ব্যারাকপুর: অনেক সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কেউ কেউ তো গত রাত থেকেই। বেলা যত গড়িয়েছে, ভিড় তত বেড়েছে। তার সঙ্গে গরমের দাপট। আসলে গত দুবছর এখানে আসতে পারিনি। প্রতি বছর এক বার করে আসতে চাই। পেরে উঠিনি। পানিহাটির দই-চিঁড়ে মেলার মাঝপথ থেকেই ফিরে এসে এভাবেই নিজের ‘কষ্টের’ কথা বললেন সোমা মজুমদার। পানিহাটির দণ্ড মহোৎসবের বিশৃঙ্খলা কেড়ে নিয়েছে চার প্রাণ। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন আরও অনেকে হাসপাতালের বিছানায়। অসুস্থের তালিকার সংখ্যাটা ৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
বছর পাঁচেক আগে শেষবার এখানে এসেছিলেন সোমা। মধ্য ৫০-এর এই মহিলার ইচ্ছে ছিল আগেই আসার। করোনার কারণে গত দুবছর মেলা বন্ধ। আজ তাই সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎই অনেক চিৎকার শুনতে পান। সোমার কথায়, ‘তখন আমি বেশ কিছুটা দূরে। চূড়ান্ত ঠেলাঠেলি। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে শুরু করে। আসলে এত ভিড় যে সামলানো যাচ্ছিল না। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রোদের তাপ। কী করব বুঝে উঠতে পাচ্ছিলাম না। তখনই চিৎকার কানে এল।
মুহূর্তে শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধাক্কা দিয়ে আমাকে একজন সরিয়ে দিল। প্রায় পড়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে ধাক্কা দিয়ে কিছু মানুষ চলে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। চলেও গেলেন। অ্যাম্বুলেন্সের আওয়াজ পেলাম। আর দাঁড়িয়ে থাকার সাহস পাইনি। কিছু দূরে এসে বসে পড়ি। মাথা ঘুরছিল। তীব্র রোদের তাপ নিতে পারছিলাম না। আমার মত আরও অনেকেরই একই অবস্থা…’এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে চললেন সোমা।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: পানিহাটিতে মেলায় বিশৃঙ্খলা, মৃত্যু ৩ জনের, টুইটে শোকপ্রকাশ মমতার
শুধু সোমা নন। দই-চিঁড়ে মেলার বিশৃঙ্খলায় অসুস্থ হয়েছেন আরও অনেকেই। যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন একটু পূণ্যলাভের আশায় তাঁরা অনেকেই হতাশ। কেউ কেউ বলছে গরমের জন্যই এই অবস্থা। আবার কেউ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকেই দায়ী করছেন।