ব্রাসিলিয়া: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (President Election of Brazil)) জেয়ার বলসোনারো (Jair Bolsonaro) গত অক্টোবরে তাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা (Luiz Inacio Lula da Silva)-র কাছে দুই রাউন্ডের ভোটে হেরেছেন। তবে তিনি হার স্বীকার করতে রাজি নন। বলসোনারোর অভিযোগ, নির্বাচনে ব্যবহৃত কিছু মেশিন “অবৈধ (Invalidated)” হিসেবে ঘোষণা হওয়া উচিত, কারণ নির্বাচন কর্তৃপক্ষ নিজেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে ওই মেশিনের ভোটদান নিয়ে। তবে বলসোনারো যে দাবি করছেন, তা নিয়ে জল্পনা বেশি দূর নাও গড়াতে পারে। সে দেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুলার জয়কে সুপিরিয়র ইলেক্টরাল কোর্ট (ব্রাজিলের পর্তুগীজ ভাষায়: Tribunal Superior Eleitoral – TSE) মান্যতা দিয়েছে। ব্রাজিলের শীর্ষসারির রাজনীতিবিদ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীরাও স্বীকৃতি দিয়েছে এই নির্বাচনকে। বলসোনারোর এই অভিযোগের জেরে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখান করার জন্য আন্দোলন হতে পারে বলে সম্ভাবনা থাকলেও, তবে তা বড়ো আকার নিতে পারে এমন কোনও আশঙ্কা নেই।
ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এবং টিএসই প্রধান আলেকজান্দ্রে ডি মোরাইস (Alexandre de Moraes) তাঁর রায়ে বলেছেন, বলসোনারোর দক্ষিণপন্থী নির্বাচনী জোট এই অভিযোগ দায়ের করেছে, তাদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গত মাসে হওয়া নির্বাচনে দুই দফার ভোটের সম্পূর্ণ অডিট পেশ করতে হবে, অন্যথায় তিনি এই অভিযোগের আবেদন খারিজ করে দেবেন।
আরও পড়ুন: Vediya Varun Prasenjit: ডেভিডের ‘আঁধিয়া’তে কাজ করার পর বরুণদের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসেনজিতের
এদিকে, বলসোনারো নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পর ব্রাজিলের অর্থনীতি ১.৩ শতাংশ দুর্বল হয়েছে পড়েছে মার্কিন ডলারের তুলনায়। লুলার ব্যয় পরিকল্পনা এবং অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের নিয়ে বিনিয়োগকারীরা ধন্দে ভুগছেন, যার জেরে ব্রাজিলের মুদ্রা রিয়েল (Brazilian Currency Real) ইতিমধ্যেই ধুঁকছে।
উল্লেখ্য, ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের প্রথম রবিবার (এক্ষেত্রে ২ অক্টোবর) এবং শেষ রবিবার (৩০ অক্টোবর) দুই রাউন্ডে ভোট নেওয়া হয়। প্রথম রাউন্ডের ভোটে লুলা জিতলেও ৫০ শতাংশ ভোট পাননি, তার সঙ্গে স্বল্প ব্যবধানেই পিছিয়ে ছিলেন বলসোনারো। দ্বিতীয় রাউন্ডে তিনি জিতবেন আশা করেছিলেন। কিন্তু হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে লুলা আবার বাজিমাৎ করেন। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটগ্রহণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বলসোনারো জোট। তাদের অভিযোগ, ৩০ তারিখে ভোটিংয়ে ব্যবহৃত কিছু মেশিনের অডিটে অপূরণীয়… ত্রুটির লক্ষণ পেয়েছে। তাই ওই মেশিনের ভোটিংকে অবৈধ ঘোষণা করা হোক।
আশ্চর্যের বিষয় হল, ৩০ অক্টোবর নির্বাচন শেষ হয়েছে। তারপর ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল বেরনোর পর তিনি ৪৮ ঘণ্টা নিশ্চুপ ছিলেন এবং তবে তিনি এখনও হার মেনে নেননি। যদিও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট তাঁর সরকারকে রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের (Presidential Transition) প্রস্তুতি শুরু করতে নির্দেশও দিয়ে রেখেছেন।