লস অ্যাঞ্জেলেস: উত্তর আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে (Pacific Coast of North America) গ্রে হোয়েল (Grey Whale) অর্থাৎ ধূসর তিমির সংখ্যা ক্রমাগত কমছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালের তুলনায় এক ধাক্কায় প্রায় ৪০ শতাংশ নেমে এসেছে এই সংখ্যা। এবছর যে পরিমাণ বাচ্চা তিমি জন্মেছে (New Born Grey Whales), তা রের্কড পরিমাণ কম। গত শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) এই নিয়ে মার্কিন গবেষণার (U.S. Research) রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক রিসার্চ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (National Oceanic and Atmospheric Research Administration – NOAA) তাদের রিপোর্টে বলছে, ২০১৬ সালের ধূসর তিমির সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছিল, এই সংখ্যা ছিল ২৭,০০০। চলতি বছরের পরিসংখ্যান বলছে এই সংখ্যা ১৬,৬৫০-এ নেমে এসেছে। অর্থাৎ গত ছয় বছরে ৩৮ শতাংশ কমেছে ধূসর তিমির সংখ্যা।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2022: শাকিরার টুইট, নস্ট্যালজিয়ায় ভাসল ফুটবল বিশ্ব!
হঠাৎ কী এমন হল? কেন কমে গেল ধূসর তিমির সংখ্যা? সান দিয়োগো (San Diego)-তে NOAA –এর সাউথওয়েস্ট ফিশারিস সায়েন্স সেন্টার (Southwest Fisheries Science Center)-এর গবেষকদের বক্তব্য, এর পিছনে অনেক কিছু কারণ থাকতে পারে। তবে মূলত জলবায়ু পরিবর্তনকেই (Climate Change) দায়ী করা হচ্ছে এজন্য। তাঁরা বলছেন, ধূসর তিমিরা চিংড়ির মতো ক্ষুদ্র খোলা জাতীয় সামুদ্রিক জীব (Tiny Crustaceans) এবং অমেরুদণ্ডী প্রাণী (Invertebrates) খেয়ে থাকে, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্যের সেই সংস্থান (Food Sources) জলবায়ু পরিবর্তনগত কারণে বদলাচ্ছে। তবে ২০১৬ সালের তুলনায় সংখ্যা কেন কমল, তার সঠিক কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন গবেষকরা।
আশ্চর্যের বিষয় হল দু’বছর আগে ২০১৯ সালে উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে ধূসর তিমির সংখ্যার বাড়তে দেখা গিয়েছিল। তাই হঠাৎ ধূসর তিমির সংখ্যা কমায় গবেষকরা স্বভাবতই চিন্তিত। NOAA বলছে, ২০১৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতে ৬০০টি মরা তিমি ভেসে এসেছে। দেখে মনে হয়েছে অপুষ্টিতে ভুগছিল তিমিগুলি। বোটের ধাক্কা কিংবা কোনও হামলার ঘটনার মতো অন্যান্য কারণও রয়েছে তিমিগুলি মারা যাওয়ার পিছনে।
বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, পশ্চিম উপকূলের ধূসর তিমিদের মধ্যে প্রজননের (Reproduction) ঘাটতি দেখা গিয়েছে। সেটাও একটা কারণ ধূসর তিমিদের সংখ্যা কমার পিছনে। মে মাসে শেষ হওয়া সর্বশেষ সমীক্ষার পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরে ২১৭টি তিমির বাচ্চা জন্মেছে, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৮৩টি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ১৯৯৪ সাল থেকে ধূসর তিমি গণনা শুরু হয়েছে। এবারই সবচেয়ে কম সংখ্যক ধূসর তিমির বাচ্চা জন্মেছে।