কাবুল: ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মহিলাদের (Women) বিষয়ে একের পর এক ফরমান জারি করে চলেছে তালিবান প্রশাসন (Taliban Administration)। কখনও মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করা, আবার কখনও কর্মক্ষেত্র থেকে মহিলাদের দূরে রাখা, বা রাস্তায় বের হতে গেলে মহিলাদের সঙ্গে পুরুষ নিয়ে বের হওয়ার নির্দেশ। এবার মহিলাদের উপর নয়া ফতোয়া জারি করল তালিবান। হিজাব না পরায় মহিলাদের রেস্তরাঁয় প্রবেশ নিষিদ্ধ (Bans Women Restaurant Entry)করা হয়েছে। মহিলাদের মধ্যে হিজাব না পরে রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে। যা ইসলামের পরিপন্থী। এই অজুহাত খাড়া করে কড়া সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করল তালিবান সরকার।
সম্প্রতি ধর্ম প্রচারকরা বাগানের মতো সবুজ খোলামেলা জায়গায় নারী-পুরুষের মেলমেশার অভিযোগ তুলেছিলেন। এরপরই এসব জায়গায় মহিলা ও কোনও পরিবারের আগমন নিষিদ্ধ করল তালিব প্রশাসন। মহিলাদের রেস্তরাঁয় প্রবেশে তালিবানের এই ফতোয়া আপাতত আফগানিস্তানের হেরাত শহরের কিছু হোটেলে প্রযোজ্য হয়েছে। আগামীদিনে গোটা আফগানিস্তান জুড়েই এই ফতোয়া চালু হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। যে সমস্ত রেস্তরাঁয় অনেকটা খোলামেলা পরিবেশ রয়েছে, গাছগাছালি এবং প্রশস্ত বাগান রয়েছে, সেখানেই মহিলাদের ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। এই রেস্তরাঁয় কেবল পুরুষরাই যেতে পারবেন। তবে তাঁরা পরিবার বা কোনও মহিলাকে সেখানে নিয়ে যেতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:Weather Update | আরও বাড়বে গরম, জানুন স্বস্তির বৃষ্টি কবে?
তালিবানের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা কেবলমাত্র পার্ক-যুক্ত খোলামেলা রেস্তরাঁগুলির জন্য প্রযোজ্য। পুরুষ এবং নারী একে অপরের সঙ্গে দেখা করতে রেস্তরাঁয় যেতে পারবেন না। সাধারণ মানুষ এবং দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে বারবার অভিযোগ পেয়েই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। হেরাতের ভাইস অ্যান্ড ভার্চু ডিরেক্টরেটের প্রধান আজিজুর রহমান আল মুহাজির বলেন, এটি আসলে একটি পার্কের মতো। তবে এর নাম দেওয়া হয়েছে রেস্তোঁরা। এখানে পুরুষ ও মহিলারা একসঙ্গে মেলামেশা করতে পারেন। ঈশ্বরকে অনেক ধন্যবাদ যে এই বিষয়টি এখন সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়াও, আমাদের অডিটররা সমস্ত পার্ক পর্যবেক্ষণ করছেন যেখানে পুরুষ এবং মহিলারা যান।
উল্লেখ্য, মাত্র কয়েকদিন আগেই পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশ সরকার রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলিতে কর্মরত আফগান নারীদের কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আফগান নারীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। বর্তমানে আফগানিস্তানে রাষ্ট্রসংঘ পরিচালিত একাধিক মানবাধিকার সংস্থা রয়েছে। সংস্থাগুলিতে প্রায় ৩ হাজারের বেশি আফগান মহিলা কর্মরত। এর মধ্যে নানগারহার প্রদেশে কর্মরত মহিলার সংখ্যা প্রায় ৪০০। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার চাকরির ক্ষেত্রেও তালিব সরকার মহিলাদের অধিকারে রাশ টানতে চাইছে। পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতারেস। নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহার করার জন্য তালিব প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।