কলকাতা: ৮৪ বছর আগে লেখা প্রফুল্লময়ী দেবীর একটি উপন্যাস ‘চাষা’র প্রথম সংস্করণের পাঠিকা ছিলেন বিগ-বি অমিতাভ বচ্চনের শাশুড়ি ইন্দিরা ভাদুড়ী(Amitabh mother-in-law Indira Bhaduri)। ইন্দিরাদেবী লেখক- সাংবাদিক তরুণ ভাদুড়ীর স্ত্রী অর্থাৎ জয়া ভাদুড়ীর মা। বৈ-চিত্র প্রকাশন থেকে কলকাতা বইমেলার (Kolkata Book Fair) আগে আবার নতুন করে প্রকাশিত হল ‘চাষা’।
প্রকাশকের কথায় প্রফুল্লময়ী দেবী চতুর্থ-পঞ্চম দশকের একজন নিয়মিত বলিষ্ঠ লেখিকা। প্রফুল্লময়ী দেবীর নাতি নাতনিদের থেকে জানা যায় যে এই বিশেষ উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার পত্রের উত্তরে আশীর্বাদি কয়েকটি কথা লিখে ওনাকে পাঠিয়েছিলেন। যা লেখিকার ঘরের দেওয়ালে শোভা পেয়েছিল। অন্যদিকে ভোপাল নিবাসী সমাজ কর্মী শ্রীমতি ইন্দিরা দেবী প্রয়াত সাহিত্যিক তরুণ ভাদুড়ীর সহধর্মিনী ছিলেন এবং জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া বচ্চন ভাদুড়ীর মা। বৈ-চিত্রর পক্ষ নতুন প্রজন্মের লেখিকা চয়নিকা চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে মূল গ্রন্থটির এতটুকু রদবদল করা হয়নি। সমস্ত কিছুই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ইন্দিরা ভাদুড়ীর শাশুড়ি ও ‘চাষা’-র লেখিকা প্রফুল্লময়ীদেবী ছিলেন অন্তরঙ্গ বন্ধু।পারিবারিক বন্ধুত্বও ছিল ওঁদের। সেই সূত্রেই লেখিকার পুত্র শ্যামলেন্দু গোস্বামীর সঙ্গে তরুণ ভাদুরীর বন্ধুত্ব ছিল সেই ছোট্টবেলা থেকেই। এঁরা সব জব্বলপুরের প্রবাসী বাঙালি ছিলেন। তারপর কর্মসূত্রে তরুণ ভাদুড়ী ও ইন্দিরাদেবী ভোপালে চলে আসেন। ইন্দিরা দেবীর স্মৃতিচারণে এসব কথা জানা যায়।
আরও পড়ুন: প্রকাশ পেল ‘বিনোদিনী – একটি নটীর উপাখ্যান’ ছবির ট্রেলার
নতুন এই সংস্করণের জন্য ইন্দিরা ভাদুড়ী স্মৃতিচারণায় লিখেছেন,’আমি ওকে ভালো করে চিনতাম এবং ওকে ভয় পেতাম। মাথায় কাপড় দিয়ে আমাদের বাড়ি আসতেন। ওর এক ছেলে আমার স্বামীর বন্ধু ছিলেন। ওর লেখা বই আমাকে দিয়েছিলেন। আমি পড়েছিলাম। ওর চেহারা এখনো আমার চোখের সামনে ভাসে। এক ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় অমিতাভ শাশুড়ি যখন এই কথাগুলি বলছেন তখন তার বয়স ৯৩ বছর।নাতি অভিষেক বচ্চনের সঙ্গেও দিদা ইন্দিরা দেবীর সম্পর্ক যথেষ্ট স্নেহের।আশা করা যায় খুব শীঘ্রই বচ্চন তারকা পরিবারে পৌঁছে যাবে ‘চাষা’। বর্তমানে ভোপালে বাঙালি সোসাইটির তিনি প্রেসিডেন্ট। তিনি ভোপালে সমস্ত প্রবাসী বাঙালিকে বইটি পড়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।।
প্রসঙ্গত, বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৪০ সালের জন্মাষ্টমী তিথিতে। উপন্যাসের কেন্দ্রে রয়েছে এক ‘চাষা’র চরিত্র। কৃষি নির্ভর ভারতবর্ষে চাষের গুরুত্ব এবং আধুনিকীকরণের দাবি এই উপন্যাসের আধার। চাষের সেই এবড়ো-খেবড়ো জমিতেই রচিত হয়েছে এক প্রেমকাহিনী। এতে দেখা দিয়েছে মগ্নতা, বিরহ, ত্রিকোণ প্রেমের জটিলতা। লেখিকার প্রাপ্তবয়স্ক চিন্তনে সব সামলে প্রতিটি চরিত্র, ঘটনা আপন অস্তিত্বকে টিকিয়ে রেখে চাষের জমি ও ‘চাষা’কে নিয়ে পরিণতির দিকে যাত্রা করে। প্রকাশকের কথায়, ‘চাষা’, বোধকরি এক নবীন লেখকের প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা যেতে পারে।
অন্য খবর দেখুন