বীরভূম: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Rabindra Bharati University) এক আদিবাসী কর্মীকে জাত তুলে গালিগালাজ এবং মারধর করার অভিযোগে তিন কর্মীকে সাসপেন্ড করল কর্মসমিতি। তাঁরা হলেন সুবোধ দত্ত চৌধুরী, রাজকুমার ঝা এবং দেবব্রত ঘোষ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্রনেতা বিশ্বজিৎ দে এবং ওই তিন কর্মীকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে কর্মসমিতি জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, গত ১১ নভেম্বর মানিক হেমব্রম নামে ওই কর্মীকে জাতপাত তুলে গালিগালাজ করা হয়। প্রতিবাদ করলে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয় তাঁকে। মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। অভিযোগ ওই তিন কর্মীর বিরুদ্ধে। তৃণমূল ছাত্রনেতা তাঁদের মদত দেন বলে অভিযোগ। মানিক স্থানীয় হাসপাতালে যান চিকিৎসার জন্য। পরে তিনি থানায় অভিযোগ করেন।
ফেডারেশন অফ আদিবাসী অর্গানাইজেশন এর প্রতিবাদে কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেয় এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানায়। তার ভিত্তিতেই কর্মসমিতি বৃহস্পতিবার ওই সিদ্ধান্ত নেয়। ফেডারেশনের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষক, কর্মী, পড়ুয়া, অফিসারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁরা যাতে সম্মানের সঙ্গে এবং নিরাপদে কাজ করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আদিবাসী শিক্ষককে অপমান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ওই ছাত্রনেতার ক্যাম্পাসে দারুণ দাপট। বয়স হয়ে গেলেও তিনি বছরের পর বছর কী করে তৃণমূলের ছাত্রনেতা থাকছেন, তা নিয়ে দলের অন্দরেও প্রশ্ন আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর একচ্ছত্র রাজত্ব চলে বলে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ। আগেও বহুবার তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে দল কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্য ঘিরে এমনিতেই আদিবাসী সমাজ ক্ষুব্ধ। আর এক আদিবাসী মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা আবার তাঁকে অপমান করেছেন বলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেন ঝাড়গ্রাম থানায়। সব মিলিয়ে আদিবাসী সমাজ উত্তপ্ত। তার মধ্যেই ফের রবীন্দ্রভারতীর বিটি রোড ক্যাম্পাসে আদিবাসী কর্মী নিগ্রহের ঘটনা ঘটল।