বর্ধমান: দেউচা পাঁচামিতে কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ ও উচ্ছেদ রুখতে রাজভবন অভিযান শুরু করেছে আদিবাসী মানুষজন। কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করেই সোমবার মথুরা পাহাড়ি থেকে এই অভিযান শুরু করেছেন খনি বিরোধীরা। বুধবার বর্ধমান এসে পৌঁছয় সেই অভিযান। সেখানে রাতে কার্জন গেটের সামনে তারা প্রতিবাদ সভা করে। ১৪ এপ্রিল আদিবাসী মহাসভার মিছিলের কলকাতায় পৌঁছনোর কথা। রেড রোডের জমায়েত থেকে আদিবাসীরা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে যাবেন। পরবর্তীকালে আদিবাসী মহাসভার রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করার কথা।
বুধবার রাতে বর্ধমানের সভামঞ্চ থেকে আদিবাসী মহাসভা নেতার বলেন, দেউচা পাঁচামিতে গরিব আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিয়ে খোলা মুখ খনি প্রকল্প করা হচ্ছে। এর ফলের এলাকার বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দূষণ ছড়াবে। গত এক বছর ধরে এই প্রকল্প বন্ধের দাবিতে আন্দোলন চলছে। বহুবার জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার কোনও কথাই শুনছে না। আদিবাসীরা আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমরা জলজঙ্গল জমির অধিকার কিছুতেই ছাড়ব না।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলামুখ কয়লা খনি হতে চলেছে বীরভূমের দেউচা পাঁচামিতে । এই দেউচা পাঁচামি হল বীরভূমের মহম্মদবাজার হরিণ শিঙা কোল ব্লক। ৩৪০০ একর জমিতে ১১৭৮ মিলিয়ন হেক্টর কয়লা ব্লক রয়েছে। এই ৩৪০০ একরের মধ্যে ১ হাজার একর সরকারি খাস জমি। এখানকার প্রকল্পে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার ৷ এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা শুধু পুনর্বাসন প্যাকেজে খরচ করা হবে।
এই খোলা মুখ কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য বহু মানুষকে অন্যত্র সরাতে হবে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই প্রকল্পের ফলে পরিবেশের বিপুল ক্ষতি হবে। বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি, চারণভূমি প্রভৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে ৷ তাই প্রথম থেকেই জমি না দিতে চেয়ে খনি বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেউচা পাঁচামির বাসিন্দারা ৷ তাদের মধ্যে অধিকাংশই আদিবাসী সম্প্রদায়ের।