রামপুরহাট: রামপুরহাটকাণ্ডে(Rampurhat Violence) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা জুড়ে শনিবার নতুন করে এফআইআর দায়ের করল সিবিআই(Rampurhat Violence CBI Investigation)। ডিআইজি-সিবিআই অখিললেশ সিংয়ের নেতৃত্বে এ দিন সকালেই রামপুরহাট থানায় যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের একটি দল(Rampurhat Clash)। সিটের কাছ থেকে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট নেওয়ার পাশাপাশি ঘটনার কেস ডায়েরি ভালো করে খতিয়ে দেখা হয়। তার ভিত্তিতেই এ দিন নতুন করে এফআইআর রুজু করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের নতুন এফআইআরে মারণ অস্ত্র নিয়ে দাঙ্গা, অগ্নিসংযোগ, খুনের চেষ্টা-সহ সবমিলিয়ে মোট ১০টি ধারা দেওয়া হয়েছে। আইপিসি-র উল্লিখিত ধারাগুলি হল, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৩০২, ৪৩৫, ৪৩৬ ও ৪২৭।
রামপুরহাট থানা হয়ে এ দিন দুপুর ১১টা নাগাদ বগটুই গ্রামে পৌঁছন ডিআইজি-সিবিআই অখিলেশ সিং। তাঁর সঙ্গে তদন্তকারী অফিসারদের একটি দলও আসে। সিবিআইয়ের পৃথক আর একটি দল বগটুই গ্রামে পৌঁছে যায় আরও আগে। বীরভূম পুলিস সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী-সহ জেলা পুলিসের একাধিক কর্তাও সেসময় বগটুই গ্রামে উপস্থিত ছিলেন।
ডিআইজি-সিবিআই অখিলেশ সিংয়ের উপস্থিতিতেই কেন্দ্রীয় তদন্ত আধিকারিকরা সোনা ওরফে সঞ্জু শেখের বাড়িতে ঢোকেন। যে গ্রিল কেটে অপরাধীরা সোনা শেখের বাড়িতে ঢুকেছিল, তার ছবি তোলা যায়। সোনা শেখের পরিবারের সাত সদস্যকে যে ঘরটিতে আগুন জ্বেলে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ, তার ভিডিয়োগ্রাফিও করা হয়। তদন্তেরব সময় থ্রি-ডি স্ক্যানারের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও ব্যবহার করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা অফিসাররা।
আরও পড়ুন: Kaliachak Blast: মালদহের কালিয়াচকে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ, মৃত ১ শিশু
সোনা শেখের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আগুনে পোড়া অন্য ঘরগুলিও তাঁরা পরিদর্শন করেন। সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে দিল্লি থেকে আসা কেন্দ্রীয় ফরেনসিক দলের সদস্যরাও ছিলেন। প্রত্যেকটি জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
তদন্তের প্রথম দিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা বগটুই গ্রামে ছিল সিবিআই। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করা মিহিলাল শেখের সঙ্গে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা কথা বলেন। এই মিহিলাল হলেন সোনা শেখেরই এক আত্মীয়। মিহিলাল ছাড়াও ফটিক শেখ ও নেকা শেখ নামে আরও দু-জনের বাড়িতেও গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রয়োজনীয় তথ্য তাঁরা সংগ্রহ করেন। সিবিআইয়ের একটি সূত্রে খবর, রামপুরহাট কাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শীদের নামের একটি তালিকা ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। সেই তালিকা ধরে একে একে সকলের বয়ান নথিভুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: Rampurhat Violence: রামপুরহাট হিংসার CBI তদন্ত শুরু, বগটুই গ্রামের পোড়া বাড়িঘর থেকে নমুনা সংগ্রহ
রামপুরহাট হিংসায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া ২১ জনের সঙ্গে ঘটনার যোগসূত্র কতটা, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। প্রয়োজনে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারেন।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে শুক্রবারই রামপুরহাট কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। সিটে আস্থা দেখাতে পারেনি হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ পেয়ে ডিআইজি অখিলেশ সিংয়ের নেতৃত্বে ৩০ জনের একটি টিম শুক্রবারই পৌঁছে যায় রামপুরহাটে। এ দিন নমুনা সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তদন্ত প্রক্রিয়া।