কলকাতা: ফের জ্বর শ্বাসকষ্টের উপসর্গে কলকাতার (Kolkata) সরকারি হাসপাতালে তিনটি শিশুর (Child) মৃত্যু হল। বঁনগার (Bangaon) ১০ মাস বয়সি এক শিশু মঙ্গলবার মারা যায় বি সি রায় শিশু হাসপাতালে। তার ডেথ সার্টিফিকেটে অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিসের উল্লেখ রয়েছে। ৬ মার্চ থেকে শিশুটি জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি ছিল। ওই রাতেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আরও দুই শিশুর।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি উলুবেড়িয়ার এক শিশুকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার গভীর রাতে শিশুটির মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হুগলির মগরার বাসিন্দা ছ’মাস বয়সের আরএক শিশু জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল। মঙ্গলবার বেশি রাতে সে মারা যায়। শুরুতে শিশুটিকে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Haridevpur Incident: হরিদেবপুরে মহিলা খুনে গ্রেফতার ২
এর আগেও বনগাঁর এই শিশুটি ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে বি সি রায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। পরে তাকে ছুটি দেওয়া হয়। এরপরে আবারও সংক্রমণের সমস্যা হলে প্রাথমিকভাবে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। পরে শিশুটিকে বি সি রায় হাসপাতালে নিয়ে আশা হয়। হাসপাতালের একটি সূত্রের খবর, অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণেই মৃত্যু হয়েছে তার।
এদিকে বুধবার সকালে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে যান শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা হাসপাতালের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক এবং নার্স রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
কমিশনের সদস্যদের দাবি, শুধু অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণেই নয়, কো-মর্বিডিটির কারণেও অনেক শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কয়েক দিন আগে দাবি করেছিলেন, জ্বর, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ছয়টি শিশু মারা গিয়েছে অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণে। বাকি ১৩টি শিশুর কো-মর্বিডিটি ছিল। তাঁর আরও অভিযোগ, এক শ্রেণির মিডিয়া অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কেউ কেউ কাগজের প্রথম পাতায় বা চ্যানেলে মৃত শিশুর ছবি দিয়ে খবর করছে। এটা ঠিক নয়।
বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো বলতে কিছুই নেই। শুধু হাসপাতালে নীল-সাদা রংয়ের প্রলেপ ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয়নি। সরকার বিরোধী বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনেরও একই অভিযোগ। তারা বলছে, করোনার সময়ও সরকার তথ্য গোপন করেছিল। এবার অ্যাডিনোর ক্ষেত্রেও সেই একই পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। এই সব অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ স্বাস্থ্য ভবন।