বাবার সঙ্গে তিলোত্তমা শহরে বহুবার একসঙ্গে হাতে সেতার তুলে নিয়েছেন তিনি। দর্শক-শ্রোতাদের মোহিত করেছে সেই যুগলবন্দী। এমনকি একাও সেতারের তারে ঝংকার তুলে বিভোর করে দিয়েছেন দর্শকদের। তিনি হলেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর কন্যা অনুষ্কা। এই শহরে এসেও তিনি দু-একবার লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে কথা তুলেছিলেন। যে-কোন ইন্ডাস্ট্রির অতিপরিচিত ঘটনা। ইদানিং বিশ্ব সংগীত জগতে লিঙ্গবৈষম্য অত্যন্ত চর্চিত বিষয়। লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে সেলিব্রিটিদের মধ্যে দু’রকমের ধারণা কাজ করে। কেউ কেউ মনে করেন এই বৈষম্য দূর করতে তাদের আরো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। আবার অনেকে মনে করেন আগের তুলনায় পরিস্থিতি অনেকটা ভালো হয়েছে। এবার তা নিয়ে নতুন করে মুখ খুললেন অনুষ্কা শংকর। সংগীতজগতের তিনি অবশ্যই ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয়েছে অনুষ্কার অ্যালবাম ‘লাভ লেটার্স’।অনুষ্কা নিজের উদ্যোগে মহিলা শিল্পী ও টেকনিশিয়ানদের নিয়ে তৈরি করেছেন এই মিউজিক্যাল অ্যালবাম। সদ্য এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন,’লাভ লেটারস’ এর কন্টেন্ট অনুযায়ী সংগীত জগতে আমার মহিলা সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে বেশ আগ্রহ ছিল।
সমস্ত রকম ইমোশনের ক্ষেত্রেই মহিলা শিল্পীদের সঙ্গে নিজেকে বেশি একাত্ম অনুভব করেছি। সত্যি বলতে কি আমি আমার প্লাটফর্মে অনেক বেশি করে মহিলাদের সুযোগ দিতে চেয়েছিলাম। সুযোগ ক্যামেরার সামনে নয় ক্যামেরার পেছনের কাজের জন্য বেশি করে মহিলা শিল্পীদের বাছাই করা হয়েছিল।’এ প্রসঙ্গে অনুষ্কা আরও বলেন যে তার ধারণা লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার অনেক গভীরে। তার কথায়, এই বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন বিশেষ প্রয়োজন। শিক্ষা এবং বদলে দেওয়ার সদিচ্ছা থাকাটাও দরকার। তা না হলে শ্রেণিবৈষম্য লিঙ্গবৈষম্য বর্ণবৈষম্য অথবা এলজিবিটি কিউ নিয়ে আমরা যতই আলোচনা করি না কেন তাতে কোন লাভ হবে না।
প্যানডেমিকে সমগ্র মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি ওপর প্রচন্ড প্রভাব পড়েছে বলে অনুষ্কার ধারণা। তিনি আর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, গতবছর শীতে ভারতে যখন উৎসব অনুষ্ঠান হচ্ছে তখন ইংল্যান্ডে আমরা লকডাউনে বন্দি ছিলাম। এখন এখানে আবার আস্তে আস্তে সবকিছু শুরু হচ্ছে। কিন্তু শিল্পী বা ছোট উদ্যোক্তাদের সাহায্য এবং সমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে। এ প্রসঙ্গে অনুষ্কা আরও বলেন ইংল্যান্ডের শিল্পীদের আলাদা করে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ভারতবর্ষে কিন্তু শিল্পীরা একটা অন্যরকম গুরুত্ব পান। এই মুহূর্তে আমি ভারতে আসতে চাইলেও করোনা পরিস্থিতির জন্য সেটা সম্ভব হচ্ছে না। যখনই সুযোগ পাবো তখনই ভারতবর্ষে আসবো। সঙ্গীত এবং তার দুই পুত্রকে নিয়ে অনুষ্কা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সময় কাটাচ্ছেন। তিনি পুনরায় বলেন, লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিজের মতন করে লড়াই আমি চালিয়ে যাব।