ্ছে না ইরান-ইজরায়েল, বিশ্বে মেজাজ হারিয়ে অ/শ্লীল ভাষা ট্রাম্পের মুখে
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | হু/ঙ্কার থেকে কাকুতি, ট্রাম্পের এই দৈন্যদশা কে করল? জানুন জয়ন্ত ঘোষালের থেকে
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরানের পাশে রাশিয়া-চিন-উত্তর কোরিয়া, তাই কি ভ/য়ে ট্রাম্পের সুর নরম?
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | যুদ্ধ বিরতি চলছে দয়া করে লঙ্ঘন করবেন না, ঘেমেনেয়ে ল্যাজেগোবরে ট্রাম্প
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | কয়েক মিনিটই কাটল না, যু/দ্ধবিরতি ভেঙে ফের শুরু মি/সা/ইল অ্যা/টাক, কী অবস্থা ইজরায়েলের?
00:00
Video thumbnail
Iran | কীসের যু/দ্ধ বিরতি? আরও মা/রব, জানিয়ে দিলেন খামেনি,কী করবে ইজরাইল?
00:00
Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | আমি যুদ্ধ থামিয়েছি, Season 2 ট্রাম্পকে শান্তি নোবেলের
40:17
Video thumbnail
Iran-Israel | কয়েক মিনিটই কাটল না, যু/দ্ধবিরতি ভেঙে ফের শুরু মি/সা/ইল অ্যা/টাক, কী অবস্থা ইজরায়েলের?
06:03:20
Video thumbnail
Iran | কীসের যু/দ্ধ বিরতি? আরও মা/রব, জানিয়ে দিলেন খামেনি,কী করবে ইজরাইল?
08:02:17