ব্যারাকপুর: অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও অহংকারই সাগরদিঘিতে হারের কারণ বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। আমডাঙায় এক সভায় অর্জুন প্রশ্ন তোলেন, সাগরদিঘিতে (Saghardighi) কেন ১৭টি বুথে এজেন্ট দেওয়া যায়নি। তিনি বলেন, আমরা জেতার ব্যাপা্রে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। ভেবেছিলাম, আমরা শাসকদল (TMC)। পুলিশ আমাদের কথা মতোই চলবে। এই অহংকার এবং আত্মবিশ্বাসই সাগরদিঘিতে তৃণমুলকে হারিয়ে দিয়েছে। অর্জুন সিং সভায় দলীয় কর্মীদের মনে করিয়ে দেন, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বামেদেরও এমন অহংকার ছিল। তিনি বলেন, এরকমভাবে চললে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে ফল ভুগতে হবে।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরদিঘিতে তৃণমুলের হারের দায় কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপির আঁতাঁতের উপর চাপিয়ে দাবি করেছেন, সেখানে অনৈতিক জোট হয়েছে। বিজেপির প্রার্থীকে কংগ্রেস দাঁড় করিয়েছে, সিপিএম তাঁকে সমর্থন করেছে। নেত্রীর বক্তব্যের সম্পুর্ণ বিপরীতে গিয়ে ব্যারাকপুরের সাংসদ হারের জন্য দলকেই দায়ী করেছেন। তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে দলের অন্দরেই নানা চর্চা শুরু হয়েছে। অর্জুন অবশ্য বরাবরই সোজা-সাপ্টা কথা বলা পছন্দ করেন। অতীতেও তাঁর নানা কথায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে বিজেপি ছেড়ে তৃণমুলে যোগ দেওয়ার পরে ইদানিংকালে অর্জুনকে খুব বেশি প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে শোনা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: Ayan Shil | অয়নের নতুন বান্ধবীর সন্ধান, ইডির আতশকাচে শ্বেতা
ব্যরাকপুরের সাংসদ বলেন, বাবুল সুপ্রিয় বিজেপিতে থাকার সময়ও মন্ত্রী ছিলেন, তৃণমুলে এসেও রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন। বিরোধীরা এ সব নিয়ে প্রচার করছে। ওরা বলছে, সব গটআপ। আমরা তার কোনও জবাব দিতে পারছি না।
ওই কর্মিসভায় দলীয় সংগঠন নিয়েও প্রশন তুলতে ছাড়েননি অর্জুন সিং। এই প্রসঙ্গেই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা তোলেন তিনি। সাংসদ বলেন, বিরোধীরা যখন শাসকদলকে আক্রমণ করতে ব্যস্ত, তখন আমরা নিজের দলের নেতাদের কোণঠাসা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। ব্যারাকপুরের সাংসদ যখন এই সব কথা বলছেন, তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তৃণমূলের পরিষদীয় দলের উপসচিব তাপস রায়।
বিরোধীদের অভিযোগ, সাগরদিঘির হার তৃণমুলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই তিনি কখনও বলছেন, অনৈতিক জোট হয়েছে। আবার কখনও বলছেন, সাগরদিঘিতে টাকার খেলা চলেছে। কিন্তু মানুষ যে তৃণমুলের থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে, এই বাস্তব পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রী কিছুতেই স্বীকার করতে চাইছেন না।