বসিরহাট: সিলিকোসিস আতঙ্কে ভুগছে বসিরহাটের কয়েক হাজার গ্রামবাসী। নিমদাঁড়ি-কোদালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশেই বেসরকারি সংস্থার পাথরের প্ল্যান্ট। সেই কারখানা থেকে সিমেন্টের ধুলো ও পাথরের গুঁড়ো শরীরে ঢুকে সিলিকোসিস হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, কারখানার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেও কোনও লাভ হয়নি। দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনযাপন করছেন বসিরহাটের মধ্যমপুর, গুলাইচণ্ডী, নারায়ণপুর সহ একাধিক গ্রামের বহু বাসিন্দা।
বড় পাথর ভেঙে ছোট স্টোন চিপস তৈরি এবং বিটুমিন পুড়িয়ে পাকা রাস্তার কাঁচামাল তৈরির কাজ হয় ওই কারখানায়। একদিকে পাথর কাটার ধুলো, অন্যদিকে বিটুমিন পোড়া ধোঁয়া। একটানা ধুলো-ধুঁয়োয় গ্রামবাসীদের এলাকায় থাকাই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সমস্যায় পড়েছে গ্রামের শিশুরা। পাথরের ধুলোতে তারা বাইরে বেরোতেই পারছে না। তারই সঙ্গে বিটুমিন পোড়ার দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়ায় ছেয়ে যাচ্ছে গোটা গ্রাম। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে গ্রামের মানুষদের। ইতিমধ্যেই গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে বেশ কয়েকবার ওই প্ল্যান্টের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও নিরাশ হয়ে ফিরেছেন। কর্তৃপক্ষ কোনও মতেই কাজ বন্ধ করতে রাজি নয়।
আরও পড়ুন: Kolkata Weather: ভিজবে কলকাতা, দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস
বাম জমানার শেষ পর্বে ২০০৮-০৯ সালে বসিরহাটের বহু মানুষ আসানসোল, রানিগঞ্জের একাধিক পাথর খাদানে কাজ করতে যেতেন। দীর্ঘদিন ধরে পাথর ভাঙার কাজ করতে করতে পাথরের গুঁড়ো নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাঁদের শরীরের মধ্যে বাসা বাঁধতে শুরু করে। সিলিকোসিসে ভুগে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। আরও অনেকে এই মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে জীবন যুদ্ধে লড়াই করছেন। কর্মক্ষমতাও হারিয়েছেন অনেকেই। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার জন্য নিয়মিত অক্সিজেন মাস্ক ও সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হয় তাঁদের।