বেলুড়: সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে শোকের ছায়া বেলুড় মঠে। শোকস্তব্ধ রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ। হঠাৎ করেই একদিন লতাজির সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর। সেই সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি সুবীরানন্দজি ভাগ করে নিলেন কলকাতা টিভি ডিজিটালের সঙ্গে। শোনালেন, লতাজির বেলুড় মঠ দর্শনের অনাড়ম্বর কাহিনী।
১৯৯০ সালের প্রথম দিক। একদিন ভোরবেলায় বেলুড় মঠে পায়চারি করছিলেন স্বামীজি। হঠাৎই নজর পড়ে, আটপৌরে শাড়ি পরে মূল মন্দিরের সামনে হেঁটেচলে বেড়াচ্ছেন এক বয়স্ক মহিলা। প্রথমে বুঝতে পারেননি, মহিলাটি কে। পরমুহূর্তেই ঘোর কাটল। বেলুড় মঠে হাজির স্বয়ং লতা মঙ্গেশকর। প্রথমে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি তিনি। সম্বিত ফিরতেই অভিনন্দন জানান ওই কিংবদন্তি শিল্পীকে। সেই সময়কার প্রেসিডেন্ট মহারাজ স্বামী ভূতেশানন্দজির সঙ্গে দেখা করতে চান লতাজি।
মহারাজের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় সুর সম্রাজ্ঞীকে। মহারাজ তাঁকে চেয়ারে বসতে বললেও তিনি বেছে নিলেন মহারাজের পদতলের গালিচা। পায়ের কাছে বসে প্রণাম সারলেন লতা। তাঁকে আশীর্বাদ করে দীর্ঘদিন মানুষের সেবায় নিজেকে ব্যাস্ত রাখতে বলেন মহারাজ। প্রেসিডেন্ট মহারাজের মুখে নিজের প্রশংসা শুনে আপ্লুত লতাজি একটি গান শোনাতে চেয়েছিলেন। মৃদু হেসে মহারাজ সেদিন নিরস্ত করেন তাঁকে। বলেছিলেন, অন্য একদিন তাঁর গলায় গান শুনবেন তিনি।
আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar: ছোটবেলার একটা ঢাউস রেডিও আর লতা মঙ্গেশকর
লতাজি তাঁকে প্রণাম করে জানান, পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, মহারাজ গান শুনতে চাইলে সব ফেলে তিনি বেলুড়মঠে চলে আসবেন। মহারাজের ঘর থেকে বেরিয়ে প্রায় আধঘণ্টা মঠে ছিলেন লতা। প্রসাদ খেয়ে মহারাজের সঙ্গে কথা বলে বিদায় নেন সংগীত সম্রাজ্ঞী। তাঁর একেবারেই ব্যক্তিগত, অনাড়ম্বর এই বেলুড় মঠ দর্শন কাকপক্ষীও টের পায়নি সেদিন। লতাজির সঙ্গে সেদিন ছিলেন ছোট বোন ঊষা মঙ্গেশকর এবং আরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।