খার্তুম: যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান(Sudan)। গুলির শব্দে ঘুম ভাঙছে রাজধানীর মানুষের। দেশের সেনা এবং আধা সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে খার্তুমের (Khartoum) রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রতি মিনিটে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। দেশজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। পানীয় জল (Drinking Water Shortage) ও বিদ্যুতের সংকট (Electricity Shortage) দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই সুদানে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
ধীরে ধীরে সংঘর্ষ গৃহযুদ্ধের আকার নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। দুই বাহিনীর মধ্যে চলতে থাকা এই সংঘর্ষের জেরে দেশে খাদ্য এবং জরুরি প্রয়োজনের জিনিসেরও সংকট শুরু হয়েছে৷ সংঘর্ষে আতঙ্কে দিন কাটছে সুদানের রাজধানী খার্তুমের বাসিন্দাদের। রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ট্যাঙ্ক, বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে এলাকা। বিস্ফোরণের কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। শুধু তাই নয়, আকাশপথেও প্রতিপক্ষ শিবিরে হামলা চালাছে উভয় পক্ষই। চলছে গোলাগুলি। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ একপ্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েকটি দোকান খোলা রয়েছে, প্রয়োজনীয় জিনিস, জ্বালানি এবং পাউরুটির মতো খাবারের জন্য প্রাণ হাতে নিয়ে ভিড় করছেন বাসিন্দারা। পানীয় জল ও বিদ্যুতের সংকটে জেরবার সাধারণ মানুষ। গোলাগুলি এবং আকাশপথে হামলার জেরে সুদানের রাজধানীতে একাধিক হাসপাতালও ক্ষতিগ্রস্ত (Hospital Was Also Damaged) হয়েছে। রাজধানীর বেশ কিছু হাসপাতালে রক্তসংকট (Blood Shortage) দেখা দিয়েছে। আহতদের চিকিৎসাও ঠিক মতো করা সম্ভব হচ্ছে না। দিনে দিনে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
উল্লেখ্য, সুদানে আটকে থাকা ভারতীয়দের শনিবারই জাহাজে করে দেশে ফেরানো হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ১২টি দেশের ৬৬ জন নাগরিক, যার মধ্যে কিছু ভারতীয়ও রয়েছেন, তাঁদের সকলকে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সুদান থেকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সৌদি বিদেশমন্ত্রকের তরফে টুইটে জানানো হয়েছিল, যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে বন্ধু রাষ্ট্রের নাগরিক ও আন্তর্জাতিক কর্মকর্তাদের নিরাপদে সরানোর ঘোষণা করতে পেরে আমরা খুশি।
সুদানের সামরিক বাহিনীর প্রধান আবদেল ফতাহ অল-বুরহান (Military Head Abdel Fattah al-Burhan) এবং প্যারামিলিটারি কমান্ডার মহম্মদ হামদান দাগলো (Paramilitary Commander Mohamed Hamdan Daglo)-র মধ্যে বিরোধ চমর পর্যায়ে পৌঁছেছে। নিজেদের হাতে রাশ ধরে রাখতে সামরিক বাহিনী (Military) ও আধাসামরিক বাহিনী (Paramilitary Force) একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছ। গত শনিবার থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত ৩০০ জনের বেশি মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে বহু। সেনাবাহিনী জনবহুল এলাকায় বিমানহানা চালিয়ে যাচ্ছে। তীব্র গরমে বিদ্যুৎহীন, জলহীন, খাদ্যহীন, নিরাশ্রয় হয়ে দিন কাটাচ্ছেন কয়েক লক্ষ মানুষ।