দাঁতন: আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে চন্দ্রযান ৩। ২৭ আগস্ট পৃথিবীর ঠিক সোজাসুজি আসবে শনি। দেখা যাবে শনির বলয়ও। শনির বলয় থেকে চাঁদের গহ্বর মহাকাশের নানা জাগতিক দৃশ্য দেখা যাবে অগাস্ট মাস জুড়ে। আর তা দেখার জন্য স্বল্প খরচে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নিজের বাড়িতেই চার ধরনের চারটি টেলিস্কোপ (Telescope) বানিয়ে তাক লাগিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের (Paschim Medinipur) দাঁতনের (Dantan) এক যুবক। দাঁতনে নতুন বাজারের বাসিন্দা সন্দীপ সিংহ (Sandip Singh)। স্থানীয় দাঁতন হাইস্কুলে ও জাহালদা হাইস্কুলে আংশিক সময়ের শিক্ষক। কম্পিউটার নিয়ে পড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মডেল বানানোর শখ রয়েছে তাঁর।
গ্যালিলিয়ান, নিউটনিয়ান সহ বেশ কয়েক ধরনের টেলিস্কোপ বানিয়েছেন তিনি। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে স্বল্প খরচে এই টেলিস্কোপগুলি বানিয়ে তাক লাগিয়েছেন এই যুবক। যাতে মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করতে ইচ্ছুক ছেলেমেয়েরা অতি সহজে মহাজাগতিক দৃশ্যগুলি দেখতে পারেন তার জন্য এই উদ্যোগ বলে জানালেন সন্দীপবাবু। তিনি বলেন প্লাস্টিকের পিভিসি পাইপ ও বিভিন্ন জায়গা থেকে লেন্স যোগাড় করে মাত্র প্রায় দশ হাজার টাকায় বানানো গিয়েছে সবথেকে বড় এই টেলিস্কোপটি। যা দিয়ে আমি শনির বলয়, চাঁদের ভিতরে গহ্বর সবই স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি। মেপেছি চাঁদের ব্যাসও।
আরও পড়ুন: ছেলে গ্রেফতার হয়েছে, শোনার পর থেকেই অসুস্থ মা
শুধুমাত্র টেলিস্কোপ বানানো নয় করোনার সময় থেকে নানা ধরনের মডেল বানিয়েছেন তিনি। তাঁর বানানো মডেল টাচ ফ্রি স্যানিটাইজার দাঁতন এর বিভিন্ন অফিসে বসানো হয়েছিল। কিপ্যাড মোবাইলের মাধ্যমে সংকেত পাঠিয়ে রোবোটিক ট্রে তৈরি করেছিলেন সন্দীপবাবু। যা বিভিন্ন হাসপাতালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রোগীদের কাছে ওষুধ পৌঁছে দিতে পারত। এলাকার ছেলেমেয়েদের জন্য একটি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ক্লাব গড়ার ইচ্ছে রয়েছে সন্দীপবাবুর। শুধু তাই নয় বিভিন্ন বিদ্যুতের খুঁটিতে বর্ষার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা রোধ করতে স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম তৈরির কাজ শুরু করেছেন তিনি। সন্দীপবাবু বলেন আগামী দিনে আমার এই মডেলগুলি বৃহত্তর ক্ষেত্রে যদি সরকার ব্যবহার করে তাহলে খুব উপকৃত হই। দাঁতন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সূর্যকান্তি নন্দ বলেন, সন্দীপ বিজ্ঞানের সাধক, শুধুমাত্র আর্থিক সংকটের কারণে নিজের প্রতিভাকে ঠিকভাবে বিকশিত করতে পারছে না। বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী নানা ধরনের বিষয়ে সবসময় এগিয়ে থাকে সে। আর যেভাবে একাধিক টেলিস্কোপ বানিয়ে তাক লাগিয়ে সে তা এক কথায় অনবদ্য।